ঢাকা    রোববার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
ঢাকা    রোববার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
কওমী টাইমস

ভারতের তিন শীর্ষ গণমাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার প্রকাশ

সহিংসতা দমনে ভুল হয়েছে, তবে গুলির নির্দেশ আমি দিইনি: ভারতে আশ্রিত শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার


কওমী টাইমস ডেস্ক
কওমী টাইমস ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৫ | প্রিন্ট সংস্করণ

সহিংসতা দমনে ভুল হয়েছে, তবে গুলির নির্দেশ আমি দিইনি: ভারতে আশ্রিত শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের তিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম—দ্য হিন্দু, হিন্দুস্তান টাইমস ও দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস—কে দেওয়া পৃথক সাক্ষাৎকারে গণঅভ্যুত্থান, নির্বাচন ও তার দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, আন্দোলন দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু ভুল হয়েছিল, তবে তিনি কখনো গুলি চালানোর নির্দেশ দেননি।

দ্য হিন্দু পত্রিকায় প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, “গণঅভ্যুত্থান সামলাতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দিক থেকে ভুল অবশ্যই হয়েছে।” তিনি দাবি করেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ভোট বর্জনের আহ্বান জানাননি; বরং তিনি বলতে চেয়েছিলেন, “যদি আওয়ামী লীগ সমর্থকদের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার সুযোগ না দেওয়া হয়, তাহলে কোটি কোটি ভোটার ভোট দেবে না।”

তিনি আরও বলেন, “যা-ই ঘটুক না কেন, আমাদের প্রচারণা শান্তিপূর্ণ থাকবে। বাংলাদেশে আরেকটি সহিংস অভ্যুত্থান প্রয়োজন নেই।”

হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারতের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে হাসিনা বলেন, “ভারতের জনগণ আমাকে নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ায় আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর এবং ভারতের নির্ভরযোগ্য অংশীদার হতে পারাটা আমাদের গর্ব।”

দলের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা আইনগত, কূটনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব, যাতে জনগণ নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার ফিরে পায়।”

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, “সহিংসতা মোকাবিলায় নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু সদস্য ভুল করেছেন, কিন্তু আমি কখনোই গুলি চালানোর অনুমতি দিইনি।”

তবে গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ভিন্ন তথ্য তুলে ধরেছে। ২০২৪ সালের ১৮ জুলাইয়ের একটি ফোনালাপে, শেখ হাসিনা তার ভাগ্নে ফজলে নূর তাপসকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। হাসিনা বলেছিলেন, “আমার নির্দেশনা দেওয়া আছে। এখন লেথাল ওয়েপন ব্যবহার করবে। যেখানে পাবে, সোজা গুলি করবে।”

অন্যদিকে, দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে আন্তরিকভাবে আগ্রহী। বর্জন ও নিষেধাজ্ঞার এই চক্র ভাঙতে হবে, কারণ এটি সরকারের বৈধতা ক্ষুণ্ণ করে।”

তবে তার সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, বিরোধী দলগুলোকে বাদ দিয়েই নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে তিনি কোটি ভোটারকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছিলেন। এমনকি, ক্ষমতা হারানোর কয়েক দিন আগে তিনি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।

এর আগে ২৯ অক্টোবর রয়টার্স, এএফপি ও দ্য ইন্ডিপেনডেন্টও শেখ হাসিনার লিখিত সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছিল, যেখানে তিনি তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী মন্তব্য করেন।

বিষয় : শেখ হাসিনা

আপনার মতামত লিখুন

কওমী টাইমস

রোববার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫


সহিংসতা দমনে ভুল হয়েছে, তবে গুলির নির্দেশ আমি দিইনি: ভারতে আশ্রিত শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার

প্রকাশের তারিখ : ০৮ নভেম্বর ২০২৫

featured Image

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের তিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম—দ্য হিন্দু, হিন্দুস্তান টাইমস ও দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস—কে দেওয়া পৃথক সাক্ষাৎকারে গণঅভ্যুত্থান, নির্বাচন ও তার দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, আন্দোলন দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু ভুল হয়েছিল, তবে তিনি কখনো গুলি চালানোর নির্দেশ দেননি।

দ্য হিন্দু পত্রিকায় প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, “গণঅভ্যুত্থান সামলাতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দিক থেকে ভুল অবশ্যই হয়েছে।” তিনি দাবি করেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ভোট বর্জনের আহ্বান জানাননি; বরং তিনি বলতে চেয়েছিলেন, “যদি আওয়ামী লীগ সমর্থকদের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার সুযোগ না দেওয়া হয়, তাহলে কোটি কোটি ভোটার ভোট দেবে না।”

তিনি আরও বলেন, “যা-ই ঘটুক না কেন, আমাদের প্রচারণা শান্তিপূর্ণ থাকবে। বাংলাদেশে আরেকটি সহিংস অভ্যুত্থান প্রয়োজন নেই।”

হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারতের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে হাসিনা বলেন, “ভারতের জনগণ আমাকে নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ায় আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর এবং ভারতের নির্ভরযোগ্য অংশীদার হতে পারাটা আমাদের গর্ব।”

দলের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা আইনগত, কূটনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব, যাতে জনগণ নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার ফিরে পায়।”

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, “সহিংসতা মোকাবিলায় নিরাপত্তা বাহিনীর কিছু সদস্য ভুল করেছেন, কিন্তু আমি কখনোই গুলি চালানোর অনুমতি দিইনি।”

তবে গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ভিন্ন তথ্য তুলে ধরেছে। ২০২৪ সালের ১৮ জুলাইয়ের একটি ফোনালাপে, শেখ হাসিনা তার ভাগ্নে ফজলে নূর তাপসকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। হাসিনা বলেছিলেন, “আমার নির্দেশনা দেওয়া আছে। এখন লেথাল ওয়েপন ব্যবহার করবে। যেখানে পাবে, সোজা গুলি করবে।”

অন্যদিকে, দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে আন্তরিকভাবে আগ্রহী। বর্জন ও নিষেধাজ্ঞার এই চক্র ভাঙতে হবে, কারণ এটি সরকারের বৈধতা ক্ষুণ্ণ করে।”

তবে তার সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, বিরোধী দলগুলোকে বাদ দিয়েই নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে তিনি কোটি ভোটারকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছিলেন। এমনকি, ক্ষমতা হারানোর কয়েক দিন আগে তিনি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।

এর আগে ২৯ অক্টোবর রয়টার্স, এএফপি ও দ্য ইন্ডিপেনডেন্টও শেখ হাসিনার লিখিত সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছিল, যেখানে তিনি তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী মন্তব্য করেন।


কওমী টাইমস

সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ মুস্তাইন বিল্লাহ
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত