মধ্যপ্রদেশে মাদ্রাসাকে কেন্দ্র করে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে বিজেপি বিধায়ক রমেশ্বর শর্মার মন্তব্য। তিনি মাদ্রাসাকে “ধর্মান্তর কেন্দ্র” আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যদিকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি) ইতোমধ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে।
মঙ্গলবার ভোপালে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিজেপি বিধায়ক রমেশ্বর শর্মা বলেন, “মাদ্রাসা আর ধর্মান্তর—এ দুটো একে অপরের সঙ্গে যুক্ত। মাদ্রাসা থেকে ধর্মান্তরের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে, যা সরকার বরদাস্ত করবে না।” তিনি জানান, জেলার প্রশাসকদের ইতোমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন মাদ্রাসাগুলোর কার্যক্রম খতিয়ে দেখা হয় এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এই মন্তব্য আসে এনএইচআরসি কর্তৃক শুরু হওয়া এক তদন্তের প্রেক্ষিতে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর কমিশনে জমা দেওয়া এক অভিযোগে বলা হয়, মধ্যপ্রদেশজুড়ে ২৭টি অচিহ্নিত মাদ্রাসায় প্রায় ৫৫৬ হিন্দু শিশুকে ভর্তি করে ইসলাম ধর্মে রূপান্তরের চেষ্টা চলছে। অভিযোগে দাবি করা হয়, শিশুদের ‘শিক্ষার আড়ালে’ উর্দু শিক্ষা দিয়ে ধীরে ধীরে ধর্মান্তরে প্রলুব্ধ করা হচ্ছে।
এনএইচআরসি রাজ্যের শিক্ষা বিভাগের প্রধান সচিবকে বিষয়টি তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে এবং আগামী ১৫ দিনের মধ্যে একটি অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট (এটিআর) দাখিল করতে বলেছে। শর্মা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যারা ধর্মান্তরের পেছনে রয়েছে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। মাওলানা ও মোল্লাদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।”
তবে এই বিতর্ককে শুধুমাত্র একটি তদন্ত নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দেখা হচ্ছে। কারণ, ২০২০ সালে মধ্যপ্রদেশে কার্যকর হয় ভারতের অন্যতম কড়া ধর্মান্তরবিরোধী আইন—‘মধ্যপ্রদেশ ধর্মীয় স্বাধীনতা আইন ২০২১’, যা জনপ্রিয়ভাবে “লাভ জিহাদ আইন” নামে পরিচিত। আইনটি প্রলোভন, জালিয়াতি বা জবরদস্তির মাধ্যমে ধর্মান্তর ঠেকানোর উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হলেও মানবাধিকারকর্মী ও বিরোধীদের অভিযোগ, এই আইন বাস্তবে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর চাপ সৃষ্টি, মাদ্রাসা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের ওপর নজরদারি এবং রাজনৈতিক মেরুকরণে ব্যবহৃত হচ্ছে।
তারা আরও উল্লেখ করেন, আইনটির আওতায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ঘটনা বিরল হলেও অভিযোগ ও তদন্তের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মুসলিম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। ফলে আইনটির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে করছেন অনেকে।
বিষয় : ভারত

মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ০১ অক্টোবর ২০২৫
মধ্যপ্রদেশে মাদ্রাসাকে কেন্দ্র করে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে বিজেপি বিধায়ক রমেশ্বর শর্মার মন্তব্য। তিনি মাদ্রাসাকে “ধর্মান্তর কেন্দ্র” আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যদিকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি) ইতোমধ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে।
মঙ্গলবার ভোপালে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিজেপি বিধায়ক রমেশ্বর শর্মা বলেন, “মাদ্রাসা আর ধর্মান্তর—এ দুটো একে অপরের সঙ্গে যুক্ত। মাদ্রাসা থেকে ধর্মান্তরের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে, যা সরকার বরদাস্ত করবে না।” তিনি জানান, জেলার প্রশাসকদের ইতোমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেন মাদ্রাসাগুলোর কার্যক্রম খতিয়ে দেখা হয় এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এই মন্তব্য আসে এনএইচআরসি কর্তৃক শুরু হওয়া এক তদন্তের প্রেক্ষিতে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর কমিশনে জমা দেওয়া এক অভিযোগে বলা হয়, মধ্যপ্রদেশজুড়ে ২৭টি অচিহ্নিত মাদ্রাসায় প্রায় ৫৫৬ হিন্দু শিশুকে ভর্তি করে ইসলাম ধর্মে রূপান্তরের চেষ্টা চলছে। অভিযোগে দাবি করা হয়, শিশুদের ‘শিক্ষার আড়ালে’ উর্দু শিক্ষা দিয়ে ধীরে ধীরে ধর্মান্তরে প্রলুব্ধ করা হচ্ছে।
এনএইচআরসি রাজ্যের শিক্ষা বিভাগের প্রধান সচিবকে বিষয়টি তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে এবং আগামী ১৫ দিনের মধ্যে একটি অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট (এটিআর) দাখিল করতে বলেছে। শর্মা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যারা ধর্মান্তরের পেছনে রয়েছে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। মাওলানা ও মোল্লাদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।”
তবে এই বিতর্ককে শুধুমাত্র একটি তদন্ত নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দেখা হচ্ছে। কারণ, ২০২০ সালে মধ্যপ্রদেশে কার্যকর হয় ভারতের অন্যতম কড়া ধর্মান্তরবিরোধী আইন—‘মধ্যপ্রদেশ ধর্মীয় স্বাধীনতা আইন ২০২১’, যা জনপ্রিয়ভাবে “লাভ জিহাদ আইন” নামে পরিচিত। আইনটি প্রলোভন, জালিয়াতি বা জবরদস্তির মাধ্যমে ধর্মান্তর ঠেকানোর উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হলেও মানবাধিকারকর্মী ও বিরোধীদের অভিযোগ, এই আইন বাস্তবে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর চাপ সৃষ্টি, মাদ্রাসা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের ওপর নজরদারি এবং রাজনৈতিক মেরুকরণে ব্যবহৃত হচ্ছে।
তারা আরও উল্লেখ করেন, আইনটির আওতায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার ঘটনা বিরল হলেও অভিযোগ ও তদন্তের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মুসলিম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। ফলে আইনটির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে করছেন অনেকে।

আপনার মতামত লিখুন