ঢাকা   মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
ঢাকা   মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫
কওমী টাইমস

সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় প্রায় ১০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত; দেশজুড়ে দারিদ্র্য, সংঘাত ও খাদ্যসংকটে পরিস্থিতি আরও জটিল

গভীর মানবিক বিপর্যয়ে দক্ষিণ সুদান: ছয়টি অঙ্গরাজ্য পানির নিচে, সহায়তার অপেক্ষায় ৯৩ লাখ মানুষ


কওমী টাইমস ডেস্ক
কওমী টাইমস ডেস্ক
প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২৫ | প্রিন্ট সংস্করণ

গভীর মানবিক বিপর্যয়ে দক্ষিণ সুদান: ছয়টি অঙ্গরাজ্য পানির নিচে, সহায়তার অপেক্ষায় ৯৩ লাখ মানুষ

বন্যা, সংঘাত, অর্থনৈতিক মন্দা ও দারিদ্র্যের ঘূর্ণাবর্তে নিমজ্জিত দক্ষিণ সুদান এখন সাম্প্রতিক ইতিহাসের ভয়াবহতম মানবিক সংকটে। জাতিসংঘের হিসাবে দেশটির ১ কোটি ৩৪ লাখ জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশ—অর্থাৎ ৯৩ লাখ মানুষ—জীবনরক্ষাকারী সহায়তার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।

দক্ষিণ সুদানে সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া প্রবল বর্ষণ ও নীল নদের প্লাবনে দেশটির ছয়টি অঙ্গরাজ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জাতিসংঘ মানবিক সহায়তা সমন্বয় দপ্তর (OCHA)-এর তথ্যমতে, ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ৯ লাখ ৬০ হাজার মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে—এর মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি শুধু জংগলে ও ইউনিটি প্রদেশে।

বন্যায় অন্তত ১৪৩টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৪৪টি সম্পূর্ণ পানিতে ডুবে গেছে। এতে হাজার হাজার মানুষ প্রাথমিক চিকিৎসা ও জরুরি স্বাস্থ্যসেবার বাইরে রয়েছে। ইউনিটি প্রদেশের লির জেলায় একাই ৬৩ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত ও ২৩ হাজার বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

জাতিসংঘের দক্ষিণ সুদান মানবিক সহায়তা সমন্বয়কারী আনিতা কিকি গবেহো বলেন, “দেশের ছয়টি অঙ্গরাজ্য ভয়াবহভাবে বন্যায় আক্রান্ত। প্রায় ৯৩ লাখ মানুষ এখন মানবিক সহায়তার অপেক্ষায়। অর্থনৈতিক মন্দা, সংঘাত ও জলবায়ু সংকট মিলিয়ে পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল।”

তিনি আরও জানান, দেশে বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ১০০ শতাংশ এবং ৯২ শতাংশ জনগণ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। সংঘাত, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক পতন জনগণের জীবনকে চরম দুর্ভোগে ফেলেছে।

জাতিসংঘ কর্মকর্তার মতে, সরকারের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত সংঘাত বন্ধ করা, সংলাপের মাধ্যমে সমাধান খোঁজা ও জনগণের মৌলিক সেবা নিশ্চিত করা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ সংকটে সরকার ও জনগণের পাশে রয়েছে।

গবেহো বলেন, “সংকটকালে নারীরা

সমাজের মেরুদণ্ডে পরিণত হন। তারা পরিবার সামলান, জীবিকার নতুন পথ খোঁজেন ও সমাজে সংহতি বজায় রাখেন। তাদের সহনশীলতা সত্যিই প্রশংসনীয়।”

তিনি জানান, বন্যায় বহু স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। “শিক্ষা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের পরিবর্তনের চাবিকাঠি। তাই সংঘাত বন্ধ ও শিশুদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।”

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ইতিমধ্যে ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ খাদ্য সহায়তা পেয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা, চিকিৎসা সহায়তা ও কলেরা নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তবুও সীমিত সম্পদ ও দীর্ঘস্থায়ী অর্থনৈতিক সংকটে বিপুল জনগোষ্ঠী এখনো সহায়তার অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছে।

বিষয় : সুদান

আপনার মতামত লিখুন

কওমী টাইমস

মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫


গভীর মানবিক বিপর্যয়ে দক্ষিণ সুদান: ছয়টি অঙ্গরাজ্য পানির নিচে, সহায়তার অপেক্ষায় ৯৩ লাখ মানুষ

প্রকাশের তারিখ : ২৫ অক্টোবর ২০২৫

featured Image

বন্যা, সংঘাত, অর্থনৈতিক মন্দা ও দারিদ্র্যের ঘূর্ণাবর্তে নিমজ্জিত দক্ষিণ সুদান এখন সাম্প্রতিক ইতিহাসের ভয়াবহতম মানবিক সংকটে। জাতিসংঘের হিসাবে দেশটির ১ কোটি ৩৪ লাখ জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশ—অর্থাৎ ৯৩ লাখ মানুষ—জীবনরক্ষাকারী সহায়তার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।

দক্ষিণ সুদানে সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া প্রবল বর্ষণ ও নীল নদের প্লাবনে দেশটির ছয়টি অঙ্গরাজ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জাতিসংঘ মানবিক সহায়তা সমন্বয় দপ্তর (OCHA)-এর তথ্যমতে, ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ৯ লাখ ৬০ হাজার মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে—এর মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি শুধু জংগলে ও ইউনিটি প্রদেশে।

বন্যায় অন্তত ১৪৩টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৪৪টি সম্পূর্ণ পানিতে ডুবে গেছে। এতে হাজার হাজার মানুষ প্রাথমিক চিকিৎসা ও জরুরি স্বাস্থ্যসেবার বাইরে রয়েছে। ইউনিটি প্রদেশের লির জেলায় একাই ৬৩ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত ও ২৩ হাজার বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

জাতিসংঘের দক্ষিণ সুদান মানবিক সহায়তা সমন্বয়কারী আনিতা কিকি গবেহো বলেন, “দেশের ছয়টি অঙ্গরাজ্য ভয়াবহভাবে বন্যায় আক্রান্ত। প্রায় ৯৩ লাখ মানুষ এখন মানবিক সহায়তার অপেক্ষায়। অর্থনৈতিক মন্দা, সংঘাত ও জলবায়ু সংকট মিলিয়ে পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল।”

তিনি আরও জানান, দেশে বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ১০০ শতাংশ এবং ৯২ শতাংশ জনগণ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। সংঘাত, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক পতন জনগণের জীবনকে চরম দুর্ভোগে ফেলেছে।

জাতিসংঘ কর্মকর্তার মতে, সরকারের অগ্রাধিকার হওয়া উচিত সংঘাত বন্ধ করা, সংলাপের মাধ্যমে সমাধান খোঁজা ও জনগণের মৌলিক সেবা নিশ্চিত করা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ সংকটে সরকার ও জনগণের পাশে রয়েছে।

গবেহো বলেন, “সংকটকালে নারীরা

সমাজের মেরুদণ্ডে পরিণত হন। তারা পরিবার সামলান, জীবিকার নতুন পথ খোঁজেন ও সমাজে সংহতি বজায় রাখেন। তাদের সহনশীলতা সত্যিই প্রশংসনীয়।”

তিনি জানান, বন্যায় বহু স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। “শিক্ষা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের পরিবর্তনের চাবিকাঠি। তাই সংঘাত বন্ধ ও শিশুদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।”

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ইতিমধ্যে ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ খাদ্য সহায়তা পেয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা, চিকিৎসা সহায়তা ও কলেরা নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তবুও সীমিত সম্পদ ও দীর্ঘস্থায়ী অর্থনৈতিক সংকটে বিপুল জনগোষ্ঠী এখনো সহায়তার অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছে।


কওমী টাইমস

সম্পাদক ও প্রকাশক : মুস্তাইন বিল্লাহ
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত