ঢাকা   শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
ঢাকা   শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
কওমী টাইমস

আফগানিস্তানের কাবুলের কাছে অবস্থিত কৌশলগত বাগরাম বিমানঘাঁটি ফেরত পাওয়ার দাবি তুলেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তালেবান তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটি ফেরত চাইছেন ট্রাম্প


কওমী টাইমস ডেস্ক
কওমী টাইমস ডেস্ক
প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | প্রিন্ট সংস্করণ

আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটি ফেরত চাইছেন ট্রাম্প

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে প্রায় ৬৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বাগরাম বিমানঘাঁটি আবারও আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রে। সেনা প্রত্যাহারের পাঁচ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ঘাঁটি ফেরত পাওয়ার দাবি তুলেছেন। তালেবান সরকার অবশ্য তার এই দাবি নাকচ করে দিয়েছে।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে আলকায়দার হামলার পর বাগরাম ঘাঁটিটি মার্কিন সেনাদের প্রধান ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ২০২১ সালে তালেবান কাবুল সরকারের পতন ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করলে ঘাঁটিটিও তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, “ওয়াশিংটন বাগরাম ঘাঁটিটি তালেবানকে বিনা মূল্যে দিয়ে দিয়েছে, অথচ এখন সেটি ফেরত চাচ্ছে।” এরপর ২০ সেপ্টেম্বর সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথ সোশ্যালে তিনি সতর্ক করে লিখেন, যদি আফগানিস্তান ঘাঁটি ফিরিয়ে না দেয়, তবে খারাপ কিছু ঘটতে পারে। যদিও বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।

তালেবান সরকার ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে এটি প্রথমবার নয়, আগেও তিনি বাগরাম ঘাঁটি পুনরুদ্ধারের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।

কাবুল থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত এই ঘাঁটিটি চীনের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কাছাকাছি হওয়ায় বিশেষ কৌশলগত গুরুত্ব বহন করে। এখানে ৩ দশমিক ৬ কিলোমিটার ও ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ দুটি রানওয়ে রয়েছে। এটি একসময় আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের সবচেয়ে বড় ঘাঁটি ছিল।

ক্রাইসিস গ্রুপের সিনিয়র বিশ্লেষক ইব্রাহিম বাহিসের মতে, বাগরামের আসল আকর্ষণ অস্ত্রভাণ্ডার নয়, বরং ভূরাজনৈতিক অবস্থান। সোভিয়েত আমলে নির্মিত এই ঘাঁটি দীর্ঘদিন ধরেই কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ছেড়ে গেলেও চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের কারণে বাগরামের গুরুত্ব আরও বেড়েছে।

ট্রাম্প দাবি করেছেন, সেনা প্রত্যাহারের সময় যুক্তরাষ্ট্র বহু মূল্যবান অস্ত্র ও সরঞ্জাম এখানে ফেলে এসেছিল, যা পরে তালেবান ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে চলে যায়। তার ভাষায়, এটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় ক্ষতি।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই দাবি মূলত এক ধরনের দরকষাকষির কৌশল হতে পারে। যদি যুক্তরাষ্ট্র বাগরামকে আলোচনার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে, তবে তালেবানের পক্ষে তা সুবিধাজনক হতে পারে। কিন্তু ট্রাম্প আসলেই তালেবানের সঙ্গে কোনো সমঝোতায় যাবেন, নাকি শক্ত অবস্থান নেবেন—তা এখনো অনিশ্চিত।

বিষয় : আফগানিস্তান যুক্তরাষ্ট্র ট্রাম্প

আপনার মতামত লিখুন

কওমী টাইমস

শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫


আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটি ফেরত চাইছেন ট্রাম্প

প্রকাশের তারিখ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

featured Image

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে প্রায় ৬৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বাগরাম বিমানঘাঁটি আবারও আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রে। সেনা প্রত্যাহারের পাঁচ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ঘাঁটি ফেরত পাওয়ার দাবি তুলেছেন। তালেবান সরকার অবশ্য তার এই দাবি নাকচ করে দিয়েছে।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে আলকায়দার হামলার পর বাগরাম ঘাঁটিটি মার্কিন সেনাদের প্রধান ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ২০২১ সালে তালেবান কাবুল সরকারের পতন ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করলে ঘাঁটিটিও তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, “ওয়াশিংটন বাগরাম ঘাঁটিটি তালেবানকে বিনা মূল্যে দিয়ে দিয়েছে, অথচ এখন সেটি ফেরত চাচ্ছে।” এরপর ২০ সেপ্টেম্বর সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথ সোশ্যালে তিনি সতর্ক করে লিখেন, যদি আফগানিস্তান ঘাঁটি ফিরিয়ে না দেয়, তবে খারাপ কিছু ঘটতে পারে। যদিও বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।

তালেবান সরকার ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে এটি প্রথমবার নয়, আগেও তিনি বাগরাম ঘাঁটি পুনরুদ্ধারের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।

কাবুল থেকে এক ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত এই ঘাঁটিটি চীনের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কাছাকাছি হওয়ায় বিশেষ কৌশলগত গুরুত্ব বহন করে। এখানে ৩ দশমিক ৬ কিলোমিটার ও ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ দুটি রানওয়ে রয়েছে। এটি একসময় আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের সবচেয়ে বড় ঘাঁটি ছিল।

ক্রাইসিস গ্রুপের সিনিয়র বিশ্লেষক ইব্রাহিম বাহিসের মতে, বাগরামের আসল আকর্ষণ অস্ত্রভাণ্ডার নয়, বরং ভূরাজনৈতিক অবস্থান। সোভিয়েত আমলে নির্মিত এই ঘাঁটি দীর্ঘদিন ধরেই কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ছেড়ে গেলেও চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের কারণে বাগরামের গুরুত্ব আরও বেড়েছে।

ট্রাম্প দাবি করেছেন, সেনা প্রত্যাহারের সময় যুক্তরাষ্ট্র বহু মূল্যবান অস্ত্র ও সরঞ্জাম এখানে ফেলে এসেছিল, যা পরে তালেবান ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে চলে যায়। তার ভাষায়, এটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় ক্ষতি।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই দাবি মূলত এক ধরনের দরকষাকষির কৌশল হতে পারে। যদি যুক্তরাষ্ট্র বাগরামকে আলোচনার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে, তবে তালেবানের পক্ষে তা সুবিধাজনক হতে পারে। কিন্তু ট্রাম্প আসলেই তালেবানের সঙ্গে কোনো সমঝোতায় যাবেন, নাকি শক্ত অবস্থান নেবেন—তা এখনো অনিশ্চিত।


কওমী টাইমস

সম্পাদক ও প্রকাশক : মুস্তাইন বিল্লাহ
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত