পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় 'বাবরি মসজিদ' নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে সাঁটানো পোস্টারকে ঘিরে রাজ্য-রাজনীতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হুমায়ুন কবির আগামী ৬ ডিসেম্বর মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ঘোষণা দেওয়ার পরই এই তোলপাড় শুরু হয়। ঐতিহাসিক ও আবেগিক গুরুত্বের কারণে বিষয়টি দ্রুতই রাজনৈতিক ও সামাজিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। যদিও তৃণমূল কংগ্রেস দ্রুতই বিধায়ক কবিরের এই মন্তব্য থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করেছে।
মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় একটি নতুন 'বাবরি মসজিদ' নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে বিভিন্ন স্থানে পোস্টার দেখা যাওয়ার পর থেকেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হুমায়ুন কবির এই উদ্যোগের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন এবং তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যে আগামী ৬ ডিসেম্বর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে এবং কাঠামোটি শেষ হতে প্রায় তিন বছর সময় লাগবে। তিনি জানান, অনুষ্ঠানে একাধিক মুসলিম ধর্মগুরু ও সম্প্রদায়ের নেতার উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করে তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, শাসক দল তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গকে অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "সমগ্র দেশ দেখছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিভাবে পশ্চিমবঙ্গকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছেন। ভারতে যদি কেউ বাবরি মসজিদ পুনর্নির্মাণের কথা বলার সাহস করে, তবে জাতি চুপ থাকবে না। সমগ্র দেশ এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।"
অন্যদিকে, উত্তর প্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য ২২ নভেম্বরই কবিরের মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, "ভারতের মাটিতে যদি তারা বাবর-এর মতো একজন বিদেশী আক্রমণকারী, যিনি রাম মন্দির ভেঙে একটি কাঠামো তৈরি করেছিলেন, তাকে সম্মান করতে চান তবে তারা মারাত্মক ভুল করছেন। কার সেবকরা ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভেঙেছিলেন। এখন ভারতের মাটিতে এই ধরনের কোনো নির্মাণ হতে দেওয়া হবে না।" বিহারের মন্ত্রী নীতিন নবীনও এই ঘোষণার সমালোচনা করে বলেন, যারা হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে সম্মান করে না এবং এখনও বাবরের যুগে বাঁচতে চায়, তাদের বোঝা উচিত যে এই ধরনের মানসিকতার অবসান ঘটেছে।
উত্তেজনা বাড়তেই তৃণমূল কংগ্রেস দ্রুত বিধায়ক কবিরের ঘোষণা থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নেয়। তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক নির্মল ঘোষ স্পষ্ট করে দেন যে কবিরের বক্তব্য তার ব্যক্তিগত মতামত এবং দল এর সমর্থন করে না। তিনি বলেন, "তার বক্তব্যের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। এগুলো তার ব্যক্তিগত মতামত, এবং দল এতে সম্মত নয়। তিনি সীমা লঙ্ঘন করেছেন।"
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (VHP) মুখপাত্র বিনোদ বনশল এই কাঠামোকে 'বাবরি' নামে ডাকার জন্য কবিরের সমালোচনা করেছেন এবং এটিকে "জাতীয় অনুভূতির অপমান" বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার 'জেহাদি ভোটব্যাঙ্ক'কে শক্তিশালী করার জন্য এই ঘটনাকে উৎসাহিত করছেন।
উল্লেখ্য, বেলডাঙায় ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের দিনেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কলকাতায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বার্ষিকী উপলক্ষে একটি সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
বিষয় : ভারত বাবরি মসজিদ
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ২৭ নভেম্বর ২০২৫
পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় 'বাবরি মসজিদ' নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে সাঁটানো পোস্টারকে ঘিরে রাজ্য-রাজনীতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হুমায়ুন কবির আগামী ৬ ডিসেম্বর মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ঘোষণা দেওয়ার পরই এই তোলপাড় শুরু হয়। ঐতিহাসিক ও আবেগিক গুরুত্বের কারণে বিষয়টি দ্রুতই রাজনৈতিক ও সামাজিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। যদিও তৃণমূল কংগ্রেস দ্রুতই বিধায়ক কবিরের এই মন্তব্য থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করেছে।
মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় একটি নতুন 'বাবরি মসজিদ' নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে বিভিন্ন স্থানে পোস্টার দেখা যাওয়ার পর থেকেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হুমায়ুন কবির এই উদ্যোগের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন এবং তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যে আগামী ৬ ডিসেম্বর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে এবং কাঠামোটি শেষ হতে প্রায় তিন বছর সময় লাগবে। তিনি জানান, অনুষ্ঠানে একাধিক মুসলিম ধর্মগুরু ও সম্প্রদায়ের নেতার উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করে তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, শাসক দল তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গকে অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "সমগ্র দেশ দেখছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিভাবে পশ্চিমবঙ্গকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছেন। ভারতে যদি কেউ বাবরি মসজিদ পুনর্নির্মাণের কথা বলার সাহস করে, তবে জাতি চুপ থাকবে না। সমগ্র দেশ এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।"
অন্যদিকে, উত্তর প্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য ২২ নভেম্বরই কবিরের মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, "ভারতের মাটিতে যদি তারা বাবর-এর মতো একজন বিদেশী আক্রমণকারী, যিনি রাম মন্দির ভেঙে একটি কাঠামো তৈরি করেছিলেন, তাকে সম্মান করতে চান তবে তারা মারাত্মক ভুল করছেন। কার সেবকরা ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ভেঙেছিলেন। এখন ভারতের মাটিতে এই ধরনের কোনো নির্মাণ হতে দেওয়া হবে না।" বিহারের মন্ত্রী নীতিন নবীনও এই ঘোষণার সমালোচনা করে বলেন, যারা হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে সম্মান করে না এবং এখনও বাবরের যুগে বাঁচতে চায়, তাদের বোঝা উচিত যে এই ধরনের মানসিকতার অবসান ঘটেছে।
উত্তেজনা বাড়তেই তৃণমূল কংগ্রেস দ্রুত বিধায়ক কবিরের ঘোষণা থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে নেয়। তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক নির্মল ঘোষ স্পষ্ট করে দেন যে কবিরের বক্তব্য তার ব্যক্তিগত মতামত এবং দল এর সমর্থন করে না। তিনি বলেন, "তার বক্তব্যের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই। এগুলো তার ব্যক্তিগত মতামত, এবং দল এতে সম্মত নয়। তিনি সীমা লঙ্ঘন করেছেন।"
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (VHP) মুখপাত্র বিনোদ বনশল এই কাঠামোকে 'বাবরি' নামে ডাকার জন্য কবিরের সমালোচনা করেছেন এবং এটিকে "জাতীয় অনুভূতির অপমান" বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার 'জেহাদি ভোটব্যাঙ্ক'কে শক্তিশালী করার জন্য এই ঘটনাকে উৎসাহিত করছেন।
উল্লেখ্য, বেলডাঙায় ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের দিনেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কলকাতায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বার্ষিকী উপলক্ষে একটি সমাবেশে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন