ঢাকা    মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
ঢাকা    মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
কওমী টাইমস

ইসরায়েলের হামলার পর দোহাকে সুরক্ষা প্রতিশ্রুতি; আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়লেও কাতারকে “অটল মিত্র” আখ্যা দিলেন ট্রাম্প

ইসরায়েলি হামলার পর কাতারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্রাম্পের নতুন আদেশ


কওমী টাইমস ডেস্ক
কওমী টাইমস ডেস্ক
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৫ | প্রিন্ট সংস্করণ

ইসরায়েলি হামলার পর কাতারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্রাম্পের নতুন আদেশ

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাতারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। এতে বলা হয়েছে, কাতারের ওপর কোনো সামরিক হামলা হলে যুক্তরাষ্ট্র তা নিজেদের নিরাপত্তার ওপর হামলা হিসেবে গণ্য করবে এবং প্রয়োজনে প্রতিশোধমূলক সামরিক পদক্ষেপ নেবে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর ইসরায়েল দোহার ওপর বিমান হামলা চালায়, যেখানে হামাস নেতারা যুক্তরাষ্ট্র–মধ্যস্থ একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন। ওই হামলায় কাতারের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা এবং হামাসের কয়েকজন সদস্য নিহত হন। এ ঘটনায় তীব্র আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

পরবর্তীতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুর রহমান আল থানির কাছে ক্ষমা চান। এ ক্ষমা প্রকাশের সময় ট্রাম্পও ওয়াশিংটনে উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প উল্লেখ করেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও কাতার ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা, যৌথ স্বার্থ এবং সামরিক সম্পর্কের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে যুক্ত। কাতার শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির এক অটল মিত্র।”

আদেশে আরও বলা হয়,

“কাতারের ওপর কোনো বিদেশি আগ্রাসনকে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার ওপর হুমকি হিসেবে দেখা হবে এবং প্রয়োজন হলে সামরিক প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।”

ইসরায়েলি হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত কূটনৈতিক সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা চালায়। ১৬ সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও দোহা সফর করেন এবং কাতারের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন।

কাতার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেন, “আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের হামলা ঠেকাতে পদক্ষেপ নেব।”

তবে ট্রাম্পের ঘোষণার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিরক্ষা চুক্তি করতে হলে সিনেটের অনুমোদন প্রয়োজন। অতীতে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করেছিলেন সিনেট ছাড়াই, তবে সামরিক অভিযানের সিদ্ধান্ত চূড়ান্তভাবে প্রেসিডেন্টের হাতেই থাকে।

উল্লেখ্য, কাতার দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহযোগী, যেখানে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের ফরওয়ার্ড অপারেটিং বেস আল উদেইদ এয়ার বেস অবস্থিত। ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কাতারকে “প্রধান নন–ন্যাটো মিত্র” ঘোষণা করেছিলেন।

কুয়েত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ বাদের আল-সাইফ মন্তব্য করেন, “গালফের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব যুক্তরাষ্ট্রকে কাতারের নিরাপত্তায় সরাসরি নিশ্চয়তা দিতে বাধ্য করছে।”

বিষয় : কাতার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

আপনার মতামত লিখুন

কওমী টাইমস

মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫


ইসরায়েলি হামলার পর কাতারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্রাম্পের নতুন আদেশ

প্রকাশের তারিখ : ০১ অক্টোবর ২০২৫

featured Image

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কাতারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। এতে বলা হয়েছে, কাতারের ওপর কোনো সামরিক হামলা হলে যুক্তরাষ্ট্র তা নিজেদের নিরাপত্তার ওপর হামলা হিসেবে গণ্য করবে এবং প্রয়োজনে প্রতিশোধমূলক সামরিক পদক্ষেপ নেবে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর ইসরায়েল দোহার ওপর বিমান হামলা চালায়, যেখানে হামাস নেতারা যুক্তরাষ্ট্র–মধ্যস্থ একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন। ওই হামলায় কাতারের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা এবং হামাসের কয়েকজন সদস্য নিহত হন। এ ঘটনায় তীব্র আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

পরবর্তীতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুর রহমান আল থানির কাছে ক্ষমা চান। এ ক্ষমা প্রকাশের সময় ট্রাম্পও ওয়াশিংটনে উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প উল্লেখ করেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও কাতার ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা, যৌথ স্বার্থ এবং সামরিক সম্পর্কের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে যুক্ত। কাতার শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির এক অটল মিত্র।”

আদেশে আরও বলা হয়,

“কাতারের ওপর কোনো বিদেশি আগ্রাসনকে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার ওপর হুমকি হিসেবে দেখা হবে এবং প্রয়োজন হলে সামরিক প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।”

ইসরায়েলি হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত কূটনৈতিক সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা চালায়। ১৬ সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও দোহা সফর করেন এবং কাতারের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন।

কাতার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেন, “আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের হামলা ঠেকাতে পদক্ষেপ নেব।”

তবে ট্রাম্পের ঘোষণার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিরক্ষা চুক্তি করতে হলে সিনেটের অনুমোদন প্রয়োজন। অতীতে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করেছিলেন সিনেট ছাড়াই, তবে সামরিক অভিযানের সিদ্ধান্ত চূড়ান্তভাবে প্রেসিডেন্টের হাতেই থাকে।

উল্লেখ্য, কাতার দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহযোগী, যেখানে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের ফরওয়ার্ড অপারেটিং বেস আল উদেইদ এয়ার বেস অবস্থিত। ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কাতারকে “প্রধান নন–ন্যাটো মিত্র” ঘোষণা করেছিলেন।

কুয়েত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ বাদের আল-সাইফ মন্তব্য করেন, “গালফের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব যুক্তরাষ্ট্রকে কাতারের নিরাপত্তায় সরাসরি নিশ্চয়তা দিতে বাধ্য করছে।”


কওমী টাইমস

সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ মুস্তাইন বিল্লাহ
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত