ঢাকা    বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
ঢাকা    বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
কওমী টাইমস

ওসি প্রদীপের ক্রসফায়ার বাণিজ্য, জাফর আলমের দখলবাজি, ইয়াবা গডফাদার বদির নিয়ন্ত্রণ— সাড়ে ১৫ বছরের দুঃশাসনে আতঙ্কে ছিল কক্সবাজার।

কক্সবাজারে সাড়ে ১৫ বছরের দুঃশাসন: গায়েবি মামলা, ক্রসফায়ার ও দখলবাজির আতঙ্ক


কওমী টাইমস ডেস্ক
কওমী টাইমস ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৫ | প্রিন্ট সংস্করণ

কক্সবাজারে সাড়ে ১৫ বছরের দুঃশাসন: গায়েবি মামলা, ক্রসফায়ার ও দখলবাজির আতঙ্ক

সাড়ে ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে কক্সবাজার ছিল ক্রসফায়ার, গায়েবি মামলা, খুন-গুম ও দখলবাজির অন্ধকার অধ্যায়ের শিকার। ওসি প্রদীপের হাতে শতাধিক মানুষ ক্রসফায়ারে নিহত হন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হয় শত শত গায়েবি মামলা। জেলা জুড়ে আওয়ামী প্রভাবশালী নেতাদের হাতে দখল হয় চিংড়িঘের, ব্যবসা ও জমি।

আতঙ্কের নাম ‘ক্রসফায়ার’ ও ওসি প্রদীপ

টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ মাদকবিরোধী অভিযানের নামে ক্রসফায়ারকে রুটিনে পরিণত করেন। জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, কক্সবাজারে ২৫০ জনের বেশি মানুষ ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ২০৪ জন টেকনাফেই। ভুক্তভোগীদের পরিবার জানিয়েছে, ‘ক্রসফায়ার থেকে বাঁচাতে’ প্রদীপের দলে লাখ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হতো। সাবেক কাউন্সিলর একরামুল হক ও সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহার হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে আলোড়ন তোলে।

গায়েবি মামলা ও গ্রেপ্তারের আতঙ্ক

দলীয় সূত্র অনুযায়ী, সাড়ে ১৫ বছরে জেলায় বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে ৯০০-র বেশি গায়েবি মামলা হয়েছে, আসামি করা হয় প্রায় ২৫ হাজার নেতাকর্মীকে। অনেককে দিনের পর দিন গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাড়ি ছাড়া থাকতে হয়েছে।

বিএনপি-জামায়াতের ২১ নেতাকর্মী খুন আওয়ামী লীগের শাসনামলে কক্সবাজারে বিএনপির ৭ এবং জামায়াতের ১৪ নেতাকর্মী খুন হন। ২০১৩ সালে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়ের প্রতিবাদে মিছিলে পুলিশের গুলিতে জামায়াতের ৫ জন কর্মী নিহত হন।

প্রভাবশালী নেতাদের দখলবাজি

জাফর আলম (চকরিয়া-পেকুয়া আসন): হাজার হাজার একর চিংড়িঘের দখলের অভিযোগ।
আবদুর রহমান বদি (উখিয়া-টেকনাফ): ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, স্থলবন্দরসহ সবকিছুতে একচেটিয়া আধিপত্য।
মুজিবুর রহমান (পৌরসভা): কক্সবাজার শহরকেন্দ্রিক ব্যবসা দখল।
আশেক উল্লাহ রফিক ও মকছুদ মিয়া (মহেশখালী): চিংড়িঘের ও লবণ মাঠের নিয়ন্ত্রণ।
সমুদ্রসৈকতের জমি দখল করে তৈরি ‘ড্রাগন মার্কেট’ আওয়ামী দখলবাজির অন্যতম উদাহরণ হিসেবে রয়ে গেছে।

গুমের ঘটনা

২০১৫ সালে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ নিখোঁজ হয়ে ভারতের শিলংয়ে গিয়ে পাওয়া যান এবং দীর্ঘ ৯ বছর নির্বাসনে থাকতে হয়। টেকনাফের মোস্তাক আহমদও গুম হয়ে ফেরেননি।

জুলাই আন্দোলনে ৫ শহীদ
শেখ হাসিনা সরকারের পতন ত্বরান্বিত করতে কক্সবাজারের ৫ জন তরুণ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হন।

বিষয় : বিএনপি কক্সবাজার আওয়ামী লীগ ক্রসফায়ার গায়েবি মামলা জামায়াত

আপনার মতামত লিখুন

কওমী টাইমস

বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫


কক্সবাজারে সাড়ে ১৫ বছরের দুঃশাসন: গায়েবি মামলা, ক্রসফায়ার ও দখলবাজির আতঙ্ক

প্রকাশের তারিখ : ০৪ অক্টোবর ২০২৫

featured Image

সাড়ে ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে কক্সবাজার ছিল ক্রসফায়ার, গায়েবি মামলা, খুন-গুম ও দখলবাজির অন্ধকার অধ্যায়ের শিকার। ওসি প্রদীপের হাতে শতাধিক মানুষ ক্রসফায়ারে নিহত হন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হয় শত শত গায়েবি মামলা। জেলা জুড়ে আওয়ামী প্রভাবশালী নেতাদের হাতে দখল হয় চিংড়িঘের, ব্যবসা ও জমি।

আতঙ্কের নাম ‘ক্রসফায়ার’ ও ওসি প্রদীপ

টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ মাদকবিরোধী অভিযানের নামে ক্রসফায়ারকে রুটিনে পরিণত করেন। জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, কক্সবাজারে ২৫০ জনের বেশি মানুষ ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ২০৪ জন টেকনাফেই। ভুক্তভোগীদের পরিবার জানিয়েছে, ‘ক্রসফায়ার থেকে বাঁচাতে’ প্রদীপের দলে লাখ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হতো। সাবেক কাউন্সিলর একরামুল হক ও সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহার হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে আলোড়ন তোলে।

গায়েবি মামলা ও গ্রেপ্তারের আতঙ্ক

দলীয় সূত্র অনুযায়ী, সাড়ে ১৫ বছরে জেলায় বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে ৯০০-র বেশি গায়েবি মামলা হয়েছে, আসামি করা হয় প্রায় ২৫ হাজার নেতাকর্মীকে। অনেককে দিনের পর দিন গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাড়ি ছাড়া থাকতে হয়েছে।

বিএনপি-জামায়াতের ২১ নেতাকর্মী খুন আওয়ামী লীগের শাসনামলে কক্সবাজারে বিএনপির ৭ এবং জামায়াতের ১৪ নেতাকর্মী খুন হন। ২০১৩ সালে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়ের প্রতিবাদে মিছিলে পুলিশের গুলিতে জামায়াতের ৫ জন কর্মী নিহত হন।

প্রভাবশালী নেতাদের দখলবাজি

জাফর আলম (চকরিয়া-পেকুয়া আসন): হাজার হাজার একর চিংড়িঘের দখলের অভিযোগ।
আবদুর রহমান বদি (উখিয়া-টেকনাফ): ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, স্থলবন্দরসহ সবকিছুতে একচেটিয়া আধিপত্য।
মুজিবুর রহমান (পৌরসভা): কক্সবাজার শহরকেন্দ্রিক ব্যবসা দখল।
আশেক উল্লাহ রফিক ও মকছুদ মিয়া (মহেশখালী): চিংড়িঘের ও লবণ মাঠের নিয়ন্ত্রণ।
সমুদ্রসৈকতের জমি দখল করে তৈরি ‘ড্রাগন মার্কেট’ আওয়ামী দখলবাজির অন্যতম উদাহরণ হিসেবে রয়ে গেছে।

গুমের ঘটনা

২০১৫ সালে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ নিখোঁজ হয়ে ভারতের শিলংয়ে গিয়ে পাওয়া যান এবং দীর্ঘ ৯ বছর নির্বাসনে থাকতে হয়। টেকনাফের মোস্তাক আহমদও গুম হয়ে ফেরেননি।

জুলাই আন্দোলনে ৫ শহীদ
শেখ হাসিনা সরকারের পতন ত্বরান্বিত করতে কক্সবাজারের ৫ জন তরুণ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হন।


কওমী টাইমস

সম্পাদক ও প্রকাশক : মুস্তাইন বিল্লাহ
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত