ঢাকা   সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫
ঢাকা   সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫
কওমী টাইমস

ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ থেকে সরে আসবে না, ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে আলোচনা করবে না - আব্বাস আরাগচি


কওমী টাইমস ডেস্ক
কওমী টাইমস ডেস্ক
প্রকাশ : ০২ নভেম্বর ২০২৫ | প্রিন্ট সংস্করণ

ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ থেকে সরে আসবে না, ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে আলোচনা করবে না - আব্বাস আরাগচি

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, কোনো প্রকার চাপে তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বন্ধ করবে না এবং তাদের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা নিয়েও আলোচনায় যাবে না। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি সংলাপের ইচ্ছা না থাকলেও পরোক্ষ আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন এবং ইসরাইলকে আগ্রাসী হলে কঠোর প্রতিক্রিয়ার সতর্কতা দেন।

আল জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন যে, তেহরান কোনোভাবেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি থেকে সরে আসবে না। তিনি দাবি করেন, “ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, হুমকি, এমনকি যুদ্ধ—কোনো কিছুই সফল হবে না; যুদ্ধ করে তারা যা অর্জন করতে পারেনি, রাজনীতির মাধ্যমেও তা পাবে না।”

আরাগচি স্পষ্ট করেন যে, ইরান পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় ফিরতে প্রস্তুত থাকতে পারে, কিন্তু সমৃদ্ধকরণ বন্ধে রাজি নয়। অর্থাৎ পারস্পরিক কূটনৈতিক আলাপচারিতার সুযোগ থাকলেও তেহরান তার নিজস্ব পারমাণবিক ক্ষমতা ও সম্ভাব্য সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রমের ওপর থেকে কোনো ছাড় স্বীকার করবে না—এটাই তার বক্তব্য।

যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে তার অবস্থানও পরিষ্কার: সরাসরি সংলাপের আগ্রহ নেই, তবে পরোক্ষ (পারোক্ষ) মাধ্যমে চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব—তবে ওয়াশিংটনের শর্তগুলো গ্রহণযোগ্য নয় বলে আরাগচি জানান। এ থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, তেহরান দ্বিপক্ষীয় প্রেক্ষাপটে সরাসরি বসার কথা ভাবছে না, কিন্তু তৃতীয় পক্ষ বা মধ্যস্থতার মাধ্যমে আলোচনার দরজা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে রাখছে না।

আরাগচি আরও জোর দিয়ে বলেন, ইরান কখনই তার ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা নিয়ে কোনো আলোচনা করবে না। তাঁর ভাষ্য, “কোনও যুক্তিসঙ্গত পক্ষই নিরস্ত্র হওয়া মেনে নেবে না”—এখানে তিনি বলছেন যে প্রতিরক্ষা ও আত্মরক্ষার বিষয়টি ইরানের নীতিতে দরকিয়ার মত ভিত্তি।

ইসরাইল নিয়ে আরাগচি আরও সতর্ক করে বলেন, ইসরাইল যদি পুনরায় আগ্রাসী পদক্ষেপ নেয়, তাহলে “আরও একবার পরাজিত হবে” এবং এর ফলাফল ভয়াবহ হবে—তিনি সঙ্গে যোগ করেন যে, ইরান পূর্ব সংঘাতগুলোর শিক্ষা নেয়া রয়েছে এবং সর্বোচ্চ প্রস্তুতিতে আছে। এ কথাগুলো সমুদ্রপারের কূটনৈতিক উত্তেজনা ও ভৌগোলিকভাবে সংবেদনশীল মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিকে আরো তীব্র করেছে।

সামগ্রিকভাবে আরাগচির বক্তব্যগুলো ইরানের কড়া অবস্থান ও প্রতিরক্ষা-স্বতন্ত্রতার উপর জোর দেয়। তিনি নিষেধাজ্ঞা, আন্তঃরাষ্ট্র হুমকি বা সামরিক অপারেশনকে কোনো উপায় বলে দেখতে অস্বীকার করেছেন এবং কূটনৈতিক চাপে তেহরানকে সমর্পণকারি ভাবাটা অগ্রাহ্য করেছেন। একই সঙ্গে পরোক্ষ কূটনীতির মাধ্যমে যে আলোচনার দরজা খোলা আছে—তাও ইঙ্গিত করে যে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র-বান্ধব সমঝোতার চেয়ে জটিলভাবে মধ্যস্থতাকে প্রাধান্য দেয়া হবে।

প্রভাব ও বিশ্লেষণ (সংক্ষেপে):

  • ইরানের দৃঢ় অবস্থান পারমাণবিক কার্যক্রম ও ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে নতুন কূটনৈতিক বাধা তৈরি করবে এবং অঞ্চলে উত্তেজনা বজায় রাখবে।

  • সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র-ইরান আলোচনার অনুপস্থিতি সমাধানকে জটিলতর করে; মধ্যস্বত্বাবলম্বী দেশ বা আন্তর্জাতিক মেকানিজম ছাড়া তাত্ক্ষণিক প্রগতি সম্ভাব্য নয়।

  • ইসরাইলকে ইঙ্গিতমূলক হুশিয়ারি ভবিষ্যতে সীমান্ত-স্তরের প্রতিক্রিয়া বাড়াতে পারে, যা ছোঁয়া-যোগাযোগহীন সংঘর্ষের ঝুঁকি বাড়াবে।

সংবাদটিতে উদ্ধৃত বক্তব্যগুলো আল জাজিরার সাক্ষাৎকার ও তেহরান টাইমসের প্রতিবেদনের উল্লেখযোগ্য অংশকে ভিত্তি করে প্রস্তুত করা হয়েছে।

বিষয় : নিরাপত্তা আন্তর্জাতিক মধ্যপ্রাচ্য পররাষ্ট্রনীতি ইরান পরমাণু

আপনার মতামত লিখুন

কওমী টাইমস

সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫


ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ থেকে সরে আসবে না, ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে আলোচনা করবে না - আব্বাস আরাগচি

প্রকাশের তারিখ : ০২ নভেম্বর ২০২৫

featured Image

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, কোনো প্রকার চাপে তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি বন্ধ করবে না এবং তাদের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা নিয়েও আলোচনায় যাবে না। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি সংলাপের ইচ্ছা না থাকলেও পরোক্ষ আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতা সম্ভব বলে মন্তব্য করেন এবং ইসরাইলকে আগ্রাসী হলে কঠোর প্রতিক্রিয়ার সতর্কতা দেন।

আল জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন যে, তেহরান কোনোভাবেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি থেকে সরে আসবে না। তিনি দাবি করেন, “ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, হুমকি, এমনকি যুদ্ধ—কোনো কিছুই সফল হবে না; যুদ্ধ করে তারা যা অর্জন করতে পারেনি, রাজনীতির মাধ্যমেও তা পাবে না।”

আরাগচি স্পষ্ট করেন যে, ইরান পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় ফিরতে প্রস্তুত থাকতে পারে, কিন্তু সমৃদ্ধকরণ বন্ধে রাজি নয়। অর্থাৎ পারস্পরিক কূটনৈতিক আলাপচারিতার সুযোগ থাকলেও তেহরান তার নিজস্ব পারমাণবিক ক্ষমতা ও সম্ভাব্য সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রমের ওপর থেকে কোনো ছাড় স্বীকার করবে না—এটাই তার বক্তব্য।

যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে তার অবস্থানও পরিষ্কার: সরাসরি সংলাপের আগ্রহ নেই, তবে পরোক্ষ (পারোক্ষ) মাধ্যমে চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব—তবে ওয়াশিংটনের শর্তগুলো গ্রহণযোগ্য নয় বলে আরাগচি জানান। এ থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, তেহরান দ্বিপক্ষীয় প্রেক্ষাপটে সরাসরি বসার কথা ভাবছে না, কিন্তু তৃতীয় পক্ষ বা মধ্যস্থতার মাধ্যমে আলোচনার দরজা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে রাখছে না।

আরাগচি আরও জোর দিয়ে বলেন, ইরান কখনই তার ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা নিয়ে কোনো আলোচনা করবে না। তাঁর ভাষ্য, “কোনও যুক্তিসঙ্গত পক্ষই নিরস্ত্র হওয়া মেনে নেবে না”—এখানে তিনি বলছেন যে প্রতিরক্ষা ও আত্মরক্ষার বিষয়টি ইরানের নীতিতে দরকিয়ার মত ভিত্তি।

ইসরাইল নিয়ে আরাগচি আরও সতর্ক করে বলেন, ইসরাইল যদি পুনরায় আগ্রাসী পদক্ষেপ নেয়, তাহলে “আরও একবার পরাজিত হবে” এবং এর ফলাফল ভয়াবহ হবে—তিনি সঙ্গে যোগ করেন যে, ইরান পূর্ব সংঘাতগুলোর শিক্ষা নেয়া রয়েছে এবং সর্বোচ্চ প্রস্তুতিতে আছে। এ কথাগুলো সমুদ্রপারের কূটনৈতিক উত্তেজনা ও ভৌগোলিকভাবে সংবেদনশীল মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিকে আরো তীব্র করেছে।

সামগ্রিকভাবে আরাগচির বক্তব্যগুলো ইরানের কড়া অবস্থান ও প্রতিরক্ষা-স্বতন্ত্রতার উপর জোর দেয়। তিনি নিষেধাজ্ঞা, আন্তঃরাষ্ট্র হুমকি বা সামরিক অপারেশনকে কোনো উপায় বলে দেখতে অস্বীকার করেছেন এবং কূটনৈতিক চাপে তেহরানকে সমর্পণকারি ভাবাটা অগ্রাহ্য করেছেন। একই সঙ্গে পরোক্ষ কূটনীতির মাধ্যমে যে আলোচনার দরজা খোলা আছে—তাও ইঙ্গিত করে যে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র-বান্ধব সমঝোতার চেয়ে জটিলভাবে মধ্যস্থতাকে প্রাধান্য দেয়া হবে।

প্রভাব ও বিশ্লেষণ (সংক্ষেপে):

  • ইরানের দৃঢ় অবস্থান পারমাণবিক কার্যক্রম ও ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে নতুন কূটনৈতিক বাধা তৈরি করবে এবং অঞ্চলে উত্তেজনা বজায় রাখবে।

  • সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র-ইরান আলোচনার অনুপস্থিতি সমাধানকে জটিলতর করে; মধ্যস্বত্বাবলম্বী দেশ বা আন্তর্জাতিক মেকানিজম ছাড়া তাত্ক্ষণিক প্রগতি সম্ভাব্য নয়।

  • ইসরাইলকে ইঙ্গিতমূলক হুশিয়ারি ভবিষ্যতে সীমান্ত-স্তরের প্রতিক্রিয়া বাড়াতে পারে, যা ছোঁয়া-যোগাযোগহীন সংঘর্ষের ঝুঁকি বাড়াবে।

সংবাদটিতে উদ্ধৃত বক্তব্যগুলো আল জাজিরার সাক্ষাৎকার ও তেহরান টাইমসের প্রতিবেদনের উল্লেখযোগ্য অংশকে ভিত্তি করে প্রস্তুত করা হয়েছে।


কওমী টাইমস

সম্পাদক ও প্রকাশক : মুস্তাইন বিল্লাহ
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত