ইসরাইলে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর গাজা দখল পরিকল্পনার প্রতিবাদে দেশজুড়ে সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়েছে। বন্দি বিনিময় ও যুদ্ধবিরতির দাবিতে লক্ষাধিক মানুষ রাস্তায় নামায় রাজধানী তেলআবিবসহ বিভিন্ন শহরে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
ইসরাইলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ৮ আগস্ট গাজার উত্তরাঞ্চলীয় শহর গাজা সিটি দখলের সিদ্ধান্ত অনুমোদনের পর থেকেই উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বন্দিদের পরিবারগুলো সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেয়, যা সমর্থন করেছে ৭৫টি স্থানীয় প্রশাসন, একাধিক শ্রমিক সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিরোধী দলগুলো।
রবিবার সকালে শুরু হওয়া ধর্মঘটে হাজার হাজার মানুষ রাজধানী তেলআবিব, জেরুজালেম ও দেশের অন্যান্য শহরে প্রধান মহাসড়ক অবরোধ করে। তেলআবিবের বিখ্যাত আয়ালন এক্সপ্রেসওয়ে, জেরুজালেমগামী প্রধান সড়ক এবং উত্তর ও মধ্য ইসরাইলের বেশ কয়েকটি মহাসড়ক বিক্ষোভকারীরা বন্ধ করে দেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত অন্তত ৩২ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেরুজালেমে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করেছে।
ধর্মঘটে যোগ দেন বিভিন্ন উচ্চ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাও। তারা রাজধানীর কাপন ও বেগিন সড়ক অবরোধ করে “গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করো” স্লোগান দেন।
হিস্টাড্রুট শ্রমিক ফেডারেশনের প্রধান আর্নন বার-ডেভিড নেতানিয়াহুকে উদ্দেশ করে বলেন: “বন্দি বিনিময় চুক্তিতে সই করুন এবং এ যুদ্ধের ইতি টানুন।”
প্রধান বিরোধী দল ‘ইয়েশ আতিদ’-এর নেতা ইয়ায়ির লাপিদ বিক্ষোভকারীদের পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, “বন্দিদের সরকার যুদ্ধের পণ বানাতে পারে না।”
ব্লু-হোয়াইট দলের নেতা বেনি গান্টজ সরকারকে পরিবারের সঙ্গে সংহতি প্রকাশের আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু অভিযোগ করেছেন, ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারীরা আসলে বন্দিদের মুক্তি বিলম্বিত করছে। তিনি বলেন, “হামাসকে পরাজিত না করলে যুদ্ধ থামানো যাবে না, আর তা না হলে বন্দি মুক্তিও বিলম্বিত হবে।”
এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক মহল গাজা দখল পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘ ও একাধিক মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, নতুন সামরিক অভিযানে গাজার আরও প্রায় ১০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে।