দীর্ঘ পাঁচ দশকের অনানুষ্ঠানিকতার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সাধারণ কর্মী নিয়োগে এক ঐতিহাসিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে সৌদি আরব। সোমবার রিয়াদে অনুষ্ঠিত এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশ-সৌদি আরব কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সাধারণ কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত একটি আনুষ্ঠানিক কাঠামো তৈরি হলো। এই চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের বৃহত্তম শ্রমবাজারে দক্ষ কর্মী নিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি উভয় দেশের কর্মীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে এই গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং সৌদি আরবের পক্ষে মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ বিন সোলাইমান আল-রাজী চুক্তিতে সই করেন। ১৯৭৬ সাল থেকে সৌদি আরবে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ শুরু হলেও, এতদিন সাধারণ কর্মী নিয়োগের কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি ছিল না; কেবল ২০১৫ সালে গৃহকর্মী নিয়োগ এবং ২০২২ সালে দক্ষতা যাচাই সংক্রান্ত দুটি বিশেষ চুক্তি সই হয়েছিল। আজকের এই চুক্তি সেই দীর্ঘদিনের ঘাটতি পূরণ করল।
এই আনুষ্ঠানিক চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে বিভিন্ন পেশায় দক্ষ কর্মী নিয়োগের হার বৃদ্ধি পাবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এই চুক্তির ফলে কর্মী ও নিয়োগকর্তা উভয়ের অধিকার ও স্বার্থ অধিকতর সুরক্ষিত হবে। দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার ক্ষেত্রেও এই চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চুক্তি স্বাক্ষরের আগে সৌদি মন্ত্রী ও উপদেষ্টার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল কর্মীদের কল্যাণের জন্য একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উত্থাপন করেন। তিনি জোর দেন যেন:
নিয়োগ চুক্তিগুলো সঠিক ও স্বচ্ছ হয়।
ইকামা (বসবাসের অনুমতি) নবায়নের দায়িত্ব নিয়োগকর্তা যথাযথভাবে পালন করেন।
দেশে ফেরত যেতে ইচ্ছুক কর্মীরা যেন স্বল্পতম সময়ে এক্সিট ভিসা পেতে পারেন।
জবাবে সৌদি আরবের মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এসব বিষয়ে দ্রুত সমাধানের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। একই সাথে তিনি বাংলাদেশকেও নিরাপদ ও সুষ্ঠু অভিবাসন নিশ্চিতকল্পে প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
এছাড়া বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ বাড়ানো এবং প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণ ও সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দেলওয়ার হোসেন, মিশন উপপ্রধান এস এম নাজমুল হাসান এবং শ্রম কাউন্সেলর মুহাম্মাদ রেজায়ে রাব্বী-সহ উভয় দেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রোববার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ০৬ অক্টোবর ২০২৫
দীর্ঘ পাঁচ দশকের অনানুষ্ঠানিকতার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সাধারণ কর্মী নিয়োগে এক ঐতিহাসিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে সৌদি আরব। সোমবার রিয়াদে অনুষ্ঠিত এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশ-সৌদি আরব কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সাধারণ কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত একটি আনুষ্ঠানিক কাঠামো তৈরি হলো। এই চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের বৃহত্তম শ্রমবাজারে দক্ষ কর্মী নিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি উভয় দেশের কর্মীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে এই গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং সৌদি আরবের পক্ষে মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ বিন সোলাইমান আল-রাজী চুক্তিতে সই করেন। ১৯৭৬ সাল থেকে সৌদি আরবে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ শুরু হলেও, এতদিন সাধারণ কর্মী নিয়োগের কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি ছিল না; কেবল ২০১৫ সালে গৃহকর্মী নিয়োগ এবং ২০২২ সালে দক্ষতা যাচাই সংক্রান্ত দুটি বিশেষ চুক্তি সই হয়েছিল। আজকের এই চুক্তি সেই দীর্ঘদিনের ঘাটতি পূরণ করল।
এই আনুষ্ঠানিক চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে বিভিন্ন পেশায় দক্ষ কর্মী নিয়োগের হার বৃদ্ধি পাবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এই চুক্তির ফলে কর্মী ও নিয়োগকর্তা উভয়ের অধিকার ও স্বার্থ অধিকতর সুরক্ষিত হবে। দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার ক্ষেত্রেও এই চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চুক্তি স্বাক্ষরের আগে সৌদি মন্ত্রী ও উপদেষ্টার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল কর্মীদের কল্যাণের জন্য একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উত্থাপন করেন। তিনি জোর দেন যেন:
নিয়োগ চুক্তিগুলো সঠিক ও স্বচ্ছ হয়।
ইকামা (বসবাসের অনুমতি) নবায়নের দায়িত্ব নিয়োগকর্তা যথাযথভাবে পালন করেন।
দেশে ফেরত যেতে ইচ্ছুক কর্মীরা যেন স্বল্পতম সময়ে এক্সিট ভিসা পেতে পারেন।
জবাবে সৌদি আরবের মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এসব বিষয়ে দ্রুত সমাধানের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। একই সাথে তিনি বাংলাদেশকেও নিরাপদ ও সুষ্ঠু অভিবাসন নিশ্চিতকল্পে প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
এছাড়া বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ বাড়ানো এবং প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণ ও সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দেলওয়ার হোসেন, মিশন উপপ্রধান এস এম নাজমুল হাসান এবং শ্রম কাউন্সেলর মুহাম্মাদ রেজায়ে রাব্বী-সহ উভয় দেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন