বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (PR) মাধ্যমে দেশে নির্বাচন করা হলে মনোনয়ন বাণিজ্য ও কালো টাকার প্রভাব থাকবে না। তিনি দাবি করেন, জবাবদিহিতামূলক শাসন ব্যবস্থা এবং জনগণের কাঙ্ক্ষিত প্রতিনিধি নির্বাচন করার জন্য এই পদ্ধতিই একমাত্র উপায়। সব রাজনৈতিক দল একমত হলে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন করা সম্ভব বলে তিনি উল্লেখ করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি প্রয়াত বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার কারণেই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা আয়োজিত "রুখে দাঁড়াও ভারতীয় আধিপত্যবাদ: শহীদ আবরার ফাহাদ দিবস" শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এই মন্তব্য করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবস্থ আব্দুস সালাম হলে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বিশ্বে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন করার ছয়টি প্রক্রিয়া বিদ্যমান। যদি দেশের সব রাজনৈতিক দল একমত হতে পারে, তবে এই পদ্ধতির মাধ্যমে একটি স্বচ্ছ নির্বাচন সম্ভব। তিনি এই নির্বাচন ব্যবস্থার সুফল হিসেবে মনোনয়ন বাণিজ্যের অবসান এবং কালো টাকার প্রভাবমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা জোর দিয়ে বলেন।
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য একটি নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অপরিহার্য। তিনি বলেন, বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামোকে বদলে দিয়ে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে নতুন একটি রাষ্ট্র কাঠামো গঠন করতে হবে। এই সংস্কারের মধ্য দিয়ে এমন একটি রাষ্ট্রযন্ত্র তৈরি হবে, যেখানে নতুন করে আর কোনো ফ্যাসিস্টের জন্ম হবে না।
আসন্ন নির্বাচনে ইসলামী শক্তি ও দেশপ্রেমিক শক্তির মধ্যে যে সমঝোতার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, কোনো আধিপত্যবাদী শক্তি যেন সেই ঐক্যের পথে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে, সেদিকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি, ভারতের সঙ্গে সমতার ভিত্তিতে ও ন্যায্যতার মাধ্যমে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ব্যবস্থা করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, আবরার নিয়মিত নামাজের জন্য শিক্ষার্থীদের ডাকতেন। তিনি ফেসবুকে ভারতের সঙ্গে সরকারের অবৈধ চুক্তির প্রতিবাদে স্ট্যাটাস দেওয়ায় বুয়েটের ছাত্রলীগের খুনিরা তাকে শিবির সন্দেহে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, মৃত্যুর আগে পানি চাইলেও খুনিরা তাকে পানি পর্যন্ত দেয়নি। তিনি এই ঘটনাকে 'গণহত্যা' হিসেবে অভিহিত করেন এবং আবরার ফাহাদকে দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে ভারতীয় আধিপত্যবাদকে মেনে না নেওয়ার প্রেরণা হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি পুরান ঢাকায় শিবির সন্দেহে বিশ্বজিৎকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাও উল্লেখ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে জাগপার সহসভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান আবরার ফাহাদের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ছয় বছর আগে ছাত্রলীগের নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন এই ছাত্র। ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া এবং ইসলামের পক্ষে ডাকাই ছিল আবরারের 'অপরাধ'। তিনি দাবি করেন, শেখ হাসিনার নির্দেশে ভারতকে খুশি করার জন্য আবরারকে হত্যা করা হয়েছিল।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলামী পার্টি, এবং জাগপা’র বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
বিষয় : শহীদ আবরার

রোববার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ০৬ অক্টোবর ২০২৫
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (PR) মাধ্যমে দেশে নির্বাচন করা হলে মনোনয়ন বাণিজ্য ও কালো টাকার প্রভাব থাকবে না। তিনি দাবি করেন, জবাবদিহিতামূলক শাসন ব্যবস্থা এবং জনগণের কাঙ্ক্ষিত প্রতিনিধি নির্বাচন করার জন্য এই পদ্ধতিই একমাত্র উপায়। সব রাজনৈতিক দল একমত হলে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন করা সম্ভব বলে তিনি উল্লেখ করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি প্রয়াত বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার কারণেই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা আয়োজিত "রুখে দাঁড়াও ভারতীয় আধিপত্যবাদ: শহীদ আবরার ফাহাদ দিবস" শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এই মন্তব্য করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবস্থ আব্দুস সালাম হলে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বিশ্বে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন করার ছয়টি প্রক্রিয়া বিদ্যমান। যদি দেশের সব রাজনৈতিক দল একমত হতে পারে, তবে এই পদ্ধতির মাধ্যমে একটি স্বচ্ছ নির্বাচন সম্ভব। তিনি এই নির্বাচন ব্যবস্থার সুফল হিসেবে মনোনয়ন বাণিজ্যের অবসান এবং কালো টাকার প্রভাবমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা জোর দিয়ে বলেন।
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য একটি নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অপরিহার্য। তিনি বলেন, বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামোকে বদলে দিয়ে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে নতুন একটি রাষ্ট্র কাঠামো গঠন করতে হবে। এই সংস্কারের মধ্য দিয়ে এমন একটি রাষ্ট্রযন্ত্র তৈরি হবে, যেখানে নতুন করে আর কোনো ফ্যাসিস্টের জন্ম হবে না।
আসন্ন নির্বাচনে ইসলামী শক্তি ও দেশপ্রেমিক শক্তির মধ্যে যে সমঝোতার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, কোনো আধিপত্যবাদী শক্তি যেন সেই ঐক্যের পথে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে, সেদিকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি, ভারতের সঙ্গে সমতার ভিত্তিতে ও ন্যায্যতার মাধ্যমে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ব্যবস্থা করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, আবরার নিয়মিত নামাজের জন্য শিক্ষার্থীদের ডাকতেন। তিনি ফেসবুকে ভারতের সঙ্গে সরকারের অবৈধ চুক্তির প্রতিবাদে স্ট্যাটাস দেওয়ায় বুয়েটের ছাত্রলীগের খুনিরা তাকে শিবির সন্দেহে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, মৃত্যুর আগে পানি চাইলেও খুনিরা তাকে পানি পর্যন্ত দেয়নি। তিনি এই ঘটনাকে 'গণহত্যা' হিসেবে অভিহিত করেন এবং আবরার ফাহাদকে দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে ভারতীয় আধিপত্যবাদকে মেনে না নেওয়ার প্রেরণা হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি পুরান ঢাকায় শিবির সন্দেহে বিশ্বজিৎকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাও উল্লেখ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে জাগপার সহসভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান আবরার ফাহাদের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ছয় বছর আগে ছাত্রলীগের নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন এই ছাত্র। ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া এবং ইসলামের পক্ষে ডাকাই ছিল আবরারের 'অপরাধ'। তিনি দাবি করেন, শেখ হাসিনার নির্দেশে ভারতকে খুশি করার জন্য আবরারকে হত্যা করা হয়েছিল।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলামী পার্টি, এবং জাগপা’র বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

আপনার মতামত লিখুন