ঢাকা    শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
ঢাকা    শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
কওমী টাইমস

হাইকোর্টের সামনে ড্রামে ২৬ খণ্ড লাশ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য, গ্রেপ্তার বন্ধু ও প্রেমিকা

পরকীয়ার চরম পরিণতি: বন্ধুর হাতে নৃশংসভাবে খুন ব্যবসায়ী আশরাফুল, ২৪ ঘণ্টা ধরে লাশের সঙ্গে পরিকল্পনা!


কওমী টাইমস ডেস্ক
কওমী টাইমস ডেস্ক
প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২৫ | প্রিন্ট সংস্করণ

পরকীয়ার চরম পরিণতি: বন্ধুর হাতে নৃশংসভাবে খুন ব্যবসায়ী আশরাফুল, ২৪ ঘণ্টা ধরে লাশের সঙ্গে পরিকল্পনা!

রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের কাছে ড্রাম থেকে ব্যবসায়ী আশরাফুল হকের ২৬ টুকরো খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উদঘাটন করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবি সূত্র জানিয়েছে, পরকীয়া সম্পর্কের জেরেই আশরাফুলকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন তারই বাল্যবন্ধু জারেজুল ইসলাম ও তার প্রেমিকা শামীমা। হত্যার পর ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে একই বাসায় লাশের সঙ্গেই ছিলেন তারা, আর সে সময়ই পরিকল্পনা করেন কীভাবে লাশ গুম করা হবে।

ডিবি সূত্র অনুযায়ী, নিহত আশরাফুল হক এবং মালয়েশিয়া প্রবাসী জারেজুল ইসলাম ছিলেন বাল্যবন্ধু, তাদের বাড়ি রংপুরে। প্রায় তিন বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুমিল্লার এক প্রবাসীর স্ত্রী শামীমার সঙ্গে জারেজুলের পরিচয় হয় এবং তাদের মধ্যে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জারেজুল এই সম্পর্কের কথা বন্ধু আশরাফুলকে জানালে, আশরাফুলও শামীমার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন এবং একপর্যায়ে শামীমার সঙ্গে আশরাফুলেরও সম্পর্ক তৈরি হয়।

গত ২৩ অক্টোবর জারেজুল মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে রাজধানীর দক্ষিণ দনিয়ায় একটি বাসা ভাড়া নেন এবং সেখানে শামীমাকে নিয়ে ওঠেন। একই সময়ে আশরাফুলও তাদের সঙ্গে সেই বাসায় আসেন। সেখানেই জারেজুল জানতে পারেন যে শামীমার সঙ্গে তার বন্ধু আশরাফুলেরও সম্পর্ক হয়েছে। এই নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে তীব্র দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এই দ্বন্দ্বের জেরেই মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকালের মধ্যে কোনো এক সময় আশরাফুলকে হত্যা করা হয়।

হত্যার পর জারেজুল এবং শামীমা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তারা বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত প্রায় ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় লাশের সঙ্গে একই বাসায় ছিলেন। এই সময়ে বাইরে থেকে জারেজুল খাবার কিনে আনতেন এবং দুজনে খেতেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জারেজুল জানিয়েছেন, তারা এই দীর্ঘ সময়ে লাশ কী করবেন, তা নিয়ে পরিকল্পনা করেছেন। একপর্যায়ে তারা সিদ্ধান্ত নেন, লাশ টুকরো করে ড্রামে ভরে কোথাও ফেলে দিয়ে আসবেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকালে তারা বাথরুমের মধ্যে দা দিয়ে আশরাফুলের লাশ ২৬টি ছোট টুকরোতে বিভক্ত করেন। এরপর লাশের টুকরোগুলো দুটি ড্রামের ভেতর ভরে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে নিয়ে রাজধানীতে ঘুরতে থাকেন। সুযোগ বুঝে তারা হাইকোর্টের সামনে জাতীয় ঈদগাহ মাঠের কাছে ড্রাম দুটি ফেলে পালিয়ে যান।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) হাইকোর্টের সামনে থেকে আশরাফুলের খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ব্যবসায়ীর পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) নিহতের ছোট বোন শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ও র‍্যাবের তৎপরতায় ঘটনার মূল হোতা জারেজুল ইসলামকে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে এবং তার প্রেমিকা শামীমাকে বিভিন্ন আলামতসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডিবির যুগ্ম কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন যে পরকীয়ার জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

বিষয় : অপরাধ পরকীয়া

আপনার মতামত লিখুন

কওমী টাইমস

শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫


পরকীয়ার চরম পরিণতি: বন্ধুর হাতে নৃশংসভাবে খুন ব্যবসায়ী আশরাফুল, ২৪ ঘণ্টা ধরে লাশের সঙ্গে পরিকল্পনা!

প্রকাশের তারিখ : ১৪ নভেম্বর ২০২৫

featured Image

রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের কাছে ড্রাম থেকে ব্যবসায়ী আশরাফুল হকের ২৬ টুকরো খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উদঘাটন করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ডিবি সূত্র জানিয়েছে, পরকীয়া সম্পর্কের জেরেই আশরাফুলকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন তারই বাল্যবন্ধু জারেজুল ইসলাম ও তার প্রেমিকা শামীমা। হত্যার পর ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে একই বাসায় লাশের সঙ্গেই ছিলেন তারা, আর সে সময়ই পরিকল্পনা করেন কীভাবে লাশ গুম করা হবে।

ডিবি সূত্র অনুযায়ী, নিহত আশরাফুল হক এবং মালয়েশিয়া প্রবাসী জারেজুল ইসলাম ছিলেন বাল্যবন্ধু, তাদের বাড়ি রংপুরে। প্রায় তিন বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুমিল্লার এক প্রবাসীর স্ত্রী শামীমার সঙ্গে জারেজুলের পরিচয় হয় এবং তাদের মধ্যে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জারেজুল এই সম্পর্কের কথা বন্ধু আশরাফুলকে জানালে, আশরাফুলও শামীমার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন এবং একপর্যায়ে শামীমার সঙ্গে আশরাফুলেরও সম্পর্ক তৈরি হয়।

গত ২৩ অক্টোবর জারেজুল মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে রাজধানীর দক্ষিণ দনিয়ায় একটি বাসা ভাড়া নেন এবং সেখানে শামীমাকে নিয়ে ওঠেন। একই সময়ে আশরাফুলও তাদের সঙ্গে সেই বাসায় আসেন। সেখানেই জারেজুল জানতে পারেন যে শামীমার সঙ্গে তার বন্ধু আশরাফুলেরও সম্পর্ক হয়েছে। এই নিয়ে দুই বন্ধুর মধ্যে তীব্র দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এই দ্বন্দ্বের জেরেই মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকালের মধ্যে কোনো এক সময় আশরাফুলকে হত্যা করা হয়।

হত্যার পর জারেজুল এবং শামীমা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তারা বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত প্রায় ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় লাশের সঙ্গে একই বাসায় ছিলেন। এই সময়ে বাইরে থেকে জারেজুল খাবার কিনে আনতেন এবং দুজনে খেতেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জারেজুল জানিয়েছেন, তারা এই দীর্ঘ সময়ে লাশ কী করবেন, তা নিয়ে পরিকল্পনা করেছেন। একপর্যায়ে তারা সিদ্ধান্ত নেন, লাশ টুকরো করে ড্রামে ভরে কোথাও ফেলে দিয়ে আসবেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকালে তারা বাথরুমের মধ্যে দা দিয়ে আশরাফুলের লাশ ২৬টি ছোট টুকরোতে বিভক্ত করেন। এরপর লাশের টুকরোগুলো দুটি ড্রামের ভেতর ভরে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে নিয়ে রাজধানীতে ঘুরতে থাকেন। সুযোগ বুঝে তারা হাইকোর্টের সামনে জাতীয় ঈদগাহ মাঠের কাছে ড্রাম দুটি ফেলে পালিয়ে যান।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) হাইকোর্টের সামনে থেকে আশরাফুলের খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ব্যবসায়ীর পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) নিহতের ছোট বোন শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ও র‍্যাবের তৎপরতায় ঘটনার মূল হোতা জারেজুল ইসলামকে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে এবং তার প্রেমিকা শামীমাকে বিভিন্ন আলামতসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডিবির যুগ্ম কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন যে পরকীয়ার জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।


কওমী টাইমস

সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ মুস্তাইন বিল্লাহ
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত