ঢাকা   সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫
ঢাকা   সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫
কওমী টাইমস

ইউরোপের নিরাপত্তা কাঠামোর কেন্দ্রে তুরস্ক: ইউরোফাইটার চুক্তিতে নতুন ভূ-রাজনৈতিক অধ্যায়


কওমী টাইমস ডেস্ক
কওমী টাইমস ডেস্ক
প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৫ | প্রিন্ট সংস্করণ

ইউরোপের নিরাপত্তা কাঠামোর কেন্দ্রে তুরস্ক: ইউরোফাইটার চুক্তিতে নতুন ভূ-রাজনৈতিক অধ্যায়

ইউরোপের নিরাপত্তা নীতিতে বড় পরিবর্তন আসছে। ন্যাটোর প্রান্তিক সদস্য থেকে তুরস্ক এখন ইউরোপের যৌথ নিরাপত্তা স্থাপত্যের কেন্দ্রীয় অংশে পরিণত হচ্ছে। ইউরোফাইটার যুদ্ধবিমান বিক্রয়কে ঘিরে ইউরোপ ও তুরস্কের মধ্যে নতুন ভূ-রাজনৈতিক সহযোগিতার যুগ শুরু হয়েছে, যা ইউরোপের নিরাপত্তা কাঠামোর ভবিষ্যৎ পুনর্গঠনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

শনিবার (১ নভেম্বর) তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ জানায়, ইউরোপীয় দেশগুলো এখন তুরস্কের সঙ্গে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ভাগাভাগি এবং যৌথ নিরাপত্তা বলয় গঠনের পরিকল্পনা করছে। যুক্তরাজ্য ও জার্মানি তুরস্ককে ইউরোপের নিরাপত্তা স্থাপত্যের মূল কেন্দ্রে স্থাপন করতে কাজ করছে।

বিশ্বের শক্তির ভারসাম্য দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে তার সামরিক উপস্থিতি সীমিত করছে, অন্যদিকে চীন ও রাশিয়া তাদের প্রভাব বাড়াচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় নেতৃত্ব এখন নিজস্ব প্রতিরক্ষা কাঠামো গড়ে তোলার প্রক্রিয়ায় নেমেছে—যেখানে তুরস্ককে তারা দেখছে এক ধরনের ‘ভূ-রাজনৈতিক বীমা নীতি’ হিসেবে।

তুরস্কের ভৌগোলিক অবস্থান তাকে এক অনন্য কৌশলগত সুবিধা দিয়েছে। ন্যাটোর পূর্ব সীমান্তে রাশিয়ার ভারসাম্য রক্ষাকারী শক্তি হিসেবে এবং দক্ষিণে অভিবাসন ও জ্বালানি রুটের নিয়ন্ত্রক হিসেবে দেশটির ভূমিকা ইউরোপের জন্য ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

সম্প্রতি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এবং জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্জ আঙ্কারা সফর করেছেন। দুই সফরের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল ইউরোফাইটার যুদ্ধবিমান বিক্রয় ও যৌথ প্রতিরক্ষা সহযোগিতা। পর্যবেক্ষকদের মতে, এই চুক্তি কেবল বাণিজ্যিক নয়, বরং ইউরোপ ও তুরস্কের মধ্যে কৌশলগত আস্থার নতুন অধ্যায় সূচনা করছে।

ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ে যুক্তরাজ্য তুরস্কের সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা সহযোগিতা গভীর করছে, অন্যদিকে জার্মানি রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা কমাতে তুরস্কের সঙ্গে নতুন শিল্প ও কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তুলছে।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপের নতুন নিরাপত্তা স্থাপত্যে তুরস্ক এখন আর প্রান্তিক অংশীদার নয়, বরং অপরিহার্য কেন্দ্রবিন্দু। ইউরোফাইটার আলোচনাই সেই পরিবর্তনের প্রতীক, যা ইউরোপকে এক নতুন বাস্তবতায় নিয়ে যাচ্ছে—যেখানে তুরস্ক শুধু প্রতিবেশী নয়, বরং নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার সহ-উৎপাদক।

আপনার মতামত লিখুন

কওমী টাইমস

সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫


ইউরোপের নিরাপত্তা কাঠামোর কেন্দ্রে তুরস্ক: ইউরোফাইটার চুক্তিতে নতুন ভূ-রাজনৈতিক অধ্যায়

প্রকাশের তারিখ : ০২ নভেম্বর ২০২৫

featured Image

ইউরোপের নিরাপত্তা নীতিতে বড় পরিবর্তন আসছে। ন্যাটোর প্রান্তিক সদস্য থেকে তুরস্ক এখন ইউরোপের যৌথ নিরাপত্তা স্থাপত্যের কেন্দ্রীয় অংশে পরিণত হচ্ছে। ইউরোফাইটার যুদ্ধবিমান বিক্রয়কে ঘিরে ইউরোপ ও তুরস্কের মধ্যে নতুন ভূ-রাজনৈতিক সহযোগিতার যুগ শুরু হয়েছে, যা ইউরোপের নিরাপত্তা কাঠামোর ভবিষ্যৎ পুনর্গঠনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

শনিবার (১ নভেম্বর) তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ জানায়, ইউরোপীয় দেশগুলো এখন তুরস্কের সঙ্গে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ভাগাভাগি এবং যৌথ নিরাপত্তা বলয় গঠনের পরিকল্পনা করছে। যুক্তরাজ্য ও জার্মানি তুরস্ককে ইউরোপের নিরাপত্তা স্থাপত্যের মূল কেন্দ্রে স্থাপন করতে কাজ করছে।

বিশ্বের শক্তির ভারসাম্য দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে তার সামরিক উপস্থিতি সীমিত করছে, অন্যদিকে চীন ও রাশিয়া তাদের প্রভাব বাড়াচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় নেতৃত্ব এখন নিজস্ব প্রতিরক্ষা কাঠামো গড়ে তোলার প্রক্রিয়ায় নেমেছে—যেখানে তুরস্ককে তারা দেখছে এক ধরনের ‘ভূ-রাজনৈতিক বীমা নীতি’ হিসেবে।

তুরস্কের ভৌগোলিক অবস্থান তাকে এক অনন্য কৌশলগত সুবিধা দিয়েছে। ন্যাটোর পূর্ব সীমান্তে রাশিয়ার ভারসাম্য রক্ষাকারী শক্তি হিসেবে এবং দক্ষিণে অভিবাসন ও জ্বালানি রুটের নিয়ন্ত্রক হিসেবে দেশটির ভূমিকা ইউরোপের জন্য ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

সম্প্রতি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এবং জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্জ আঙ্কারা সফর করেছেন। দুই সফরের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল ইউরোফাইটার যুদ্ধবিমান বিক্রয় ও যৌথ প্রতিরক্ষা সহযোগিতা। পর্যবেক্ষকদের মতে, এই চুক্তি কেবল বাণিজ্যিক নয়, বরং ইউরোপ ও তুরস্কের মধ্যে কৌশলগত আস্থার নতুন অধ্যায় সূচনা করছে।

ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ে যুক্তরাজ্য তুরস্কের সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা সহযোগিতা গভীর করছে, অন্যদিকে জার্মানি রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা কমাতে তুরস্কের সঙ্গে নতুন শিল্প ও কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তুলছে।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপের নতুন নিরাপত্তা স্থাপত্যে তুরস্ক এখন আর প্রান্তিক অংশীদার নয়, বরং অপরিহার্য কেন্দ্রবিন্দু। ইউরোফাইটার আলোচনাই সেই পরিবর্তনের প্রতীক, যা ইউরোপকে এক নতুন বাস্তবতায় নিয়ে যাচ্ছে—যেখানে তুরস্ক শুধু প্রতিবেশী নয়, বরং নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার সহ-উৎপাদক।


কওমী টাইমস

সম্পাদক ও প্রকাশক : মুস্তাইন বিল্লাহ
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত