প্রকাশের তারিখ : ০৮ নভেম্বর ২০২৫
যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও গাজায় ত্রাণ প্রবেশে ইসরায়েলের বিধিনিষেধ
জাতিসংঘ (UN) শুক্রবার জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়া সত্ত্বেও ইসরায়েল কর্তৃক গাজা উপত্যকায় ত্রাণ প্রবেশে এখনো গুরুতর সীমাবদ্ধতা বজায় রয়েছে। জাতিসংঘের মুখপাত্র ফারহান হক জানিয়েছেন, মানবিক সহায়তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হওয়া সত্ত্বেও মানুষের জরুরি চাহিদা বিপুল, কিন্তু যুদ্ধবিরতির পর থেকে বিধিনিষেধ দ্রুত প্রত্যাহার করা হচ্ছে না। ইসরায়েলি বাহিনীর উপস্থিতির কারণে গাজার মাত্র ১৩% অক্ষত কৃষিজমি এখন দুর্গম হয়ে পড়েছে, যা স্থানীয় খাদ্য উৎপাদনে বাধা সৃষ্টি করছে।জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় কার্যালয় (OCHA)-এর বরাত দিয়ে জাতিসংঘের মুখপাত্র ফারহান হক এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, যুদ্ধবিরতির পর থেকে মানবিক সহায়তার মাত্রা বাড়ানো হলেও ইসরায়েলের বিধিনিষেধের কারণে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।সীমিত প্রবেশাধিকার ও বিধিনিষেধ
গত সোমবার পর্যন্ত জাতিসংঘ এবং তাদের অংশীদারেরা গাজার ক্রসিংগুলো থেকে ৩৭,০০০ মেট্রিক টনেরও বেশি ত্রাণ সামগ্রী, যার বেশিরভাগই খাদ্য, সংগ্রহ করেছে।
তবে ত্রাণের প্রবেশাধিকার এখনো মাত্র দুটি ক্রসিংয়ে সীমাবদ্ধ। ইসরায়েল থেকে উত্তর গাজায় বা মিশর থেকে দক্ষিণ গাজায় কোনো সরাসরি প্রবেশাধিকার নেই।
নির্দিষ্ট কিছু জরুরি সামগ্রী এবং বেসরকারি সংস্থার (NGO) কর্মীদেরকেও গাজায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
খাদ্য উৎপাদনে মারাত্মক ক্ষতিস্থানীয় খাদ্য উৎপাদন অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে:
গাজা উপত্যকার মাত্র ১৩% কৃষিজমি অক্ষত রয়েছে, কিন্তু ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী মোতায়েন থাকার কারণে সেগুলোর বেশিরভাগই এখন দুর্গম ও ব্যবহারের অযোগ্য।
গ্রিনহাউস এলাকা, কৃষি কূপ এবং কৃষি অবকাঠামোর ৭৯% থেকে ৮৯% ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফলদ বৃক্ষ, বিশেষ করে জলপাই গাছের প্রায় ৮৯% ক্ষতিগ্রস্ত বা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধ্বংস হয়ে গেছে।
জাতিসংঘের মুখপাত্র আরও উল্লেখ করেন, বেশিরভাগ বাস্তুচ্যুত মানুষ জনাকীর্ণ অস্থায়ী স্থানে অবস্থান করছে। এই অস্থায়ী আশ্রয়শিবিরগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই খোলা বা অনিরাপদ এলাকায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে তৈরি হয়েছে, যা তাদের দুর্দশা আরও বাড়িয়েছে।
অক্টোবর ২০২৩ থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৬৯,০০০ মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু, এবং আহত হয়েছে ১৭০,৬০০ জনেরও বেশি।
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত