রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নতুন করে ৯৬ মিলিয়ন ডলার সহায়তার ঘোষণা দিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে এই সহায়তা ঘোষণা করা হয়। বক্তারা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের পাশাপাশি সংকট সমাধানে রাজনৈতিক পদক্ষেপের ওপর জোর দেন।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত রোহিঙ্গা বিষয়ে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র ৬০ মিলিয়ন ডলার এবং যুক্তরাজ্য ৩৬ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা ঘোষণা করেছে। সম্মেলনে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি আনালেনা বেয়ারবক বলেন, "৫০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু মানবিক বিপর্যয়ের শিকার। শুধু বাংলাদেশের কক্সবাজারেই ৮ লাখ শিশু বিদ্যালয়ের বাইরে রয়েছে।"
তিনি জানান, ২০২৫ সালের মানবিক সহায়তা পরিকল্পনা এখনো মাত্র ১২% অর্থায়ন পেয়েছে—যা বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য একটি "লজ্জাজনক" অবস্থা।
জাতিসংঘ মহাসচিবের কার্যালয় থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গা সংকট আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, মানবাধিকার ও নিরাপত্তাকে গভীর হুমকির মুখে ফেলেছে। অবিলম্বে তিনটি পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়—
১. বেসামরিক মানুষকে সুরক্ষা
২. মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা
৩. শরণার্থী আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের ওপর চাপ কমাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি
সম্মেলনে রোহিঙ্গা কর্মীরা বলেন, ২০১৭ সালের গণহত্যার পরও সহিংসতা বন্ধ হয়নি। বরং হত্যা, জোরপূর্বক সেনা নিয়োগ, যৌন সহিংসতা এবং অনাহার অব্যাহত রয়েছে।
আরাকান ইয়ুথ পিস নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা রফিক হুসন জানান, এক সপ্তাহেই ৪০০ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন, আর ২০২৪ সালের মে মাসের এক হামলায় ২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। তিনি উত্তর রাখাইনে আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে নিরাপদ অঞ্চল তৈরির দাবি জানান।
জাতিসংঘের বিশেষ দূত জুলি বিশপ সতর্ক করে বলেন, “মিয়ানমারের বহুমাত্রিক সংকট সামরিক অভ্যুত্থান-পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। কোনো যুদ্ধবিরতি নেই, শান্তিরও কোনো স্পষ্ট রূপরেখা নেই।”
সম্মেলনের সমাপনী বক্তব্যে বেয়ারবক বলেন, “আট বছর ধরে রোহিঙ্গারা বাস্তুচ্যুতি ও অনিশ্চয়তার জীবন পার করছে। তাদের সহনশীলতা বিস্ময়কর। এখন বিশ্বকেও দায়িত্ব নিতে হবে।”
রোহিঙ্গা কর্মীরা সতর্ক করেছেন—সহায়তার ঘোষণা যথেষ্ট নয়। তারা জোর দিয়ে বলেন, ন্যায়বিচারই একমাত্র পথ, সেটিই শান্তির ভিত্তি।
বিষয় : রোহিঙ্গা

মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ০১ অক্টোবর ২০২৫
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নতুন করে ৯৬ মিলিয়ন ডলার সহায়তার ঘোষণা দিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে এই সহায়তা ঘোষণা করা হয়। বক্তারা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের পাশাপাশি সংকট সমাধানে রাজনৈতিক পদক্ষেপের ওপর জোর দেন।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত রোহিঙ্গা বিষয়ে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র ৬০ মিলিয়ন ডলার এবং যুক্তরাজ্য ৩৬ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা ঘোষণা করেছে। সম্মেলনে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি আনালেনা বেয়ারবক বলেন, "৫০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু মানবিক বিপর্যয়ের শিকার। শুধু বাংলাদেশের কক্সবাজারেই ৮ লাখ শিশু বিদ্যালয়ের বাইরে রয়েছে।"
তিনি জানান, ২০২৫ সালের মানবিক সহায়তা পরিকল্পনা এখনো মাত্র ১২% অর্থায়ন পেয়েছে—যা বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য একটি "লজ্জাজনক" অবস্থা।
জাতিসংঘ মহাসচিবের কার্যালয় থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গা সংকট আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, মানবাধিকার ও নিরাপত্তাকে গভীর হুমকির মুখে ফেলেছে। অবিলম্বে তিনটি পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়—
১. বেসামরিক মানুষকে সুরক্ষা
২. মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা
৩. শরণার্থী আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের ওপর চাপ কমাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি
সম্মেলনে রোহিঙ্গা কর্মীরা বলেন, ২০১৭ সালের গণহত্যার পরও সহিংসতা বন্ধ হয়নি। বরং হত্যা, জোরপূর্বক সেনা নিয়োগ, যৌন সহিংসতা এবং অনাহার অব্যাহত রয়েছে।
আরাকান ইয়ুথ পিস নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা রফিক হুসন জানান, এক সপ্তাহেই ৪০০ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন, আর ২০২৪ সালের মে মাসের এক হামলায় ২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। তিনি উত্তর রাখাইনে আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে নিরাপদ অঞ্চল তৈরির দাবি জানান।
জাতিসংঘের বিশেষ দূত জুলি বিশপ সতর্ক করে বলেন, “মিয়ানমারের বহুমাত্রিক সংকট সামরিক অভ্যুত্থান-পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। কোনো যুদ্ধবিরতি নেই, শান্তিরও কোনো স্পষ্ট রূপরেখা নেই।”
সম্মেলনের সমাপনী বক্তব্যে বেয়ারবক বলেন, “আট বছর ধরে রোহিঙ্গারা বাস্তুচ্যুতি ও অনিশ্চয়তার জীবন পার করছে। তাদের সহনশীলতা বিস্ময়কর। এখন বিশ্বকেও দায়িত্ব নিতে হবে।”
রোহিঙ্গা কর্মীরা সতর্ক করেছেন—সহায়তার ঘোষণা যথেষ্ট নয়। তারা জোর দিয়ে বলেন, ন্যায়বিচারই একমাত্র পথ, সেটিই শান্তির ভিত্তি।

আপনার মতামত লিখুন