স্পেনের বার্সেলোনায় শুরু হয়েছে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনে যুদ্ধাপরাধ তদন্তে আন্তর্জাতিক গণ-আদালত ট্রাইব্যুনাল। ‘ইন্টারন্যাশনাল পিপলস ট্রাইব্যুনাল অন প্যালেস্টাইন’ নামে দুই দিনের এই ফোরামে প্রত্যক্ষদর্শী, বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি, বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষকেরা বিভিন্ন প্রমাণ উপস্থাপন করবেন। আল-জাজিরা জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বিচারব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কারণে এই গণ-আদালতকে বিকল্প প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখা হচ্ছে।স্পেনের বার্সেলোনায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘ইন্টারন্যাশনাল পিপলস ট্রাইব্যুনাল অন প্যালেস্টাইন’। ফিলিস্তিনে ইসরাইলের বিরুদ্ধে অভিযোগিত যুদ্ধাপরাধ তদন্তে জনগণের উদ্যোগে গঠিত এই গণ-আদালত দুই দিনব্যাপী চলবে। আয়োজকদের দাবি, বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত বিচারব্যবস্থা রাজনৈতিক চাপ ও কূটনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে প্রায়ই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়। সেই শূন্যতা পূরণ করতেই এই বিকল্প ট্রাইব্যুনাল গড়ে তোলা হয়েছে।ট্রাইব্যুনালটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে ইন্টারন্যাশনাল লিগ অফ পিপলস স্ট্রাগল, ইন্টারন্যাশনাল পিপলস ফ্রন্ট এবং পিপলস কোয়ালিশন অন ফুড সভেরেনটি। এতে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী, যুদ্ধ থেকে বেঁচে যাওয়া ফিলিস্তিনি নাগরিক এবং বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা সাক্ষ্য দেবেন। তাদের বর্ণনা ও প্রমাণের মাধ্যমে ইসরাইল কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যা, জোরপূর্বক অনাহার, দখলদারিত্ব, নির্বিচারে বোমাবর্ষণ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের নানা অভিযোগ তুলে ধরা হবে।ফোরামে শুধু ইসরাইল নয়, বরং পশ্চিমা বিশ্বের ভূমিকা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি ও অন্যান্য পশ্চিমা শক্তি—নিরবচ্ছিন্ন অর্থনৈতিক, সামরিক এবং কূটনৈতিক সহায়তার মাধ্যমে কীভাবে ইসরাইলের কার্যক্রমকে সহায়তা করেছে—তা বিশ্লেষণ করা হবে। বিশেষত অস্ত্র সরবরাহ, কূটনৈতিক সুরক্ষা এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে ইসরাইলের প্রতি সমর্থন—এসব উপাদান কীভাবে সংঘাতকে দীর্ঘায়িত করেছে, তা গুরুত্ব পেয়েছে আলোচনায়।এছাড়া তথাকথিত ইহুদিবাদী-নেতৃত্বাধীন কিছু বেসরকারি সংস্থা এবং গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশনের মতো বিতর্কিত সংগঠনের ভূমিকা নিয়েও আলো ফেলবে ট্রাইব্যুনাল। তাদের কার্যক্রম কতটা নিরপেক্ষ বা কতটা রাজনৈতিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট—সেটিও আলোচনার অংশ। আয়োজকদের আশা, এই জনগণ-নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল বিশ্ববাসীর সামনে নতুন করে যুদ্ধাপরাধের বাস্তব চিত্র তুলে ধরবে এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে নতুন করে তদারকি ও চাপ সৃষ্টির পথ খুলে দেবে।