ইউরোপের বিভিন্ন দেশে হাজারো মানুষ ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলের গাজা উপত্যকায় চলমান হামলা বন্ধের দাবি জানান এবং যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের আহ্বান জানান।
শনিবার ইউরোপজুড়ে অনুষ্ঠিত এসব বিক্ষোভে অংশ নেয় সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর্মী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীরা।
স্টকহোমে, ওডেনপ্লান স্কয়ারে হাজারো মানুষ সমবেত হয়ে গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানান। কালো পোশাকে বিক্ষোভকারীরা প্রতীকী কফিন বহন করেন, যা নিহত সাংবাদিকদের স্মরণে সাজানো হয়। সম্প্রতি ইসরায়েলি বিমান হামলায় আল জাজিরার সাংবাদিক আনাস আল-শরীফ ও মোহাম্মদ কুরাইকেয়া নিহত হন; তাদের সঙ্গে আরও চার গণমাধ্যমকর্মীর মৃত্যু ঘটে। গাজার সরকারি তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ২৩৮ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।
ডাবলিনে, রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস থেকে হাজারো চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মিছিল বের করেন। তারা নীরব পদযাত্রার মাধ্যমে গাজার নিহত সহকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান তোলেন।
গ্লাসগোতে, হাউজিং সেক্রেটারি মায়েরি ম্যাকঅ্যালানসহ অসংখ্য মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। তিনি এক বক্তব্যে বলেন, “গণহত্যা আমাদের চোখের সামনে ঘটছে। এর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দাঁড়াতে হবে।”
ইংল্যান্ডের নরউইচে, ফিলিস্তিন অ্যাকশন নামের নিষিদ্ধ ঘোষিত একটি সংগঠনকে সমর্থন জানানোর অভিযোগে ১৩ জনকে আটক করে পুলিশ। গত সপ্তাহেও লন্ডনে একই অভিযোগে ৫০০-র বেশি মানুষকে আটক করা হয়েছিল।
এছাড়া বাকিংহামশায়ারে, হাজারো মানুষ রয়্যাল এয়ার ফোর্স (RAF) হাই উইকোম্ব ঘাঁটি ঘেরাও করে যুক্তরাজ্যের ইসরায়েলকে সামরিক সহযোগিতা বন্ধের দাবি জানায়।
গাজার চলমান যুদ্ধে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (ICC) গত বছর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। একইসঙ্গে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে (ICJ) গণহত্যার মামলাও চলছে।