ঢাকা    বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
ঢাকা    বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫
কওমী টাইমস

পাকিস্তান-আফগানিস্তান বাণিজ্য রুট এক মাস ধরে বন্ধ; পচে যাচ্ছে ফলমূল ও শাকসবজি, হতাশ ব্যবসায়ীরা

তোরখাম সীমান্ত বন্ধে আফগান বাণিজ্যে বিপর্যয়, প্রতিদিন লাখো ডলারের ক্ষতি


কওমী টাইমস ডেস্ক
কওমী টাইমস ডেস্ক
প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২৫ | প্রিন্ট সংস্করণ

তোরখাম সীমান্ত বন্ধে আফগান বাণিজ্যে বিপর্যয়, প্রতিদিন লাখো ডলারের ক্ষতি

তোরখাম সীমান্ত দীর্ঘ এক মাস ধরে বন্ধ থাকায় আফগানিস্তানের শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক পাকিস্তান সীমান্তে আটকে আছে। ফলে তাজা ফল ও শাকসবজি পচে নষ্ট হচ্ছে, প্রতিদিনই ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পরিমাণ লাখ লাখ ডলারে পৌঁছেছে। এ ঘটনায় দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও সংকটে পড়েছে।

আফগানিস্তানের কৃষি ও প্রাণিসম্পদ চেম্বারের উপপ্রধান মিরওয়াইস হাজিজাদা জানান, “তোরখাম রুট বন্ধ থাকায় আফগান ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ লাখ ডলার পর্যন্ত ক্ষতির মুখে পড়ছেন। অন্যদিকে পাকিস্তানও প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ লাখ ডলারের ক্ষতি গুনছে।” তিনি আরও বলেন, “আফগানিস্তানের ফলের মৌসুম শেষ হয়ে গেছে এবং ফল নষ্ট হয়ে গেছে। অল্প কিছুদিন পর পাকিস্তানের কমলা ও কিন্নুর মৌসুম আসবে, তখন তাদেরও একই পরিণতি ভোগ করতে হবে।”

নঙ্গরহারের ব্যবসায়ী সিদাকাত তোফান বলেন, “ট্রাকে থাকা পণ্য পচে গন্ধ ছড়াচ্ছে। যেগুলো কিছুটা ভালো ছিল, তা স্থানীয় বাজারে নিলামে বিক্রি করতে হয়েছে—সবই ক্ষতি।” অপর এক ব্যবসায়ী আয়াজুল্লাহ জানান, “মাজারে সাত কেজি পেঁয়াজ কিনেছিলাম ৫৫ থেকে ৬০ আফগানি দরে, এখন জালালাবাদে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২০ আফগানিতে। প্রত্যেকে লাখ লাখ আফগানি হারিয়েছি।”

ট্রাকচালকরাও একই অভিযোগ তুলে বলেন, পাকিস্তান ইচ্ছাকৃতভাবে প্রতি বছর আফগানিস্তানের ফসল মৌসুমে তোরখাম পথ বন্ধ করে দেয়। চালক এনজার গুল বলেন, “প্রতি বছর সবজির মৌসুমে পাকিস্তান এই পথ বন্ধ করে দেয়। আগের মৌসুমেও দুই মাস বন্ধ ছিল, পণ্য পচে গেলে আবার খুলে দেয়।” আরেক চালক হাজি মোহাম্মদ জানান, “টমেটো সব পচে গেছে, পেঁয়াজে পানি ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। এক মাস ধরে রাস্তায় আটকে আছি, খাবার কেনারও টাকা নেই, ট্রাকের ব্যাটারি মরে গেছে।”

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ইসলামিক আমিরাত ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে পাকিস্তান আফগান বাজারে তাদের রপ্তানি বাজারের ৬৫ শতাংশ হারিয়েছে। কেবল গত এক মাসের তোরখাম বন্ধের কারণে দুই দেশের সম্মিলিত অর্থনৈতিক ক্ষতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৫ মিলিয়ন ডলার।

বিষয় : আফগানিস্তান

আপনার মতামত লিখুন

কওমী টাইমস

বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫


তোরখাম সীমান্ত বন্ধে আফগান বাণিজ্যে বিপর্যয়, প্রতিদিন লাখো ডলারের ক্ষতি

প্রকাশের তারিখ : ১১ নভেম্বর ২০২৫

featured Image

তোরখাম সীমান্ত দীর্ঘ এক মাস ধরে বন্ধ থাকায় আফগানিস্তানের শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক পাকিস্তান সীমান্তে আটকে আছে। ফলে তাজা ফল ও শাকসবজি পচে নষ্ট হচ্ছে, প্রতিদিনই ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পরিমাণ লাখ লাখ ডলারে পৌঁছেছে। এ ঘটনায় দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও সংকটে পড়েছে।

আফগানিস্তানের কৃষি ও প্রাণিসম্পদ চেম্বারের উপপ্রধান মিরওয়াইস হাজিজাদা জানান, “তোরখাম রুট বন্ধ থাকায় আফগান ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ লাখ ডলার পর্যন্ত ক্ষতির মুখে পড়ছেন। অন্যদিকে পাকিস্তানও প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ লাখ ডলারের ক্ষতি গুনছে।” তিনি আরও বলেন, “আফগানিস্তানের ফলের মৌসুম শেষ হয়ে গেছে এবং ফল নষ্ট হয়ে গেছে। অল্প কিছুদিন পর পাকিস্তানের কমলা ও কিন্নুর মৌসুম আসবে, তখন তাদেরও একই পরিণতি ভোগ করতে হবে।”

নঙ্গরহারের ব্যবসায়ী সিদাকাত তোফান বলেন, “ট্রাকে থাকা পণ্য পচে গন্ধ ছড়াচ্ছে। যেগুলো কিছুটা ভালো ছিল, তা স্থানীয় বাজারে নিলামে বিক্রি করতে হয়েছে—সবই ক্ষতি।” অপর এক ব্যবসায়ী আয়াজুল্লাহ জানান, “মাজারে সাত কেজি পেঁয়াজ কিনেছিলাম ৫৫ থেকে ৬০ আফগানি দরে, এখন জালালাবাদে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২০ আফগানিতে। প্রত্যেকে লাখ লাখ আফগানি হারিয়েছি।”

ট্রাকচালকরাও একই অভিযোগ তুলে বলেন, পাকিস্তান ইচ্ছাকৃতভাবে প্রতি বছর আফগানিস্তানের ফসল মৌসুমে তোরখাম পথ বন্ধ করে দেয়। চালক এনজার গুল বলেন, “প্রতি বছর সবজির মৌসুমে পাকিস্তান এই পথ বন্ধ করে দেয়। আগের মৌসুমেও দুই মাস বন্ধ ছিল, পণ্য পচে গেলে আবার খুলে দেয়।” আরেক চালক হাজি মোহাম্মদ জানান, “টমেটো সব পচে গেছে, পেঁয়াজে পানি ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। এক মাস ধরে রাস্তায় আটকে আছি, খাবার কেনারও টাকা নেই, ট্রাকের ব্যাটারি মরে গেছে।”

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ইসলামিক আমিরাত ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে পাকিস্তান আফগান বাজারে তাদের রপ্তানি বাজারের ৬৫ শতাংশ হারিয়েছে। কেবল গত এক মাসের তোরখাম বন্ধের কারণে দুই দেশের সম্মিলিত অর্থনৈতিক ক্ষতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৫ মিলিয়ন ডলার।


কওমী টাইমস

সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ মুস্তাইন বিল্লাহ
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত