প্রায় দুই দশক পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে অনুষ্ঠিত হলো নবম জয়েন্ট ইকোনমিক কমিশন (জেইসি) বৈঠক। দীর্ঘ বিরতির পর এই উচ্চপর্যায়ের অর্থনৈতিক আলোচনা দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। উভয় দেশই পারস্পরিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার এবং আঞ্চলিক উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
প্রায় ২০ বছর পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে অনুষ্ঠিত নবম জয়েন্ট ইকোনমিক কমিশন (জেইসি) বৈঠককে দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে। সর্বশেষ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৫ সালে। এরপর প্রায় দুই দশক বিরতির পর সোমবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের পক্ষে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শরিফা খান, আর পাকিস্তান প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তা। উভয় পক্ষই দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা জোরদারের বিষয়ে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বৈঠকে কৃষি, বাণিজ্য, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, জ্বালানি, বিমান ও সমুদ্র যোগাযোগসহ নানা খাতে সম্ভাব্য সহযোগিতার দিকগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। দুই দেশের কর্মকর্তারা বলেন, এই কমিশনের লক্ষ্য কেবল অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন নয়, বরং জনগণের পারস্পরিক কল্যাণ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়া।
বৈঠকে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো, বেসরকারি বিনিয়োগ উৎসাহিত করা, কৃষি প্রযুক্তি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে যৌথ গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি এবং জ্বালানি খাতে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি খাতে স্টার্টআপ বিনিয়োগ, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন, এবং বাণিজ্যিক সংযোগ বৃদ্ধির বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, দুই দেশের মধ্যে প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে পারস্পরিক বাণিজ্য সহজীকরণ এবং নতুন বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বৈঠকের শেষে উভয় পক্ষই নিয়মিত যোগাযোগ ও অগ্রগতি মূল্যায়নের জন্য পরবর্তী বৈঠক দ্রুত আয়োজনের বিষয়ে সম্মত হয়।
দীর্ঘ বিরতির পর অনুষ্ঠিত এই বৈঠককে বিশ্লেষকরা দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার একটি ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, এটি যদি বাস্তবায়নে রূপ নেয়, তবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
আপনার মতামত লিখুন