প্রকাশের তারিখ : ১৯ অক্টোবর ২০২৫
সততা, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমই হোক সর্বোচ্চ প্রাধান্য—আনসার ও ভিডিপি মহাপরিচালক
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় সেবায় নিয়োজিতদের উদ্দেশ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন। জনগণের অর্থে পরিচালিত এই সেবায় সততা, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি। নব-পদোন্নতিপ্রাপ্ত সার্কেল অ্যাডজুট্যান্টদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে মহাপরিচালক বাহিনীর মাঠ পর্যায়ের কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং দুর্যোগকালীন সময়ে তাদের তাৎক্ষণিক সাড়া দেওয়ার সক্ষমতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তরে গত রবিবার (১৯ অক্টোবর, ২০২৫) ১০৪ জন উপজেলা প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষিকাকে সার্কেল অ্যাডজুট্যান্ট পদে পদোন্নতি প্রদান উপলক্ষে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘র্যাংক ব্যাজ’ পরানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান দিকনির্দেশক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ।মহাপরিচালক তার বক্তব্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি রাষ্ট্রের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রীয় সেবায় নিয়োজিত প্রত্যেকের মনে থাকতে হবে—আমাদের পারিশ্রমিক আসে জনগণের ঘামার্জিত অর্থ থেকে, তাই দায়িত্ব পালনের প্রতিটি মুহূর্তে সততা, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমকেই সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিতে হবে। নিজের মাতৃভূমিকে সমুন্নত রাখা— এই হোক আমাদের সবার অঙ্গীকার।”তিনি জোর দেন যে, গণপ্রতিরক্ষা বাহিনী হিসেবে আনসার বাহিনীর অবদান আজ জাতির কাছে এক অনন্য মর্যাদা অর্জন করেছে। দেশের কল্যাণে নিজেদের সম্পূর্ণভাবে নিবেদিত করতে হলে বাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে তাদের অতীত অবস্থান, বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যতের লক্ষ্যপথ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। এই আত্মচেতনা ও দিকনির্দেশনাই বাহিনীর অগ্রযাত্রার মূল প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।মাঠ প্রশাসনে বাহিনীর কাঠামোকে আরও কার্যকর, গতিশীল ও শক্তিশালী করতে মহাপরিচালক তৃণমূল পর্যায়ের সদস্যদের যোগ্যতা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সর্বোচ্চ প্রকাশ ঘটানোর আহ্বান জানান। তার মতে, এর মাধ্যমেই বাহিনীর গ্রহণযোগ্যতা নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে এবং দেশসেবার মহান দায়িত্ব আরও সুসংহত ও ফলপ্রসূ হবে।দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের সময়ে আনসার বাহিনীর ‘প্রথম সাড়া প্রদানকারী’ (First Responder) ভূমিকার ওপর আলোকপাত করে তিনি বলেন, যেকোনো সংকট মোকাবিলায় প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়িত্ববোধে পরিপূর্ণ এবং ইতিবাচক মনোভাবে উদ্ভাসিত থাকতে হবে। সম্প্রতি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের সময় আনসার সদস্যদের সাহসিকতা ও জীবন বাজি রেখে রাষ্ট্রীয় জানমাল রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়ার ঘটনাকে তিনি অসামান্য উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন।ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনায় মহাপরিচালক বলেন, নতুন বাংলাদেশের পরিবর্তিত চাহিদা অনুযায়ী গণপ্রতিরক্ষা বাহিনী হিসেবে আনসার ও ভিডিপির ভূমিকা আরও জোরালো হবে এবং রাষ্ট্রের স্বার্থের সাথে সংগতি রেখে বাহিনীর সদস্যদের দক্ষতা ও সক্ষমতার ক্ষেত্রগুলো আরও শাণিত করা হবে। পরিশেষে, বাহিনীর প্রতি জনগণের আস্থা রক্ষা করার মাধ্যমেই সকল লক্ষ্য ও প্রত্যাশা সফলভাবে পূরণ সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফিদা মাহমুদ, উপমহাপরিচালক (প্রশাসন) কর্নেল মো. ফয়সাল আহাম্মদ ভূঁইয়া, উপমহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. সাইফুল্লাহ রাসেল, উপমহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. রফিকুল ইসলাম, উপমহাপরিচালক (ঢাকা রেঞ্জ) মো. আশরাফুল আলমসহ সদর দপ্তরের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত