তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ঐতিহাসিক রায়ে গভীর সন্তোষ প্রকাশ করেছে খেলাফত মজলিস। দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বলছে, এই রায় দেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করেছে। তারা মনে করেন, রাজনৈতিক সহিংসতা ও একদলীয় প্রবণতা রুখে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারই বর্তমান পরিস্থিতিতে একমাত্র কার্যকর পথ।সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সম্প্রতি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের যে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন, তার প্রতি গভীর সন্তোষ প্রকাশ করেছে খেলাফত মজলিস। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো যৌথ বিবৃতিতে দলের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ এবং মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন—এ রায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট নিরসনে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন, ২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধান থেকে বাতিল ঘোষণা করার পর থেকেই রাষ্ট্র পরিচালনায় দলীয় সরকারের একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, গত ৩টি জাতীয় নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে হওয়ায় দেশে “একদলীয় ফ্যাসিবাদী শাসন” দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে এবং বিরোধী দল ও ভিন্নমতের প্রতি দমন-পীড়ন বৃদ্ধি পেয়েছে। দলটির দাবি, গত ১৬ বছর দেশ জুড়ে গুম, নির্যাতন, অপহরণ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকোচনসহ মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রবলভাবে বেড়েছে, যা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জননিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনর্বহালের পক্ষে রায় দেওয়ায় জনগণ স্বস্তি ও আশার বাণী পেয়েছে। খেলাফত মজলিস এই রায়কে “জনগণের বিজয়” হিসেবে অভিহিত করে জানায় যে চতুর্দশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে এ ব্যবস্থা কার্যকর হবে, যা দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।দলটির ভাষায়, ক্ষমতার পালাবদলের সময়ে সংঘাত, সহিংসতা ও অনিয়ম ঠেকাতে এবং একটি অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ছাড়া দেশে বর্তমানে কোনো কার্যকর বিকল্প নেই। খেলাফত মজলিস রায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিচারপতি, আইনজীবী ও সকল সংশ্লিষ্ট পক্ষকে অভিনন্দন জানিয়ে আশা প্রকাশ করেছে—এই রায় দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক ধারা পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথ সুগম করবে।