ঢাকা    রোববার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
ঢাকা    রোববার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
কওমী টাইমস

সিনহা হত্যা: ওসি প্রদীপ ও এসআই লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ


কওমী টাইমস ডেস্ক
কওমী টাইমস ডেস্ক
প্রকাশ : ২০ নভেম্বর ২০২৫ | প্রিন্ট সংস্করণ

সিনহা হত্যা: ওসি প্রদীপ ও এসআই লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডে টেকনাফ থানা থেকে বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাস ও এসআই লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেন রায়ের অনুলিপিতে সাক্ষর করে তা প্রকাশ করেন। একই রায়ে আরও ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। এখন আসামিদের ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে।

মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার বহুল আলোচিত ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির পর হাইকোর্ট প্রদীপ কুমার দাস ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং বিচারপতি মো. সগির হোসেনের বেঞ্চ রায়ের অনুলিপিতে সাক্ষর শেষে তা সেকশনে পাঠান।

রায় অনুসারে, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে। আদালত একই সঙ্গে ট্রায়াল কোর্ট প্রদত্ত আরও ছয়জন আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও বহাল রেখেছে।

ডেথ রেফারেন্স ও শুনানি প্রক্রিয়া

গত ২ জুন হাইকোর্ট ডেথ রেফারেন্স ও দণ্ডিতদের আপিল শুনানি শেষে রায় দেন। এর আগে ২৯ মে দীর্ঘ শুনানি শেষ হয়। ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারিতে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল ট্রায়াল কোর্টে প্রদীপ ও লিয়াকতকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন।

ঘটনার পটভূমি

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

এর পাঁচদিন পর, ২০২০ সালের ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাব, এবং সেই বছরের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করে।

অভিযোগপত্র: ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’

র‌্যাবের তদন্তে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। চার্জশিটে বলা হয়, ঘটনাটি আকস্মিক বা ভুলবশত গুলিবর্ষণের ফলে ঘটেনি; বরং এটি ছিল পরিকল্পিত ও সমন্বিত একটি হত্যাকাণ্ড।

বর্তমান প্রেক্ষাপট

হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর আসামিদের এখন আপিল করার পথ খুলে গেছে। আইনজীবীরা বলছেন, এটি মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, কারণ মৃত্যু দণ্ডাদেশ বহাল থাকায় আপিল বিভাগে পরবর্তী পর্যায়ের শুনানিই এখন চূড়ান্ত নির্ধারক হতে পারে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোও মামলাটিকে গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে।

এই মামলার রায় বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়বদ্ধতা, অতিরিক্ত বল প্রয়োগ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

বিষয় : রাজনীতি অপরাধ মানবাধিকার আইন-শৃঙ্খলা বিচার বিভাগ

আপনার মতামত লিখুন

কওমী টাইমস

রোববার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫


সিনহা হত্যা: ওসি প্রদীপ ও এসআই লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

প্রকাশের তারিখ : ২০ নভেম্বর ২০২৫

featured Image

মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডে টেকনাফ থানা থেকে বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাস ও এসআই লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেন রায়ের অনুলিপিতে সাক্ষর করে তা প্রকাশ করেন। একই রায়ে আরও ছয় আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। এখন আসামিদের ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে।

মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার বহুল আলোচিত ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির পর হাইকোর্ট প্রদীপ কুমার দাস ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং বিচারপতি মো. সগির হোসেনের বেঞ্চ রায়ের অনুলিপিতে সাক্ষর শেষে তা সেকশনে পাঠান।

রায় অনুসারে, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে। আদালত একই সঙ্গে ট্রায়াল কোর্ট প্রদত্ত আরও ছয়জন আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও বহাল রেখেছে।

ডেথ রেফারেন্স ও শুনানি প্রক্রিয়া

গত ২ জুন হাইকোর্ট ডেথ রেফারেন্স ও দণ্ডিতদের আপিল শুনানি শেষে রায় দেন। এর আগে ২৯ মে দীর্ঘ শুনানি শেষ হয়। ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারিতে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল ট্রায়াল কোর্টে প্রদীপ ও লিয়াকতকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন।

ঘটনার পটভূমি

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

এর পাঁচদিন পর, ২০২০ সালের ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাব, এবং সেই বছরের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করে।

অভিযোগপত্র: ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’

র‌্যাবের তদন্তে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। চার্জশিটে বলা হয়, ঘটনাটি আকস্মিক বা ভুলবশত গুলিবর্ষণের ফলে ঘটেনি; বরং এটি ছিল পরিকল্পিত ও সমন্বিত একটি হত্যাকাণ্ড।

বর্তমান প্রেক্ষাপট

হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর আসামিদের এখন আপিল করার পথ খুলে গেছে। আইনজীবীরা বলছেন, এটি মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, কারণ মৃত্যু দণ্ডাদেশ বহাল থাকায় আপিল বিভাগে পরবর্তী পর্যায়ের শুনানিই এখন চূড়ান্ত নির্ধারক হতে পারে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোও মামলাটিকে গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে।

এই মামলার রায় বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়বদ্ধতা, অতিরিক্ত বল প্রয়োগ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।


কওমী টাইমস

সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ মুস্তাইন বিল্লাহ
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত