প্রকাশের তারিখ : ০৯ অক্টোবর ২০২৫
গাজা বন্দি-বিনিময়: ইসরাইল মুক্তি দিচ্ছে ১,৯৫০ ফিলিস্তিনি, ফেরত পাচ্ছে ২০ ইসরাইলি জিম্মি
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায়ের অংশ হিসেবে ইসরাইল ও হামাস বন্দি-বিনিময় প্রক্রিয়া চালু করতে সম্মত হয়েছে। হামাসের এক শীর্ষ কর্মকর্তার বরাতে জানানো হয়, ইসরাইল প্রায় ১,৯৫০ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি দেবে এবং বদলে হামাস ২০ জন জীবিত ইসরাইলিকে ফেরত দেবে—চুক্তির প্রথম ধাপ পূরণে ৭২ ঘণ্টার সময়সীমা ধার্য করা হয়েছে।গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দি-বিনিময় চুক্তির প্রথম ধাপ বাস্তবায়নের শর্তে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এখন আনুষ্ঠানিকভাবে বন্দি-বিনিময় কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। হামাসের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপি-কে জানিয়েছেন, চুক্তির আওতায় ইসরাইল মোট প্রায় ১,৯৫০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে—এদের মধ্যে ২৫০ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এবং ১,৭০০ জন যুদ্ধ শুরুর পর গ্রেপ্তার হওয়া বন্দি। বিনিময়ে হামাস ২০ জন জীবিত ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে (ট্যাক্সট—টাইমস অফ ইসরাইলের তথ্য উদ্ধৃত করে)।চুক্তি বাস্তবায়নের সময়সূচি নিয়ে হামাসের অন্য এক সূত্র জানায়, বন্দি‑বিনিময় কার্যক্রম চুক্তি কার্যকর হওয়ার ৭২ ঘন্টার মধ্যে শুরু হবে এবং এটি আগামী সপ্তাহে কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে—সৌদি টেলিভিশন আল-শার্ক ও আল-হাদাথের রিপোর্টে এ সময়সীমার কথাও উঠেছে। আল-হাদাথ জানায়, ৭২ ঘন্টার গণনা শুরু হবে তখনই, যখন ইসরাইলি সেনা গাজায় নির্ধারিত সীমারেখায় সরে যাবে।চুক্তিতে ধাপে ধাপে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের সময়সূচিও অন্তর্ভুক্ত করা আছে এবং তা বাস্তবায়নে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের নিশ্চয়তা যোগ হয়েছে—হামাস সূত্রের উদ্ধৃতি অনুযায়ী। এছাড়া চুক্তির অন্যান্য অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে:
রাফাহ সীমান্ত এবং তার আশপাশ থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার করা হবে; সীমান্ত দুই দিকেই খোলা হবে।
গাজা থেকে আহত ও গুরুতর রোগীদের মিশরে স্থানান্তরের অনুমতি দেয়া হবে।
প্রথম পাঁচ দিনে গাজায় প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০০টি ট্রাক ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ করবে; পরবর্তীতে সংখ্যাটি আরও বাড়ানো হবে—হামাসের এক কর্মকর্তা এএফপি‑কে জানিয়েছেন।
দক্ষিণ গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষদের গাজার সিটি ও উত্তরাঞ্চলে ফিরে যাওয়ার অনুমতি শুরুর কথাও চুক্তিতে রয়েছে।
এই বন্দি-বিনিময় ও ত্রাণপ্রবাহের পদক্ষেপগুলো বাস্তবে রূপ নেওয়ার জন্য কূটনীতিক ও মধ্যস্থতাকারীরা মাঠে নিরাপত্তা ব্যবস্থার সমন্বয়, ধাপে ধাপে সেনা প্রত্যাহার কার্যক্রম এবং তহবিল ও লগিস্টিক সমন্বয়ে কাজ চালাবেন বলে জানা গেছে।
তবে বিশ্লেষকরা সতর্ক করেই বলেন—চুক্তি ঘোষণার পরে বাস্তবায়ন কত ত্বরিত ও মসৃণ হবে, তা নির্ভর করবে দুপক্ষের রাজনীতিক সদিচ্ছা, মাঠে নিরাপত্তা স্থিতি এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ ও চাপের ওপর। গত দুই বছরের সংঘাত ও অবরোধের কারণে গাজায় মানবিক পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটাপন্ন; তাই ত্রাণের নিরাপদ, অবাধ প্রবেশ এবং বন্দিদের মর্যাদাপূর্ণ মুক্তি নিশ্চিত করা হলে তারই সঙ্গে পুনর্বাসন‑পুনর্গঠনে কাজ শুরু হওয়া যাবে।
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত