দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ এবং বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ায় অবশেষে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দেশের ভাগ্য নির্ধারণে প্রথম পিপলস অ্যাসেম্বলি (জনগণের পরিষদ) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সুওয়াইদা, রাকা এবং হাসাকা প্রদেশ বাদে ১১টি প্রদেশে ৫০টি নির্বাচনী এলাকায় এই গুরুত্বপূর্ণ ভোটগ্রহণ চলছে। মোট ১৫৭৪ জন প্রার্থী ২১টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই নির্বাচনকে সিরিয়ার গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে দেশটির জনগণ ও আন্তর্জাতিক মহল।
উচ্চ নির্বাচন কমিটির তত্ত্বাবধানে এই নির্বাচন পরিচালিত হচ্ছে। রাকা, সুওয়াইদা এবং হাসাকা প্রদেশে আসন সংখ্যা সংরক্ষিত রেখে বাকি ১১টি প্রদেশের ৫০টি আসনে নির্বাচন চলছে। সকাল ০৯:০০টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয় এবং কিছু অঞ্চলে দুপুর ১২:০০টায় শেষ হলেও অনেক অঞ্চলে ১৬:০০টা পর্যন্ত চলার কথা রয়েছে। দামেস্কের ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচন প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণে ছিলেন ফিলিস্তিন ও ইয়েমেনের রাষ্ট্রদূত এবং তুরস্কের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বুরহান কোরোগলু। গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে প্রত্যেকটি কেন্দ্রে রয়েছে গোপন ব্যালট বুথ এবং নির্বাচন কমিশন কঠোরভাবে ভোট বাক্স তদারকি করছে।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমদ শারা নির্বাচন কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, দেশের এই নাজুক পরিস্থিতিতে এমন একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি উল্লেখ করেন, "সিরিয়ার অগ্রগতি কোনো একক ব্যক্তির কাজ নয়, এটা সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল।" প্রেসিডেন্ট শারা আরও বলেন যে বহু গুরুত্বপূর্ণ আইন ও বাজেট প্রস্তাবনা স্থগিত থাকায় সেগুলোর অনুমোদনের জন্য জনগণের পরিষদে নির্বাচিত সদস্যদের প্রয়োজন। তিনি নতুন সদস্যদের ওপর আইনের বাস্তবায়ন এবং সরকারের তদারকির মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পিত হবে বলেও জানান।
তুরস্কের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বুরহান কোরোগলু এই নির্বাচনকে সিরিয়ার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি "খুব গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ" হিসেবে অভিহিত করেন। আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান যে নির্বাচন কেন্দ্রগুলোর পরিবেশ অত্যন্ত ইতিবাচক এবং প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠুভাবে চলছে বলে প্রতীয়মান। আসাদ সরকারের পতনের পর এই নির্বাচনকে তিনি বিশেষভাবে অর্থবহ বলে উল্লেখ করেন এবং সিরিয়ার জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে ভবিষ্যতের জন্য আরও গণতান্ত্রিক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রত্যাশা করেন।
নির্বাচন কমিশনের প্রধান মুহাম্মদ তাহা আল-আহমদ নিশ্চিত করেছেন যে নির্বাচন পর্যবেক্ষক এবং সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতেই স্বচ্ছতার সঙ্গে ভোট গণনা করা হবে। কোনো বর্ধিত সময় ঘোষণা না করা হলে ভোটদানের পরপরই গণনা শুরু হবে। প্রাথমিক ফলাফল পর্যায়ক্রমে দিনের মধ্যেই গণমাধ্যমে প্রকাশ হতে পারে এবং আগামীকাল ও ৭ অক্টোবর চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার কথা রয়েছে।
নবগঠিত পিপলস অ্যাসেম্বলি মোট ২১০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে। এর মধ্যে ১৪০ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন সাধারণ ভোটাভুটির মাধ্যমে এবং বাকি ৭০ জন সদস্যকে সরাসরি প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দেবেন। এই পরিষদ সংবিধান ও আইন প্রণয়নের পাশাপাশি নতুন সরকারের কর্মকাণ্ড তদারকিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বিষয় : সিরিয়া

রোববার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ০৫ অক্টোবর ২০২৫
দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ এবং বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ায় অবশেষে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দেশের ভাগ্য নির্ধারণে প্রথম পিপলস অ্যাসেম্বলি (জনগণের পরিষদ) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সুওয়াইদা, রাকা এবং হাসাকা প্রদেশ বাদে ১১টি প্রদেশে ৫০টি নির্বাচনী এলাকায় এই গুরুত্বপূর্ণ ভোটগ্রহণ চলছে। মোট ১৫৭৪ জন প্রার্থী ২১টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই নির্বাচনকে সিরিয়ার গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে দেশটির জনগণ ও আন্তর্জাতিক মহল।
উচ্চ নির্বাচন কমিটির তত্ত্বাবধানে এই নির্বাচন পরিচালিত হচ্ছে। রাকা, সুওয়াইদা এবং হাসাকা প্রদেশে আসন সংখ্যা সংরক্ষিত রেখে বাকি ১১টি প্রদেশের ৫০টি আসনে নির্বাচন চলছে। সকাল ০৯:০০টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয় এবং কিছু অঞ্চলে দুপুর ১২:০০টায় শেষ হলেও অনেক অঞ্চলে ১৬:০০টা পর্যন্ত চলার কথা রয়েছে। দামেস্কের ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচন প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণে ছিলেন ফিলিস্তিন ও ইয়েমেনের রাষ্ট্রদূত এবং তুরস্কের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বুরহান কোরোগলু। গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে প্রত্যেকটি কেন্দ্রে রয়েছে গোপন ব্যালট বুথ এবং নির্বাচন কমিশন কঠোরভাবে ভোট বাক্স তদারকি করছে।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমদ শারা নির্বাচন কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, দেশের এই নাজুক পরিস্থিতিতে এমন একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি উল্লেখ করেন, "সিরিয়ার অগ্রগতি কোনো একক ব্যক্তির কাজ নয়, এটা সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল।" প্রেসিডেন্ট শারা আরও বলেন যে বহু গুরুত্বপূর্ণ আইন ও বাজেট প্রস্তাবনা স্থগিত থাকায় সেগুলোর অনুমোদনের জন্য জনগণের পরিষদে নির্বাচিত সদস্যদের প্রয়োজন। তিনি নতুন সদস্যদের ওপর আইনের বাস্তবায়ন এবং সরকারের তদারকির মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পিত হবে বলেও জানান।
তুরস্কের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বুরহান কোরোগলু এই নির্বাচনকে সিরিয়ার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি "খুব গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ" হিসেবে অভিহিত করেন। আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান যে নির্বাচন কেন্দ্রগুলোর পরিবেশ অত্যন্ত ইতিবাচক এবং প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠুভাবে চলছে বলে প্রতীয়মান। আসাদ সরকারের পতনের পর এই নির্বাচনকে তিনি বিশেষভাবে অর্থবহ বলে উল্লেখ করেন এবং সিরিয়ার জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে ভবিষ্যতের জন্য আরও গণতান্ত্রিক ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রত্যাশা করেন।
নির্বাচন কমিশনের প্রধান মুহাম্মদ তাহা আল-আহমদ নিশ্চিত করেছেন যে নির্বাচন পর্যবেক্ষক এবং সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতেই স্বচ্ছতার সঙ্গে ভোট গণনা করা হবে। কোনো বর্ধিত সময় ঘোষণা না করা হলে ভোটদানের পরপরই গণনা শুরু হবে। প্রাথমিক ফলাফল পর্যায়ক্রমে দিনের মধ্যেই গণমাধ্যমে প্রকাশ হতে পারে এবং আগামীকাল ও ৭ অক্টোবর চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার কথা রয়েছে।
নবগঠিত পিপলস অ্যাসেম্বলি মোট ২১০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে। এর মধ্যে ১৪০ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন সাধারণ ভোটাভুটির মাধ্যমে এবং বাকি ৭০ জন সদস্যকে সরাসরি প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দেবেন। এই পরিষদ সংবিধান ও আইন প্রণয়নের পাশাপাশি নতুন সরকারের কর্মকাণ্ড তদারকিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

আপনার মতামত লিখুন