নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: জামায়াতসহ কয়েকটি দলের বিরুদ্ধে ফখরুলের অভিযোগ
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি সমমনা রাজনৈতিক দল গণভোটের দাবি তুলে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে না হলে তা জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে। শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে এক সমাবেশে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার সংহতি বিপ্লব দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত র্যালির পূর্ব সমাবেশে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই—নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হতে হবে এবং সেই নির্বাচন আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই অনুষ্ঠিত হতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশের মানুষ তা কিছুতেই মেনে নেবে না।”তিনি অভিযোগ করেন, কিছু রাজনৈতিক দল জোট গঠন করে নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের দাবি জানিয়ে চাপ সৃষ্টি করছে। ফখরুলের মতে, “দুটি ভোট আলাদাভাবে করতে গেলে প্রচুর অর্থ খরচ হবে এবং মূল নির্বাচনের গুরুত্ব কমে যাবে।”অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়েও তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে যাদের আমরা সম্পূর্ণ সমর্থন দিয়েছি, তারাই এখন এমন কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছে যা নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে।”বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, “আমরা এই নির্বাচনে অংশ নেব এবং ইনশাআল্লাহ বিজয়ী হয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব।” যুবকদের উদ্দেশে তিনি আহ্বান জানান, “আপনাদের ত্যাগ, শহীদ নেতাকর্মীদের রক্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে বিজয়ের পথে এগিয়ে যান।”দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে “আধুনিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা” আখ্যা দিয়ে ফখরুল বলেন, “সংস্কারের জন্য তিনি ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। অন্তর্বর্তী সরকার সেই সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করলে আমরা তাদের পূর্ণ সমর্থন জানাই।”তিনি আরও জানান, প্রায় এক বছর ধরে সংস্কারের বিষয়ে আলোচনার পর গত ১৭ অক্টোবর দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছায় এবং যে বিষয়গুলোতে একমত হয়েছে, সেগুলোর ওপর স্বাক্ষরও করা হয়। তবে বাকি বিষয়গুলো বিএনপি গ্রহণ করেনি।সম্প্রতি উপদেষ্টা কাউন্সিলের এক সদস্যের বক্তব্যের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, “একজন উপদেষ্টা প্রেস কনফারেন্স করে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে সাতদিন সময় দেওয়া হবে। তাহলে এতদিন ধরে যে ঐক্যবদ্ধ কমিশনে বসে আমরা প্রস্তাবগুলো নিয়ে কাজ করলাম, সেটির উদ্দেশ্য কী ছিল? এতে রাজনৈতিক সমস্যার কোনো সমাধানই হয়নি।”সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, “বিএনপি মাঠে নামলে অনেকে গায়েব হয়ে যাবেন। ৭১ সালে যেমন জাতিকে বিভ্রান্ত করেছিলেন, এখনো তাই করছেন। সময় থাকতে জাতির কাছে ক্ষমা চান।”
র্যালিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিপুল সংখ্যক উপস্থিত ছিলেন। তারা স্লোগানে স্লোগানে সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে একমত প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন।