ঢাকা    রোববার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
ঢাকা    রোববার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
কওমী টাইমস

‘আইনি পদক্ষেপ’-এর আড়ালে সংখ্যালঘু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর চাপ, বলছেন স্থানীয় মুসলমানরা

উত্তর প্রদেশে মহিলা মাদরাসা সিলগালা: ধর্মীয় শিক্ষার পথ রুদ্ধ করছে ভারত সরকার— অভিযোগ মুসলমানদের


কওমী টাইমস ডেস্ক
কওমী টাইমস ডেস্ক
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৫ | প্রিন্ট সংস্করণ

উত্তর প্রদেশে মহিলা মাদরাসা সিলগালা: ধর্মীয় শিক্ষার পথ রুদ্ধ করছে ভারত সরকার— অভিযোগ মুসলমানদের

ভারতে সংখ্যালঘু মুসলমানদের ধর্মীয় শিক্ষা ক্রমেই সংকুচিত হয়ে পড়ছে। সর্বশেষ উত্তর প্রদেশের সান্ত কবীর নগরে মেয়েদের মাদরাসা কুলিয়াতুল বানাতির রাযভিয়া সিলগালা করার ঘটনায় মুসলিম সমাজে উদ্বেগ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। প্রশাসন বলছে, এটি আইনি ব্যবস্থা; কিন্তু স্থানীয়দের মতে, এটি সরকারের মুসলিমবিরোধী নীতির আরেকটি উদাহরণ।

গত মঙ্গলবার উত্তর প্রদেশের খলিলাবাদ এলাকায় অবস্থিত ‘কুলিয়াতুল বানাতির রাযভিয়া (নিসওয়ান)’ নামের মেয়েদের মাদরাসাটি বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। ব্রিটিশ-ভারতীয় আলেম মাওলানা শামসুল হুদা খানের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে দরিদ্র মুসলিম মেয়েদের ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা দিয়ে আসছিল।

তবে প্রশাসনের দাবি, মাদরাসাটি ২০১৭ সালে স্বীকৃত স্থানের বাইরে নতুন ভবনে স্থানান্তরিত হয়েছে অনুমোদন ছাড়া। সেই অজুহাতে উপ-বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা সংখ্যালঘু কল্যাণ কর্মকর্তা যৌথভাবে ভবনটি সিলগালা করেন।

কিন্তু স্থানীয় মুসলিমরা বলছেন, “এটি কেবল প্রশাসনিক নিয়মের প্রয়োগ নয়, বরং মুসলিম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিকল্পিতভাবে দমনের অংশ।” তাদের অভিযোগ, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশেষ করে মেয়েদের মাদরাসাগুলোকে নানা ‘নিয়মভঙ্গ’-এর অজুহাতে বন্ধ করা হচ্ছে, যা মুসলিম নারীদের শিক্ষা অধিকারকে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করছে।

মাওলানা শামসুল হুদা খানের বিরুদ্ধে বিদেশি অর্থায়নের অনুমোদনবিহীন অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছে সরকার। যদিও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বলছেন, “বিদেশি তহবিলের অভিযোগ কেবল একটি ছুতো— সরকারের প্রকৃত লক্ষ্য মুসলমানদের স্বাধীন ধর্মীয় শিক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল করা।”

অধিকার সংগঠনগুলোও একই সতর্কতা জানিয়েছে। তারা বলছে, সরকারের এমন পদক্ষেপ সংখ্যালঘুদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও বঞ্চনার বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শুধু আইনি পদক্ষেপ নয়— বরং একটি রাজনৈতিক বার্তা, যা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার ভাবমূর্তিকে গভীরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

একজন স্থানীয় শিক্ষক বলেন, “যে দেশে মেয়েদের শিক্ষার কথা বলা হয়, সেখানে মুসলিম মেয়েদের মাদরাসা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এটি ন্যায়বিচারের নয়, বরং বৈষম্যের প্রতীক।”

বর্তমানে মাদরাসার দরজায় তালা ঝুলছে। নিঃস্তব্ধ ভবনটি যেন এক নীরব সাক্ষ্য— ভারতে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় শিক্ষার পথ ক্রমেই সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে, অথচ সরকার দাবি করছে, ‘সবাইয়ের জন্য শিক্ষা’।

বিষয় : ভারত ইসলামোফোবিয়া

আপনার মতামত লিখুন

কওমী টাইমস

রোববার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫


উত্তর প্রদেশে মহিলা মাদরাসা সিলগালা: ধর্মীয় শিক্ষার পথ রুদ্ধ করছে ভারত সরকার— অভিযোগ মুসলমানদের

প্রকাশের তারিখ : ০৯ নভেম্বর ২০২৫

featured Image

ভারতে সংখ্যালঘু মুসলমানদের ধর্মীয় শিক্ষা ক্রমেই সংকুচিত হয়ে পড়ছে। সর্বশেষ উত্তর প্রদেশের সান্ত কবীর নগরে মেয়েদের মাদরাসা কুলিয়াতুল বানাতির রাযভিয়া সিলগালা করার ঘটনায় মুসলিম সমাজে উদ্বেগ ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। প্রশাসন বলছে, এটি আইনি ব্যবস্থা; কিন্তু স্থানীয়দের মতে, এটি সরকারের মুসলিমবিরোধী নীতির আরেকটি উদাহরণ।

গত মঙ্গলবার উত্তর প্রদেশের খলিলাবাদ এলাকায় অবস্থিত ‘কুলিয়াতুল বানাতির রাযভিয়া (নিসওয়ান)’ নামের মেয়েদের মাদরাসাটি বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। ব্রিটিশ-ভারতীয় আলেম মাওলানা শামসুল হুদা খানের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে দরিদ্র মুসলিম মেয়েদের ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা দিয়ে আসছিল।

তবে প্রশাসনের দাবি, মাদরাসাটি ২০১৭ সালে স্বীকৃত স্থানের বাইরে নতুন ভবনে স্থানান্তরিত হয়েছে অনুমোদন ছাড়া। সেই অজুহাতে উপ-বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা সংখ্যালঘু কল্যাণ কর্মকর্তা যৌথভাবে ভবনটি সিলগালা করেন।

কিন্তু স্থানীয় মুসলিমরা বলছেন, “এটি কেবল প্রশাসনিক নিয়মের প্রয়োগ নয়, বরং মুসলিম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিকল্পিতভাবে দমনের অংশ।” তাদের অভিযোগ, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশেষ করে মেয়েদের মাদরাসাগুলোকে নানা ‘নিয়মভঙ্গ’-এর অজুহাতে বন্ধ করা হচ্ছে, যা মুসলিম নারীদের শিক্ষা অধিকারকে মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করছে।

মাওলানা শামসুল হুদা খানের বিরুদ্ধে বিদেশি অর্থায়নের অনুমোদনবিহীন অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছে সরকার। যদিও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বলছেন, “বিদেশি তহবিলের অভিযোগ কেবল একটি ছুতো— সরকারের প্রকৃত লক্ষ্য মুসলমানদের স্বাধীন ধর্মীয় শিক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল করা।”

অধিকার সংগঠনগুলোও একই সতর্কতা জানিয়েছে। তারা বলছে, সরকারের এমন পদক্ষেপ সংখ্যালঘুদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা ও বঞ্চনার বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শুধু আইনি পদক্ষেপ নয়— বরং একটি রাজনৈতিক বার্তা, যা ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার ভাবমূর্তিকে গভীরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

একজন স্থানীয় শিক্ষক বলেন, “যে দেশে মেয়েদের শিক্ষার কথা বলা হয়, সেখানে মুসলিম মেয়েদের মাদরাসা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এটি ন্যায়বিচারের নয়, বরং বৈষম্যের প্রতীক।”

বর্তমানে মাদরাসার দরজায় তালা ঝুলছে। নিঃস্তব্ধ ভবনটি যেন এক নীরব সাক্ষ্য— ভারতে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় শিক্ষার পথ ক্রমেই সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে, অথচ সরকার দাবি করছে, ‘সবাইয়ের জন্য শিক্ষা’।


কওমী টাইমস

সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ মুস্তাইন বিল্লাহ
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত