জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও সংস্কার কার্যক্রমে তার দৃঢ় সমর্থন ও সংহতি ব্যক্ত করেছেন। নিউইয়র্কে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ অঙ্গীকার করেন।
স্থানীয় সময় সোমবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ। আলোচনায় উঠে আসে রাজনৈতিক সংস্কার, আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত নৃশংসতার দায় নিরূপণ, বৈশ্বিক বাণিজ্যে শুল্কনীতি-জনিত সংকট এবং আন্তর্জাতিক রোহিঙ্গা সম্মেলনের প্রস্তুতি।
ড. ইউনূস সংস্কার কর্মসূচি এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে বলেন, “আগামী কয়েক মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন আয়োজনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন।” তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতাচ্যুত শাসকগোষ্ঠী ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে এবং কিছু আন্তর্জাতিক মহল তাদের সমর্থন দিচ্ছে।
গুতেরেস বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বলেন, গত ১৪ মাস ধরে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে কঠিন উত্তরণ প্রক্রিয়াকে তিনি সম্মান ও শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখছেন। তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘের ধারাবাহিক ভূমিকার প্রতিশ্রুতি দেন।
একই দিনে নিউইয়র্কে ড. ইউনূস মানবাধিকার কর্মীদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান কেরি কেনেডির নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় তিনি বলেন, “আমরা চাই ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হোক, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করবে।”
এছাড়া জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে পৃথক বৈঠকে তিনি উল্লেখ করেন, গত ১৮ মাসে দেড় লাখ রোহিঙ্গার আগমন পরিস্থিতিকে ভয়াবহভাবে জটিল করে তুলেছে।
ইউনিসেফ নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেলের সঙ্গেও তার বৈঠক হয়। সেখানে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক কার্যক্রমে তহবিল ঘাটতির বিষয়টি বিশেষভাবে আলোচিত হয়।
জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস স্পষ্ট করেছেন যে, গণতান্ত্রিক উত্তরণ, সংস্কার এবং মানবিক সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সমর্থন দেওয়ার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ অটল থাকবে। ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ও রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ও মানবিক বাস্তবতায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
বিষয় : ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিব

শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ০১ অক্টোবর ২০২৫
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও সংস্কার কার্যক্রমে তার দৃঢ় সমর্থন ও সংহতি ব্যক্ত করেছেন। নিউইয়র্কে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ অঙ্গীকার করেন।
স্থানীয় সময় সোমবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ। আলোচনায় উঠে আসে রাজনৈতিক সংস্কার, আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত নৃশংসতার দায় নিরূপণ, বৈশ্বিক বাণিজ্যে শুল্কনীতি-জনিত সংকট এবং আন্তর্জাতিক রোহিঙ্গা সম্মেলনের প্রস্তুতি।
ড. ইউনূস সংস্কার কর্মসূচি এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে বলেন, “আগামী কয়েক মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন আয়োজনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন।” তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতাচ্যুত শাসকগোষ্ঠী ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে এবং কিছু আন্তর্জাতিক মহল তাদের সমর্থন দিচ্ছে।
গুতেরেস বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বলেন, গত ১৪ মাস ধরে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে কঠিন উত্তরণ প্রক্রিয়াকে তিনি সম্মান ও শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখছেন। তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘের ধারাবাহিক ভূমিকার প্রতিশ্রুতি দেন।
একই দিনে নিউইয়র্কে ড. ইউনূস মানবাধিকার কর্মীদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান কেরি কেনেডির নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় তিনি বলেন, “আমরা চাই ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হোক, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করবে।”
এছাড়া জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে পৃথক বৈঠকে তিনি উল্লেখ করেন, গত ১৮ মাসে দেড় লাখ রোহিঙ্গার আগমন পরিস্থিতিকে ভয়াবহভাবে জটিল করে তুলেছে।
ইউনিসেফ নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেলের সঙ্গেও তার বৈঠক হয়। সেখানে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক কার্যক্রমে তহবিল ঘাটতির বিষয়টি বিশেষভাবে আলোচিত হয়।
জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস স্পষ্ট করেছেন যে, গণতান্ত্রিক উত্তরণ, সংস্কার এবং মানবিক সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সমর্থন দেওয়ার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ অটল থাকবে। ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ও রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ও মানবিক বাস্তবতায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।

আপনার মতামত লিখুন