প্রকাশের তারিখ : ০৮ নভেম্বর ২০২৫
করাচি–চট্টগ্রাম সরাসরি শিপিং চালু: বাংলাদেশ–পাকিস্তান বাণিজ্যে নতুন যুগের সূচনা
আঞ্চলিক বাণিজ্য সহযোগিতায় এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। দুই দেশের করাচি ও চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচল পরিষেবা চালু হয়েছে, যা পণ্য সরবরাহের সময় ও খরচ উভয়ই উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনবে।
শুক্রবার পাকিস্তানি গণমাধ্যম সামা টিভি-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, করাচি ও চট্টগ্রামের মধ্যে চালু হওয়া নতুন এই শিপিং পরিষেবা দুই দেশের বাণিজ্যিক যোগাযোগে এক নতুন অধ্যায় সূচনা করেছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জাতীয় পরিষদে জমা দেওয়া এক লিখিত জবাবে জানান, এই পরিষেবার ফলে পণ্য সরবরাহের সময় ২৩ দিন থেকে কমে মাত্র ১০ দিনে নেমে এসেছে।ইসহাক দার বলেন, “এই উদ্যোগ লজিস্টিক দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবহন ব্যয় কমাবে, যা দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ সম্প্রতি পাকিস্তানি রপ্তানি পণ্যের ওপর থাকা ১০০% পরিদর্শনের বাধ্যবাধকতা তুলে নিয়েছে, যা ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ থেকে কার্যকর হয়েছে। এ সিদ্ধান্তকে তিনি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সহজীকরণের বড় অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করেন।২০২৪ সালের ২৭ অক্টোবর ঢাকায় অনুষ্ঠিত পাকিস্তান–বাংলাদেশ নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন (জেইসি) বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, আঞ্চলিক সংযোগ এবং কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজীকরণ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।এছাড়া, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তির আওতায় পাকিস্তান ২০০,০০০ মেট্রিক টন চাল রপ্তানির প্রতিশ্রুতি দেয়, যার মধ্যে ৫০,০০০ মেট্রিক টন ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে সরবরাহ করা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী দার জানান, এই কাঠামোর আওতায় বাকি চালও ধাপে ধাপে সরবরাহ করা হবে।দারের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, সম্প্রতি ২০০-রও বেশি পাকিস্তানি কোম্পানি ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ও বাংলাদেশ ডেনিম এক্সপোতে অংশ নিয়েছে। এতে বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও উৎপাদন খাতে পাকিস্তানি বিনিয়োগ ও অংশীদারিত্ব আরও জোরদার হয়েছে।শিপিং সহযোগিতার পাশাপাশি দুই দেশ সরাসরি বিমান সংযোগ স্থাপনের দিকেও এগোচ্ছে। ইসহাক দার জানান, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে দুইটি পাকিস্তানি বেসরকারি বিমান সংস্থাকে ঢাকা–করাচি রুটে ফ্লাইট চালুর অনুমতি দিয়েছে, এবং বর্তমানে ফ্লাইট সূচি ও লজিস্টিক প্রস্তুতি চূড়ান্ত করার কাজ চলছে।
পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতে, এসব উদ্যোগ শুধু বাণিজ্য নয়, বরং বিনিয়োগ, পর্যটন ও কূটনৈতিক সম্পর্কেও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে, যা বাংলাদেশ–পাকিস্তান সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ ও পারস্পরিকভাবে লাভজনক করে তুলবে।
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত