প্রকাশের তারিখ : ০৪ অক্টোবর ২০২৫
মার্কিন প্রতিবেদনে মানবপাচার মোকাবিলায় বাংলাদেশের অগ্রগতি
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ২০২৫ সালের মানবপাচার (TIP) প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় স্তরে স্থান দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটি মানবপাচার মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে, যদিও সর্বনিম্ন মান পূর্ণরূপে অর্জন হয়নি।প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টা যেমন ভুক্তভোগীর সুরক্ষা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আন্তঃসংস্থা সমন্বয়কে প্রশংসিত করা হয়েছে। সরকারের ‘ন্যাশনাল রেফারেল মেকানিজম’ গ্রহণ, সম্মুখ সারির কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ সম্প্রসারণ এবং ভুক্তভোগী শনাক্তকরণ কার্যক্রমের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখানো হয়েছে।সরকার ১,৪৬২ জন পাচারের শিকারকে শনাক্ত করেছে। এর মধ্যে ১৪৪ জন যৌনপাচার এবং ২৮৫ জন জোরপূর্বক শ্রমের শিকার। এছাড়া ১,০৩৩ জন অন্যান্য ধরনের পাচারের শিকার। ২০২৪ সালের একই সময়ে শনাক্তকৃত ভুক্তভোগীর সংখ্যা ছিল ১,২১০ জন।ভুক্তভোগীদের সুরক্ষার জন্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক, সমাজকল্যাণ, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রগুলোতে স্বাস্থ্যসেবা, আইনি সহায়তা ও আশ্রয় সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া পুলিশ, অভিবাসন কর্মকর্তা ও শ্রম পরিদর্শকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে সেবা সম্প্রসারণ করা হয়েছে।প্রতিবেদনে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও ইন্টারপোল, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রভৃতি দেশের সঙ্গে সমন্বয়কাজের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারের পদক্ষেপে পাচারবিরোধী পক্ষগুলোর ক্ষমতা বৃদ্ধি, সিআইডি, পিবিআই ও সিটিটিসি-এর মধ্যে সমন্বয় শক্তিশালী করা হয়েছে।সরকার জাতীয় মানবপাচার বিরোধী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রতিরোধ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০২৫ সালে ৬২১.৪৯ মিলিয়ন টাকা বরাদ্দ করে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৮–২০২৫ বাস্তবায়ন চালু রেখেছে।জাতীয় ও স্থানীয় কমিটি বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকা, রেডিও ও ডিজিটাল মাধ্যমে সচেতনতা প্রচার অব্যাহত রেখেছে। জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো ১০৪টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিচালনা করছে এবং বিদেশগামী শ্রমিকদের জন্য প্রস্থান-পূর্ব প্রশিক্ষণ সেশন চালু করেছে। নারীদের জন্য ৩০ দিনের বিশেষায়িত কোর্সও রয়েছে।বাংলাদেশ মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও ব্রুনাইয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক শ্রম চুক্তি জোরদার করেছে। নিয়োগকর্তা প্রদত্ত নিয়োগ মডেল প্রতিষ্ঠা এবং প্রত্যাগত অভিবাসী শ্রমিকদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক পুনর্বাসনের জন্য জাতীয় নীতি চালু করা হয়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে।প্রতিবেদন জোর দিয়ে উল্লেখ করেছে যে, দেশের চলমান সংস্কার, প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততা মানবপাচারের বিরুদ্ধে দৃঢ় রাজনৈতিক ইচ্ছার প্রতিফলন। বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্তরে অবস্থান আইনের শাসন, ভুক্তভোগীর সুরক্ষা এবং মানবপাচার প্রতিরোধে ক্রমবর্ধমান প্রতিশ্রুতিকে নির্দেশ করে।
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত