ঢাকা    রোববার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
ঢাকা    রোববার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
কওমী টাইমস

পূজা উপলক্ষে রপ্তানির অনুমতি মিললেও সময়ের স্বল্পতা ও উচ্চমূল্যের কারণে লক্ষ্যমাত্রা অধরা; গত বছরের চেয়েও কম আমদানি

বাংলাদেশ থেকে ভারতে কত টন ইলিশ গেছে?


কওমী টাইমস ডেস্ক
কওমী টাইমস ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৫ | প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশ থেকে ভারতে কত টন ইলিশ গেছে?

বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানি এই বছর সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার ১,২০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিলেও, মাত্র ১৩ দিনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে ও ত্রিপুরায় এসেছে প্রায় ১৪৫ টন ইলিশ। উচ্চমূল্য, স্বল্প সময়সীমা এবং উৎসবের জন্য বন্দর বন্ধ থাকার কারণে আমদানির এই নজিরবিহীন পতন ঘটেছে, যা পশ্চিমবঙ্গের ভোজনরসিকদের মধ্যে চরম হতাশার সৃষ্টি করেছে।

বাংলাদেশ সরকার এ বছর ১,২০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছিল, যা ৫ অক্টোবরের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। তবে ৪ অক্টোবর রাত থেকে রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। গত ১৭ সেপ্টেম্বর রপ্তানি শুরু হলেও, দুর্গাপূজার কারণে পাঁচ দিন সব বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল। ফলে আমদানির জন্য ব্যবসায়ীরা হাতে পান মাত্র ১৩ দিন।

পশ্চিমবঙ্গের মাছ আমদানিকারকদের তথ্যানুযায়ী, ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বেনাপোল ও আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে মোট ১৪৪ টন ৪৮৯ কেজি ইলিশ এসেছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে (বেনাপোল দিয়ে) এসেছে ১০৫ টন ২১৪ কেজি এবং ত্রিপুরায় গেছে ৩৯ টন ২৭৫ কেজি।

কেন কমলো ইলিশের আমদানি?

  • স্বল্প সময়সীমা: ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ জানান, পর্যাপ্ত সময় না দেওয়ায় এবং এর মধ্যে দুর্গাপূজার ছুটি পড়ায় অনুমোদিত ১,২০০ টন ইলিশ আমদানি করা কোনোভাবেই সম্ভব হয়নি। তারা আরও বেশি সময় দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন।

  • উচ্চমূল্য: বাংলাদেশে ইলিশের উৎপাদন কম হওয়ায় সেখানেও দাম অনেক বেশি। ফলে রপ্তানিকারকরাও বেশি দামে মাছ রপ্তানি করতে আগ্রহী হননি। অন্যদিকে, ভারতে ইলিশ আমদানির খরচ বেড়ে যাওয়ায় খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ইলিশ ২,৪০০ থেকে ২,৫০০ রুপি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে, যা ক্রেতাদের নাগালের বাইরে।

  • অতীতের তুলনায় সর্বনিম্ন আমদানি: মাকসুদের মতে, এবারের মতো এত কম ইলিশ অতীতে কখনো আমদানি হয়নি। গত বছর বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সত্ত্বেও ৫৭৭ টন ইলিশ আমদানি করা সম্ভব হয়েছিল।
ক্রমহ্রাসমান ইলিশ আমদানি: এক নজরে পরিসংখ্যান

পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের কাছে পদ্মার ইলিশের চাহিদা অপরিসীম হলেও, গত পাঁচ বছর ধরে ভারতে ইলিশ আসা ক্রমেই কমছে।

বছরবাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত পরিমাণ (মেট্রিক টন)ভারতে আমদানি হওয়া পরিমাণ (মেট্রিক টন)
২০২১৪,৬০০১,২০০
২০২২২,৯০০১,৩০০
২০২৩৩,৯৫০

৫৮৭

২০২৫

১,২০০১৪৫ (প্রায়)

২০২৩ সালে ৩,৯৫০ মেট্রিক টন অনুমোদন দেওয়া হলেও মাত্র ৫৮৭ মেট্রিক টন আমদানি হয়েছিল। এ বছরও একই ধারা বজায় থাকল। ৩৭টি সংস্থাকে ১২.৫ ডলার মূল্যে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হলেও, সময়মতো রপ্তানি শেষ করতে না পারায় পশ্চিমবঙ্গের মানুষের পাতে ন্যায্য মূল্যে বাংলাদেশের ইলিশ তুলে দেওয়া সম্ভব হলো না।

বিষয় : বাংলাদেশ ভারত ইলিশ মাছ

আপনার মতামত লিখুন

কওমী টাইমস

রোববার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫


বাংলাদেশ থেকে ভারতে কত টন ইলিশ গেছে?

প্রকাশের তারিখ : ০৫ অক্টোবর ২০২৫

featured Image

বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানি এই বছর সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার ১,২০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিলেও, মাত্র ১৩ দিনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে ও ত্রিপুরায় এসেছে প্রায় ১৪৫ টন ইলিশ। উচ্চমূল্য, স্বল্প সময়সীমা এবং উৎসবের জন্য বন্দর বন্ধ থাকার কারণে আমদানির এই নজিরবিহীন পতন ঘটেছে, যা পশ্চিমবঙ্গের ভোজনরসিকদের মধ্যে চরম হতাশার সৃষ্টি করেছে।

বাংলাদেশ সরকার এ বছর ১,২০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছিল, যা ৫ অক্টোবরের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। তবে ৪ অক্টোবর রাত থেকে রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। গত ১৭ সেপ্টেম্বর রপ্তানি শুরু হলেও, দুর্গাপূজার কারণে পাঁচ দিন সব বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ ছিল। ফলে আমদানির জন্য ব্যবসায়ীরা হাতে পান মাত্র ১৩ দিন।

পশ্চিমবঙ্গের মাছ আমদানিকারকদের তথ্যানুযায়ী, ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বেনাপোল ও আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে মোট ১৪৪ টন ৪৮৯ কেজি ইলিশ এসেছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে (বেনাপোল দিয়ে) এসেছে ১০৫ টন ২১৪ কেজি এবং ত্রিপুরায় গেছে ৩৯ টন ২৭৫ কেজি।

কেন কমলো ইলিশের আমদানি?

  • স্বল্প সময়সীমা: ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ জানান, পর্যাপ্ত সময় না দেওয়ায় এবং এর মধ্যে দুর্গাপূজার ছুটি পড়ায় অনুমোদিত ১,২০০ টন ইলিশ আমদানি করা কোনোভাবেই সম্ভব হয়নি। তারা আরও বেশি সময় দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছিলেন।

  • উচ্চমূল্য: বাংলাদেশে ইলিশের উৎপাদন কম হওয়ায় সেখানেও দাম অনেক বেশি। ফলে রপ্তানিকারকরাও বেশি দামে মাছ রপ্তানি করতে আগ্রহী হননি। অন্যদিকে, ভারতে ইলিশ আমদানির খরচ বেড়ে যাওয়ায় খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ইলিশ ২,৪০০ থেকে ২,৫০০ রুপি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে, যা ক্রেতাদের নাগালের বাইরে।

  • অতীতের তুলনায় সর্বনিম্ন আমদানি: মাকসুদের মতে, এবারের মতো এত কম ইলিশ অতীতে কখনো আমদানি হয়নি। গত বছর বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সত্ত্বেও ৫৭৭ টন ইলিশ আমদানি করা সম্ভব হয়েছিল।
ক্রমহ্রাসমান ইলিশ আমদানি: এক নজরে পরিসংখ্যান

পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের কাছে পদ্মার ইলিশের চাহিদা অপরিসীম হলেও, গত পাঁচ বছর ধরে ভারতে ইলিশ আসা ক্রমেই কমছে।

বছরবাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত পরিমাণ (মেট্রিক টন)ভারতে আমদানি হওয়া পরিমাণ (মেট্রিক টন)
২০২১৪,৬০০১,২০০
২০২২২,৯০০১,৩০০
২০২৩৩,৯৫০

৫৮৭

২০২৫

১,২০০১৪৫ (প্রায়)

২০২৩ সালে ৩,৯৫০ মেট্রিক টন অনুমোদন দেওয়া হলেও মাত্র ৫৮৭ মেট্রিক টন আমদানি হয়েছিল। এ বছরও একই ধারা বজায় থাকল। ৩৭টি সংস্থাকে ১২.৫ ডলার মূল্যে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হলেও, সময়মতো রপ্তানি শেষ করতে না পারায় পশ্চিমবঙ্গের মানুষের পাতে ন্যায্য মূল্যে বাংলাদেশের ইলিশ তুলে দেওয়া সম্ভব হলো না।


কওমী টাইমস

সম্পাদক ও প্রকাশক : মোঃ মুস্তাইন বিল্লাহ
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত