ঢাকা    বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
ঢাকা    বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
কওমী টাইমস

ঝুঁকিতে আল-আকসা: ইসরায়েলি সুড়ঙ্গ খননে ধসের আশঙ্কা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের


কওমী টাইমস ডেস্ক
কওমী টাইমস ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২৫ | প্রিন্ট সংস্করণ

ঝুঁকিতে আল-আকসা: ইসরায়েলি সুড়ঙ্গ খননে ধসের আশঙ্কা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের

জেরুজালেমের (আল-কুদস) ঐতিহাসিক আল-আকসা মসজিদ এবং শহরের পুরনো অংশের নিচে ইসরায়েলের অব্যাহত সুড়ঙ্গ খনন কার্যক্রম চরম ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। জেরুজালেম গভর্নরেট (محافظة القدس) সতর্ক করে দিয়েছে যে এই কার্যকলাপ মসজিদের স্থিতিশীলতা এবং ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলির জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি করছে, যা যেকোনো মুহূর্তে কাঠামোগত ধসের কারণ হতে পারে। এই সুড়ঙ্গগুলি মূলত ফিলিস্তিনি পরিচিতি মুছে দিয়ে জেরুজালেমকে ইহুদিকরণের একটি ব্যাপক পরিকল্পনার অংশ বলে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ মনে করছে।

জেরুজালেম গভর্নরেটের উপদেষ্টা, মারুফ আল-রিফাই, ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা "ওয়াফা" (Wafaa)-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলি খনন কাজগুলির বিপদ তুলে ধরেছেন। তিনি জানান, আল-আকসা মসজিদের নিচ দিয়ে নতুন-পুরনো এই খনন কাজগুলি চলছে, যার মূল লক্ষ্য হলো একাধিক ঔপনিবেশিক স্থানকে সুড়ঙ্গ জালিকা (Network of Tunnels)-এর মাধ্যমে সংযুক্ত করা। তার মতে, এটি আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক বিধিনিষেধের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

আল-রিফাই আরও ব্যাখ্যা করেন যে এই সুড়ঙ্গগুলি তথাকথিত "দাউদের শহর" (City of David) এলাকা থেকে শুরু হয়ে পাথরের দেয়াল দিয়ে তৈরি পথ ধরে বিস্তৃত হচ্ছে। তার অভিযোগ, এই সুড়ঙ্গগুলোর বেশিরভাগই ছিল ঐতিহাসিক জলপথ, যা শুকিয়ে এখন সুড়ঙ্গ, জাদুঘর ও সিনাগগে (ইহুদি উপাসনালয়) রূপান্তরিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, "সুক আল-জাব্বানা" (Souk Al-Jabbana) নামে পরিচিত একটি ঐতিহাসিক সুড়ঙ্গ পথকে পর্যটন রুটে পরিণত করা হয়েছে, যা সরাসরি আল-আকসা মসজিদের ভিত্তিমূলে চাপ সৃষ্টি করছে।

গভর্নরেট উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, এই খনন আল-আকসার নিচের মাটি এবং তার ভিত্তিপ্রস্তরকে প্রভাবিত করছে, যা মসজিদের স্থাপত্যের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এর ফলে কেবল মসজিদই নয়, বেশ কিছু ফিলিস্তিনি ঐতিহাসিক নিদর্শন, যেমন— পুরনো বাড়িঘর ও ঐতিহ্যবাহী স্কুলও ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হতে পারে।

রিফাইয়ের মতে, এই কর্মকাণ্ড একটি সুসংগঠিত ইসরায়েলি নীতির অংশ, যার মাধ্যমে জেরুজালেমের পবিত্র স্থানগুলির ওপর দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে এবং শহর থেকে ফিলিস্তিনি পরিচিতি মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে। তার দাবি, ইসরায়েল ধর্মীয় স্থান, বিশেষত আল-আকসার দেয়াল এবং সংলগ্ন এলাকা লক্ষ্য করে খনন করছে, যাতে তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা যায়। তিনি উল্লেখ করেন, ইসরায়েল বিদ্যমান স্থাপনাগুলি ভেঙে দিচ্ছে এবং ঐতিহাসিক স্থানগুলির চেহারা পাল্টে দিচ্ছে, যাতে তা তাদের নিজস্ব বাইবেলীয় বর্ণনার সঙ্গে মানানসই হয়।

আল-রিফাই আরও জানান, এই সুড়ঙ্গ খনন কাজগুলি আন্তর্জাতিক নজরদারি থেকে দূরে, গোপন বা আধা-গোপনভাবে চালানো হচ্ছে, যা এর বিপদ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এটি আল-আকসার ঐতিহাসিক ভিত্তিকে সরাসরি হুমকির মুখে ফেলছে এবং পুরো জেরুজালেমকে 'ইহুদি শহর' প্রমাণের তাদের ইহুদিকরণ এজেন্ডা সফল করার চেষ্টা করছে।

বিষয় : ফিলিস্তিন

আপনার মতামত লিখুন

কওমী টাইমস

বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫


ঝুঁকিতে আল-আকসা: ইসরায়েলি সুড়ঙ্গ খননে ধসের আশঙ্কা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের

প্রকাশের তারিখ : ২২ অক্টোবর ২০২৫

featured Image

জেরুজালেমের (আল-কুদস) ঐতিহাসিক আল-আকসা মসজিদ এবং শহরের পুরনো অংশের নিচে ইসরায়েলের অব্যাহত সুড়ঙ্গ খনন কার্যক্রম চরম ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। জেরুজালেম গভর্নরেট (محافظة القدس) সতর্ক করে দিয়েছে যে এই কার্যকলাপ মসজিদের স্থিতিশীলতা এবং ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলির জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি করছে, যা যেকোনো মুহূর্তে কাঠামোগত ধসের কারণ হতে পারে। এই সুড়ঙ্গগুলি মূলত ফিলিস্তিনি পরিচিতি মুছে দিয়ে জেরুজালেমকে ইহুদিকরণের একটি ব্যাপক পরিকল্পনার অংশ বলে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ মনে করছে।

জেরুজালেম গভর্নরেটের উপদেষ্টা, মারুফ আল-রিফাই, ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা "ওয়াফা" (Wafaa)-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলি খনন কাজগুলির বিপদ তুলে ধরেছেন। তিনি জানান, আল-আকসা মসজিদের নিচ দিয়ে নতুন-পুরনো এই খনন কাজগুলি চলছে, যার মূল লক্ষ্য হলো একাধিক ঔপনিবেশিক স্থানকে সুড়ঙ্গ জালিকা (Network of Tunnels)-এর মাধ্যমে সংযুক্ত করা। তার মতে, এটি আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক বিধিনিষেধের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

আল-রিফাই আরও ব্যাখ্যা করেন যে এই সুড়ঙ্গগুলি তথাকথিত "দাউদের শহর" (City of David) এলাকা থেকে শুরু হয়ে পাথরের দেয়াল দিয়ে তৈরি পথ ধরে বিস্তৃত হচ্ছে। তার অভিযোগ, এই সুড়ঙ্গগুলোর বেশিরভাগই ছিল ঐতিহাসিক জলপথ, যা শুকিয়ে এখন সুড়ঙ্গ, জাদুঘর ও সিনাগগে (ইহুদি উপাসনালয়) রূপান্তরিত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, "সুক আল-জাব্বানা" (Souk Al-Jabbana) নামে পরিচিত একটি ঐতিহাসিক সুড়ঙ্গ পথকে পর্যটন রুটে পরিণত করা হয়েছে, যা সরাসরি আল-আকসা মসজিদের ভিত্তিমূলে চাপ সৃষ্টি করছে।

গভর্নরেট উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, এই খনন আল-আকসার নিচের মাটি এবং তার ভিত্তিপ্রস্তরকে প্রভাবিত করছে, যা মসজিদের স্থাপত্যের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এর ফলে কেবল মসজিদই নয়, বেশ কিছু ফিলিস্তিনি ঐতিহাসিক নিদর্শন, যেমন— পুরনো বাড়িঘর ও ঐতিহ্যবাহী স্কুলও ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হতে পারে।

রিফাইয়ের মতে, এই কর্মকাণ্ড একটি সুসংগঠিত ইসরায়েলি নীতির অংশ, যার মাধ্যমে জেরুজালেমের পবিত্র স্থানগুলির ওপর দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে এবং শহর থেকে ফিলিস্তিনি পরিচিতি মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে। তার দাবি, ইসরায়েল ধর্মীয় স্থান, বিশেষত আল-আকসার দেয়াল এবং সংলগ্ন এলাকা লক্ষ্য করে খনন করছে, যাতে তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা যায়। তিনি উল্লেখ করেন, ইসরায়েল বিদ্যমান স্থাপনাগুলি ভেঙে দিচ্ছে এবং ঐতিহাসিক স্থানগুলির চেহারা পাল্টে দিচ্ছে, যাতে তা তাদের নিজস্ব বাইবেলীয় বর্ণনার সঙ্গে মানানসই হয়।

আল-রিফাই আরও জানান, এই সুড়ঙ্গ খনন কাজগুলি আন্তর্জাতিক নজরদারি থেকে দূরে, গোপন বা আধা-গোপনভাবে চালানো হচ্ছে, যা এর বিপদ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এটি আল-আকসার ঐতিহাসিক ভিত্তিকে সরাসরি হুমকির মুখে ফেলছে এবং পুরো জেরুজালেমকে 'ইহুদি শহর' প্রমাণের তাদের ইহুদিকরণ এজেন্ডা সফল করার চেষ্টা করছে।


কওমী টাইমস

সম্পাদক ও প্রকাশক : মুস্তাইন বিল্লাহ
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত