ইসরায়েলের নৌ-সেনাদের হামলায় আন্তর্জাতিক জলসীমায় আটক হওয়া 'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা'-র (Global Sumud Flotilla) সদস্য, তুরস্ক ও অন্যান্য দেশের অ্যাক্টিভিস্টরা অবশেষে দেশে ফিরেছেন। শুক্রবার (০৪ অক্টোবর ২০২৫) তুর্কি এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে মোট ১৩৭ জন অ্যাক্টিভিস্টকে ইসরায়েলের ইলাত শহরের রামন বিমানবন্দর থেকে ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে আনা হয়। ফ্লোটিলাটি গাজায় মানবিক সাহায্য পৌঁছে দিতে যাচ্ছিল, যখন ১ অক্টোবর সন্ধ্যায় ইসরায়েলি বাহিনী তাদের ওপর হামলা চালিয়ে জাহাজসহ যাত্রীদের আটক করে।
'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা'র যেসব সদস্যকে ইসরায়েল আটক করেছিল, তাঁদের মধ্যে ১৩৭ জনকে নিয়ে তুর্কি এয়ারলাইন্সের (THY) বিমানটি তুরস্কের স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এই দলে ৩৬ জন তুর্কি নাগরিক এবং ২৩ জন মালয়েশীয় নাগরিকসহ মোট ১২টি দেশের নাগরিক ছিলেন। অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, আলজেরিয়া, মরক্কো, ইতালি, কুয়েত, লিবিয়া, মৌরিতানিয়া, সুইজারল্যান্ড, তিউনিসিয়া এবং জর্ডানের নাগরিকরা। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রচেষ্টায় এঁদের দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই আটক অ্যাক্টিভিস্টদের ফিরিয়ে আনতে জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েছিল। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওনকু কেচেলি এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে এক বিবৃতিতে জানান, প্রাথমিকভাবে ৩৬ জন তুর্কি নাগরিকের ফেরার কথা ছিল, তবে চূড়ান্ত সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হয়নি। বাকি তুর্কি নাগরিকদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার কর্মকর্তারা প্রথমবার তুর্কি নাগরিকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে সক্ষম হন। এদিকে, ইতালিও জানিয়েছে যে ফ্লোটিলায় থাকা তাদের ২৬ জন নাগরিক ইসরায়েল ছেড়ে যাচ্ছেন।
ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে অ্যাক্টিভিস্টদের ভিআইপি লাউঞ্জে তুরস্কের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ স্বাগত জানান। দেশে ফেরার পর তাঁরা সরাসরি আইনি প্রক্রিয়ার সম্মুখীন হবেন। প্রথমে তাঁদের ইয়েলিবোশনাতে অবস্থিত ফরেনসিক মেডিসিন ইনস্টিটিউটে (Adli Tıp Kurumu Başkanlığı) স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হবে। এরপর, ইস্তাম্বুল চিফ প্রসিকিউটর অফিস কর্তৃক শুরু করা তদন্তের অংশ হিসেবে ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক জলসীমায় আক্রমণের ঘটনায় আটক তুর্কি নাগরিকদের জবানবন্দি গ্রহণের জন্য তাঁদের ইস্তাম্বুল পুলিশ ডিরেক্টরেটে নিয়ে যাওয়া হবে।
'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা' কী ছিল?
'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা' ছিল এ পর্যন্ত গাজায় মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দিতে যাওয়া সবচেয়ে বড় বহর। ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙা এবং ফিলিস্তিনিদের জন্য জরুরি সহায়তা নিয়ে যাত্রা করা এই বহরে একাধিক নৌকা ও জাহাজ ছিল। গত ১ অক্টোবর সন্ধ্যায় যখন ফ্লোটিলাটি গাজার জলসীমার কাছাকাছি পৌঁছায়, তখন ইসরায়েলি বাহিনী বেআইনিভাবে বহরটি দখল করে নেয় এবং শত শত যাত্রীকে আটক করে।
বিষয় : তুরস্ক সুমুদ ফ্লোটিলা

রোববার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ০৪ অক্টোবর ২০২৫
ইসরায়েলের নৌ-সেনাদের হামলায় আন্তর্জাতিক জলসীমায় আটক হওয়া 'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা'-র (Global Sumud Flotilla) সদস্য, তুরস্ক ও অন্যান্য দেশের অ্যাক্টিভিস্টরা অবশেষে দেশে ফিরেছেন। শুক্রবার (০৪ অক্টোবর ২০২৫) তুর্কি এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে মোট ১৩৭ জন অ্যাক্টিভিস্টকে ইসরায়েলের ইলাত শহরের রামন বিমানবন্দর থেকে ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে আনা হয়। ফ্লোটিলাটি গাজায় মানবিক সাহায্য পৌঁছে দিতে যাচ্ছিল, যখন ১ অক্টোবর সন্ধ্যায় ইসরায়েলি বাহিনী তাদের ওপর হামলা চালিয়ে জাহাজসহ যাত্রীদের আটক করে।
'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা'র যেসব সদস্যকে ইসরায়েল আটক করেছিল, তাঁদের মধ্যে ১৩৭ জনকে নিয়ে তুর্কি এয়ারলাইন্সের (THY) বিমানটি তুরস্কের স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এই দলে ৩৬ জন তুর্কি নাগরিক এবং ২৩ জন মালয়েশীয় নাগরিকসহ মোট ১২টি দেশের নাগরিক ছিলেন। অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, আলজেরিয়া, মরক্কো, ইতালি, কুয়েত, লিবিয়া, মৌরিতানিয়া, সুইজারল্যান্ড, তিউনিসিয়া এবং জর্ডানের নাগরিকরা। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রচেষ্টায় এঁদের দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়।
তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই আটক অ্যাক্টিভিস্টদের ফিরিয়ে আনতে জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েছিল। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওনকু কেচেলি এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে এক বিবৃতিতে জানান, প্রাথমিকভাবে ৩৬ জন তুর্কি নাগরিকের ফেরার কথা ছিল, তবে চূড়ান্ত সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হয়নি। বাকি তুর্কি নাগরিকদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার কর্মকর্তারা প্রথমবার তুর্কি নাগরিকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে সক্ষম হন। এদিকে, ইতালিও জানিয়েছে যে ফ্লোটিলায় থাকা তাদের ২৬ জন নাগরিক ইসরায়েল ছেড়ে যাচ্ছেন।
ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে অ্যাক্টিভিস্টদের ভিআইপি লাউঞ্জে তুরস্কের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ স্বাগত জানান। দেশে ফেরার পর তাঁরা সরাসরি আইনি প্রক্রিয়ার সম্মুখীন হবেন। প্রথমে তাঁদের ইয়েলিবোশনাতে অবস্থিত ফরেনসিক মেডিসিন ইনস্টিটিউটে (Adli Tıp Kurumu Başkanlığı) স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হবে। এরপর, ইস্তাম্বুল চিফ প্রসিকিউটর অফিস কর্তৃক শুরু করা তদন্তের অংশ হিসেবে ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক জলসীমায় আক্রমণের ঘটনায় আটক তুর্কি নাগরিকদের জবানবন্দি গ্রহণের জন্য তাঁদের ইস্তাম্বুল পুলিশ ডিরেক্টরেটে নিয়ে যাওয়া হবে।
'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা' কী ছিল?
'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা' ছিল এ পর্যন্ত গাজায় মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দিতে যাওয়া সবচেয়ে বড় বহর। ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙা এবং ফিলিস্তিনিদের জন্য জরুরি সহায়তা নিয়ে যাত্রা করা এই বহরে একাধিক নৌকা ও জাহাজ ছিল। গত ১ অক্টোবর সন্ধ্যায় যখন ফ্লোটিলাটি গাজার জলসীমার কাছাকাছি পৌঁছায়, তখন ইসরায়েলি বাহিনী বেআইনিভাবে বহরটি দখল করে নেয় এবং শত শত যাত্রীকে আটক করে।

আপনার মতামত লিখুন