ঢাকা    রোববার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
ঢাকা    রোববার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
কওমী টাইমস

প্রত্যাবাসনে মর্যাদা রক্ষার শর্তে কাবুল-ইসলামাবাদ সংলাপের পথ খুলল; আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা চায় আফগানিস্তান

সন্ত্রাস মোকাবিলা ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে: আফগানিস্তানের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাবে পাকিস্তানের অনুমোদন


কওমী টাইমস ডেস্ক
কওমী টাইমস ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৫ | প্রিন্ট সংস্করণ

সন্ত্রাস মোকাবিলা ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে: আফগানিস্তানের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাবে পাকিস্তানের অনুমোদন

আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদার এবং সন্ত্রাসবাদের লাগাম টানতে আফগানিস্তানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার পথ খুলে দিয়েছে পাকিস্তান সরকার। খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুরের উত্থাপিত প্রস্তাবে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার সায় দিয়েছে। তবে, এর পাশাপাশি পাকিস্তানে অবস্থানরত আফগান শরণার্থীদের সসম্মানে ও মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসনের বিষয়টিকেও জোর দেওয়া হয়েছে।

পাকিস্তান সরকার অবশেষে আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন ইসলামিক এমিরেটের (তালিবান) সঙ্গে আলোচনা শুরুর প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে। এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুর, যিনি মনে করেন— সন্ত্রাস মোকাবিলা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা সুসংহত করার জন্য আলোচনার টেবিলে আসাই একমাত্র কার্যকরী পথ।

আলোচনার প্রয়োজনীয়তা

'দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন'-এর সূত্র অনুযায়ী, গান্দাপুর ইসলামিক এমিরেটের সঙ্গে আলোচনাকে সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধের এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদার করার একমাত্র কার্যকর উপায় হিসেবে বর্ণনা করেছেন। পাকিস্তানের পেশোয়ারে জাতীয় নিরাপত্তা ও যুদ্ধ বিষয়ক এক অধিবেশনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, "একটি দীর্ঘমেয়াদী সমাধান অর্জনের জন্য আফগানিস্তানের সাথে সংলাপ অপরিহার্য, এবং আমি আনন্দিত যে ফেডারেল সরকার এ বিষয়ে আমার প্রস্তাবের সাথে একমত হয়েছে।"

শরণার্থী প্রত্যাবাসন ও মর্যাদা

গান্দাপুর এই বিষয়েও জোর দিয়েছেন যে, আফগান শরণার্থীদের তাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনের নীতিতে পাকিস্তান অটল থাকলেও, এই পুরো প্রক্রিয়াটি অবশ্যই মর্যাদার সাথে এবং প্রত্যাবাসনকারীদের প্রতি পূর্ণ সম্মান প্রদর্শন করে সম্পন্ন করতে হবে। এটি পাকিস্তানের মানবিক ও আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতার প্রতি ইঙ্গিত দেয়।

আফগানিস্তানের প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষকদের মত

আলোচনার প্রস্তাব নিয়ে ইসলামিক এমিরেট অব আফগানিস্তান তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে তারা বারবার এই অঞ্চলের, বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলোর স্থিতিশীলতা বজায় রাখার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছে।

আফগান রাজনৈতিক বিশ্লেষক সায়েদ কারিবুল্লাহ সাদাত এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "আফগানিস্তানের জনগণও সংলাপকে স্বাগত জানায়। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে বহু সাধারণ মিল রয়েছে এবং আমরা চাই এই অভিন্ন স্বার্থগুলো বজায় থাকুক। প্রস্তাবটি গান্দাপুর বা অন্য কারও কাছ থেকে আসুক না কেন, আফগানরা তাতে সমর্থন দেবে।"

অন্যদিকে, আরেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক নজিব-উর-রহমান শামাল কিছুটা সংশয় প্রকাশ করেছেন। তার মতে, "যতদিন পর্যন্ত পাকিস্তান আফগানিস্তানের প্রতি তার প্রতিশ্রুতি পূরণ না করবে, সন্ত্রাস দমনে বাস্তব পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হবে এবং আফগান জনগণের সাথে সরাসরি আলোচনা এড়িয়ে যাবে, ততদিন পর্যন্ত দুই দেশের চ্যালেঞ্জগুলোর সমাধান অসম্ভব থেকে যাবে।"

এই উদ্যোগ কাবুল এবং ইসলামাবাদের মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা দুই দেশের স্থিতিশীলতা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হতে পারে।

বিষয় : পাকিস্তান আফগানিস্তান

আপনার মতামত লিখুন

কওমী টাইমস

রোববার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫


সন্ত্রাস মোকাবিলা ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে: আফগানিস্তানের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাবে পাকিস্তানের অনুমোদন

প্রকাশের তারিখ : ০৪ অক্টোবর ২০২৫

featured Image

আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদার এবং সন্ত্রাসবাদের লাগাম টানতে আফগানিস্তানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার পথ খুলে দিয়েছে পাকিস্তান সরকার। খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুরের উত্থাপিত প্রস্তাবে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার সায় দিয়েছে। তবে, এর পাশাপাশি পাকিস্তানে অবস্থানরত আফগান শরণার্থীদের সসম্মানে ও মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসনের বিষয়টিকেও জোর দেওয়া হয়েছে।

পাকিস্তান সরকার অবশেষে আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন ইসলামিক এমিরেটের (তালিবান) সঙ্গে আলোচনা শুরুর প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে। এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুর, যিনি মনে করেন— সন্ত্রাস মোকাবিলা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা সুসংহত করার জন্য আলোচনার টেবিলে আসাই একমাত্র কার্যকরী পথ।

আলোচনার প্রয়োজনীয়তা

'দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন'-এর সূত্র অনুযায়ী, গান্দাপুর ইসলামিক এমিরেটের সঙ্গে আলোচনাকে সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধের এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদার করার একমাত্র কার্যকর উপায় হিসেবে বর্ণনা করেছেন। পাকিস্তানের পেশোয়ারে জাতীয় নিরাপত্তা ও যুদ্ধ বিষয়ক এক অধিবেশনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, "একটি দীর্ঘমেয়াদী সমাধান অর্জনের জন্য আফগানিস্তানের সাথে সংলাপ অপরিহার্য, এবং আমি আনন্দিত যে ফেডারেল সরকার এ বিষয়ে আমার প্রস্তাবের সাথে একমত হয়েছে।"

শরণার্থী প্রত্যাবাসন ও মর্যাদা

গান্দাপুর এই বিষয়েও জোর দিয়েছেন যে, আফগান শরণার্থীদের তাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনের নীতিতে পাকিস্তান অটল থাকলেও, এই পুরো প্রক্রিয়াটি অবশ্যই মর্যাদার সাথে এবং প্রত্যাবাসনকারীদের প্রতি পূর্ণ সম্মান প্রদর্শন করে সম্পন্ন করতে হবে। এটি পাকিস্তানের মানবিক ও আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতার প্রতি ইঙ্গিত দেয়।

আফগানিস্তানের প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষকদের মত

আলোচনার প্রস্তাব নিয়ে ইসলামিক এমিরেট অব আফগানিস্তান তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে তারা বারবার এই অঞ্চলের, বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলোর স্থিতিশীলতা বজায় রাখার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছে।

আফগান রাজনৈতিক বিশ্লেষক সায়েদ কারিবুল্লাহ সাদাত এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "আফগানিস্তানের জনগণও সংলাপকে স্বাগত জানায়। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে বহু সাধারণ মিল রয়েছে এবং আমরা চাই এই অভিন্ন স্বার্থগুলো বজায় থাকুক। প্রস্তাবটি গান্দাপুর বা অন্য কারও কাছ থেকে আসুক না কেন, আফগানরা তাতে সমর্থন দেবে।"

অন্যদিকে, আরেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক নজিব-উর-রহমান শামাল কিছুটা সংশয় প্রকাশ করেছেন। তার মতে, "যতদিন পর্যন্ত পাকিস্তান আফগানিস্তানের প্রতি তার প্রতিশ্রুতি পূরণ না করবে, সন্ত্রাস দমনে বাস্তব পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হবে এবং আফগান জনগণের সাথে সরাসরি আলোচনা এড়িয়ে যাবে, ততদিন পর্যন্ত দুই দেশের চ্যালেঞ্জগুলোর সমাধান অসম্ভব থেকে যাবে।"

এই উদ্যোগ কাবুল এবং ইসলামাবাদের মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা দুই দেশের স্থিতিশীলতা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হতে পারে।


কওমী টাইমস

সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ মুস্তাইন বিল্লাহ
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত