ঢাকা    বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
ঢাকা    বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
কওমী টাইমস

ধর্ষণের চিৎকার চাপা দিতে রেস্তোরাঁয় উচ্চস্বরে গান

মাদ্রাসাছাত্রীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ; আটক ২


কওমী টাইমস ডেস্ক
কওমী টাইমস ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২৫ | প্রিন্ট সংস্করণ

মাদ্রাসাছাত্রীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ; আটক ২

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে এক বীভৎস ধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে ১৪ বছর বয়সী এক মাদ্রাসাছাত্রীকে রাস্তা থেকে জোর করে তুলে নিয়ে একটি রেস্তোরাঁর ভেতরে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর দিক হলো, ধর্ষণের শিকার কিশোরীর আর্তনাদ চাপা দিতে রেস্তোরাঁর অভ্যন্তরে সাউন্ডবক্সে উচ্চস্বরে গান বাজানো হয়। এই লোমহর্ষক ঘটনায় মূল অভিযুক্তসহ মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার, যাদের মধ্যে ইতোমধ্যে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।

কামারখন্দ উপজেলার একটি দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রী গত রবিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে এই ভয়াবহ ঘটনার শিকার হয়। মামলার এজাহার অনুযায়ী, নাইম হোসেন (২০) ও তার সহযোগীরা কিশোরীকে রাস্তা থেকে জোরপূর্বক একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নেয়। এরপর তারা তাকে স্থানীয় 'ডেরা ফাস্টফুড অ্যান্ড চায়নিজ রেস্টুরেন্টে' নিয়ে যায়।

রেস্তোরাঁর ভেতরে নাইম তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। এসময় বাইরে অপেক্ষমাণ ইমরান (২১), আকাশ (২১), আতিক (২৩), নাছিম উদ্দিন (২০) ও নাজমুল হক নয়ন (২০) নামে পাঁচ সহযোগী ফটকে পাহারা দেয়। শুধু তাই নয়, ধর্ষণের সময় কিশোরীর চিৎকার যেন বাইরে না আসে, সেজন্য তারা পরিকল্পিতভাবে রেস্টুরেন্টের সাউন্ডবক্সে সর্বোচ্চ ভলিউমে গান বাজিয়ে দেয়। এই ঘটনা সমাজের নিরাপত্তা ও তরুণ সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে।

মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর তার পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে এক অচেনা ব্যক্তির ফোন মারফত তারা জানতে পারেন, অসুস্থ অবস্থায় মেয়েটি সিরাজগঞ্জ কমিউনিটি ক্লিনিকে রয়েছে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে এম মুনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, গাইনি বিভাগের ইন্টার্ন চিকিৎসক পার্থ সাহা নিশ্চিত করেছেন যে কিশোরীর শরীরে ধর্ষণের স্পষ্ট আলামত পাওয়া গেছে।

সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর মা মূল অভিযুক্ত নাইম হোসেনসহ মোট ছয়জনের নামোল্লেখ করে কামারখন্দ থানায় একটি মামলা (নম্বর: [মামলার তারিখ ও প্রাসঙ্গিক নম্বর এখানে যোগ করুন]) দায়ের করেন।

এদিকে, ঘটনার পরদিন সোমবার বিকেলে সংবাদকর্মীরা 'ডেরা ফাস্টফুড অ্যান্ড চায়নিজ রেস্টুরেন্টে' গেলে সেখানে কয়েকজন যুবককে আড্ডা দিতে দেখা যায়। সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে তারা উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং আক্রমণাত্মক আচরণ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রেস্তোরাঁ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে আটক করে।

কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ জানিয়েছেন, কিশোরীর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং দ্রুত তদন্তের স্বার্থে দুজনকে আটক করা হয়েছে।

উপপরিদর্শক (এসআই) বাবুল আকতার নিশ্চিত করেছেন যে ধর্ষণের আলামত সংগ্রহের জন্য রেস্তোরাঁটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং বাকি অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে।

বিষয় : ধর্ষণ

আপনার মতামত লিখুন

কওমী টাইমস

বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫


মাদ্রাসাছাত্রীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ; আটক ২

প্রকাশের তারিখ : ২১ অক্টোবর ২০২৫

featured Image

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে এক বীভৎস ধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে ১৪ বছর বয়সী এক মাদ্রাসাছাত্রীকে রাস্তা থেকে জোর করে তুলে নিয়ে একটি রেস্তোরাঁর ভেতরে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর দিক হলো, ধর্ষণের শিকার কিশোরীর আর্তনাদ চাপা দিতে রেস্তোরাঁর অভ্যন্তরে সাউন্ডবক্সে উচ্চস্বরে গান বাজানো হয়। এই লোমহর্ষক ঘটনায় মূল অভিযুক্তসহ মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার, যাদের মধ্যে ইতোমধ্যে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।

কামারখন্দ উপজেলার একটি দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রী গত রবিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে এই ভয়াবহ ঘটনার শিকার হয়। মামলার এজাহার অনুযায়ী, নাইম হোসেন (২০) ও তার সহযোগীরা কিশোরীকে রাস্তা থেকে জোরপূর্বক একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে নেয়। এরপর তারা তাকে স্থানীয় 'ডেরা ফাস্টফুড অ্যান্ড চায়নিজ রেস্টুরেন্টে' নিয়ে যায়।

রেস্তোরাঁর ভেতরে নাইম তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। এসময় বাইরে অপেক্ষমাণ ইমরান (২১), আকাশ (২১), আতিক (২৩), নাছিম উদ্দিন (২০) ও নাজমুল হক নয়ন (২০) নামে পাঁচ সহযোগী ফটকে পাহারা দেয়। শুধু তাই নয়, ধর্ষণের সময় কিশোরীর চিৎকার যেন বাইরে না আসে, সেজন্য তারা পরিকল্পিতভাবে রেস্টুরেন্টের সাউন্ডবক্সে সর্বোচ্চ ভলিউমে গান বাজিয়ে দেয়। এই ঘটনা সমাজের নিরাপত্তা ও তরুণ সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে।

মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর তার পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে এক অচেনা ব্যক্তির ফোন মারফত তারা জানতে পারেন, অসুস্থ অবস্থায় মেয়েটি সিরাজগঞ্জ কমিউনিটি ক্লিনিকে রয়েছে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে এম মুনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, গাইনি বিভাগের ইন্টার্ন চিকিৎসক পার্থ সাহা নিশ্চিত করেছেন যে কিশোরীর শরীরে ধর্ষণের স্পষ্ট আলামত পাওয়া গেছে।

সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর মা মূল অভিযুক্ত নাইম হোসেনসহ মোট ছয়জনের নামোল্লেখ করে কামারখন্দ থানায় একটি মামলা (নম্বর: [মামলার তারিখ ও প্রাসঙ্গিক নম্বর এখানে যোগ করুন]) দায়ের করেন।

এদিকে, ঘটনার পরদিন সোমবার বিকেলে সংবাদকর্মীরা 'ডেরা ফাস্টফুড অ্যান্ড চায়নিজ রেস্টুরেন্টে' গেলে সেখানে কয়েকজন যুবককে আড্ডা দিতে দেখা যায়। সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে তারা উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং আক্রমণাত্মক আচরণ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রেস্তোরাঁ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে আটক করে।

কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ জানিয়েছেন, কিশোরীর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং দ্রুত তদন্তের স্বার্থে দুজনকে আটক করা হয়েছে।

উপপরিদর্শক (এসআই) বাবুল আকতার নিশ্চিত করেছেন যে ধর্ষণের আলামত সংগ্রহের জন্য রেস্তোরাঁটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং বাকি অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে।


কওমী টাইমস

সম্পাদক ও প্রকাশক : মুস্তাইন বিল্লাহ
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত