বিশ্ব জনমত যখন ক্রমশ ইসরায়েলের গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে, তখন দখলদার রাষ্ট্রটি সোশ্যাল মিডিয়া দখল করতে কোটি ডলার ঢালছে। মার্কিন নথি প্রকাশ করেছে, প্রভাবশালীদের মোটা অঙ্কে কিনে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে তেলআবিব।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের Foreign Agents Registration Act (FARA) এর আওতায় জমা দেওয়া নথি থেকে প্রকাশ পেয়েছে, ইসরায়েল সরকারের একটি গোপন প্রচারণা প্রকল্পে সোশ্যাল মিডিয়া প্রভাবশালীদের (influencers) প্রতি পোস্টে সর্বোচ্চ ৭,০০০ ডলার পর্যন্ত প্রদান করা হচ্ছে। তেলআবিবের কূটনৈতিক মন্ত্রণালয় তাদের চুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান Bridges Partners এর মাধ্যমে ২০২৪ সালের জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ লাখ ডলারের বাজেটে ৭৫–৯০টি প্রো-ইসরায়েল পোস্ট তৈরির পরিকল্পনা নেয়। এই উদ্যোগটির নাম দেওয়া হয় “Esther Project”।
তরুণ প্রজন্মের মধ্যে প্রভাব বিস্তারের জন্য এ প্রচারণায় বিশেষভাবে টিকটক, ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউবকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইসরায়েলি সরকারের আরেকটি ৬ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করা হয়েছে Clock Tower X LLC নামক একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে, যার নেতৃত্বে আছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা প্রধান ব্র্যাড পার্সকেল। এই প্রতিষ্ঠান প্রতি মাসে অন্তত ৫ কোটি তরুণের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়েছে।
চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো—এই চুক্তিতে এআই টুলস, বিশেষত ChatGPT-এর মতো প্ল্যাটফর্ম কীভাবে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে উত্তর দেয়, সেটি প্রভাবিত করার কৌশলও অন্তর্ভুক্ত। পরিকল্পনা হলো, ইন্টারনেটকে বিপুল পরিমাণ প্রো-ইসরায়েল কনটেন্টে ভরিয়ে দিয়ে এআই উত্তরগুলোকে নিজেদের অনুকূলে দাঁড় করানো। একই সঙ্গে MarketBrew AI সফটওয়্যার ব্যবহার করে গুগল ও বিং-এর সার্চ অ্যালগরিদমকে নিয়ন্ত্রণ করে ইসরায়েলবিরোধী কনটেন্টকে নিচের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, টিকটক অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় ইসরায়েলি মিত্র মার্কিন ব্যবসায়ী ও ওরাকল সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসনের বড় ভূমিকা রাখার সম্ভাবনা রয়েছে, যেটিকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রচারণার মূল উদ্দেশ্য হলো বিশ্বব্যাপী গণহত্যার অভিযোগ থেকে দৃষ্টি সরানো। কারণ, জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নিহত হয়েছে অন্তত ৬৮ হাজার ফিলিস্তিনি—অধিকাংশই নারী ও শিশু। সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ৯ শতাংশ মার্কিন তরুণ (১৮–৩৪ বছর বয়সী) ইসরায়েলের সামরিক কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করছে।
গত সপ্তাহে স্থানীয় প্রভাবশালীদের উদ্দেশে নেতানিয়াহু বলেন, "আজকের যুদ্ধ তরবারি দিয়ে হয় না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্র এখন সোশ্যাল মিডিয়া।”

বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ০২ অক্টোবর ২০২৫
বিশ্ব জনমত যখন ক্রমশ ইসরায়েলের গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে, তখন দখলদার রাষ্ট্রটি সোশ্যাল মিডিয়া দখল করতে কোটি ডলার ঢালছে। মার্কিন নথি প্রকাশ করেছে, প্রভাবশালীদের মোটা অঙ্কে কিনে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে তেলআবিব।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের Foreign Agents Registration Act (FARA) এর আওতায় জমা দেওয়া নথি থেকে প্রকাশ পেয়েছে, ইসরায়েল সরকারের একটি গোপন প্রচারণা প্রকল্পে সোশ্যাল মিডিয়া প্রভাবশালীদের (influencers) প্রতি পোস্টে সর্বোচ্চ ৭,০০০ ডলার পর্যন্ত প্রদান করা হচ্ছে। তেলআবিবের কূটনৈতিক মন্ত্রণালয় তাদের চুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান Bridges Partners এর মাধ্যমে ২০২৪ সালের জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ লাখ ডলারের বাজেটে ৭৫–৯০টি প্রো-ইসরায়েল পোস্ট তৈরির পরিকল্পনা নেয়। এই উদ্যোগটির নাম দেওয়া হয় “Esther Project”।
তরুণ প্রজন্মের মধ্যে প্রভাব বিস্তারের জন্য এ প্রচারণায় বিশেষভাবে টিকটক, ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউবকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইসরায়েলি সরকারের আরেকটি ৬ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করা হয়েছে Clock Tower X LLC নামক একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে, যার নেতৃত্বে আছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা প্রধান ব্র্যাড পার্সকেল। এই প্রতিষ্ঠান প্রতি মাসে অন্তত ৫ কোটি তরুণের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়েছে।
চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো—এই চুক্তিতে এআই টুলস, বিশেষত ChatGPT-এর মতো প্ল্যাটফর্ম কীভাবে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে উত্তর দেয়, সেটি প্রভাবিত করার কৌশলও অন্তর্ভুক্ত। পরিকল্পনা হলো, ইন্টারনেটকে বিপুল পরিমাণ প্রো-ইসরায়েল কনটেন্টে ভরিয়ে দিয়ে এআই উত্তরগুলোকে নিজেদের অনুকূলে দাঁড় করানো। একই সঙ্গে MarketBrew AI সফটওয়্যার ব্যবহার করে গুগল ও বিং-এর সার্চ অ্যালগরিদমকে নিয়ন্ত্রণ করে ইসরায়েলবিরোধী কনটেন্টকে নিচের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, টিকটক অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় ইসরায়েলি মিত্র মার্কিন ব্যবসায়ী ও ওরাকল সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসনের বড় ভূমিকা রাখার সম্ভাবনা রয়েছে, যেটিকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রচারণার মূল উদ্দেশ্য হলো বিশ্বব্যাপী গণহত্যার অভিযোগ থেকে দৃষ্টি সরানো। কারণ, জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নিহত হয়েছে অন্তত ৬৮ হাজার ফিলিস্তিনি—অধিকাংশই নারী ও শিশু। সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ৯ শতাংশ মার্কিন তরুণ (১৮–৩৪ বছর বয়সী) ইসরায়েলের সামরিক কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করছে।
গত সপ্তাহে স্থানীয় প্রভাবশালীদের উদ্দেশে নেতানিয়াহু বলেন, "আজকের যুদ্ধ তরবারি দিয়ে হয় না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধক্ষেত্র এখন সোশ্যাল মিডিয়া।”

আপনার মতামত লিখুন