ঢাকা    বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
ঢাকা    বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
কওমী টাইমস

মুসলিম বিশ্ব

ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের তীব্র প্রতিবাদ কাতারের

মঙ্গলবার কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ইসরায়েল কর্তৃক গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। দোহায় শুরা কাউন্সিলের নতুন অধিবেশন উদ্বোধনকালে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, ইসরায়েলের ধারাবাহিক পদক্ষেপ গাজা উপত্যকাকে মানুষের বসবাসের অযোগ্য করে তুলেছে। একইসঙ্গে আমির স্পষ্ট ঘোষণা দেন যে গাজা ঐক্যবদ্ধ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এ বিষয়ে বিশ্ব জনমত ও শান্তিপ্রেমী শক্তির সঙ্গে কাতার একমত।আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের সকল ধরনের আগ্রাসন ও কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বলেন, "বিশেষ করে গাজা উপত্যকাকে মানুষের বসবাসের অযোগ্য অঞ্চলে পরিণত করা এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের জন্য আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।" তিনি উল্লেখ করেন, গাজা আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং সেখানে ৯০ শতাংশ বেসামরিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।গত ১০ অক্টোবর মিশর, কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। চুক্তিটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনার ভিত্তিতে হয়েছিল, যার মূল শর্ত ছিল যুদ্ধ বন্ধ, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পর্যায়ক্রমিক প্রত্যাহার, বন্দী বিনিময় এবং গাজায় দ্রুত ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ।তবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল এই চুক্তি ধারাবাহিকভাবে লঙ্ঘন করে চলেছে। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৮০টিরও বেশি ইসরায়েলি লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। এই লঙ্ঘনের ফলে কমপক্ষে ৯৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২৩০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।কাতারের আমির দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করেন, "গাজা উপত্যকা ঐক্যবদ্ধ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ।" তিনি আরও যোগ করেন, "আমাদের এই অবস্থানের সঙ্গে আজ বিশ্ব জনমত এবং গোটা বিশ্বের শান্তিপ্রেমী শক্তি একমত।"ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে আরও ১১টি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায়, জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে মোট ১৫৯টি দেশ এখন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে।কাতারের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপের নিন্দাঅভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে আমির জানান, কাতার দুটি 'নিন্দনীয় ও ধিক্কারযোগ্য' সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের শিকার হয়েছে, যার একটি ইরান এবং অন্যটি ইসরায়েল ঘটিয়েছে। তিনি বলেন, "বিশ্বব্যাপী এই দুটি হামলার নিন্দা করা হয়েছে এবং কাতার এই ঘটনাগুলো থেকে আরও বেশি শক্তিশালী ও সুরক্ষিত হয়ে বের হয়ে এসেছে।"গত জুনে ইরান কাতারের আল-উদেইদ মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। অপরদিকে, গত ৯ সেপ্টেম্বর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দোহায় হামাসের নেতৃত্বের উপর বিমান হামলা করে, যা কাতার তীব্রভাবে নিন্দা করে এবং এই আগ্রাসনের জবাব দেওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করার কথা জানায়। ওই হামলায় কাতারের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর একজন সদস্য নিহত হন। হামাস জানায়, তাদের আলোচক দলের প্রধান খলিল আল-হাইয়া হত্যাচেষ্টা থেকে রক্ষা পেলেও, তার দপ্তর পরিচালক জিহাদ লাবাদ, ছেলে হুমাম আল-হাইয়া ও ৩ জন দেহরক্ষী নিহত হন।

ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের তীব্র প্রতিবাদ কাতারের