
নতুন এক একাডেমিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে (৭ অক্টোবর ২০২৩) দুই বছরে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে কমপক্ষে ২১.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সামরিক সহায়তা প্রদান করেছে। প্রতিবেদনে প্রথম বছরে দেওয়া অনুদান ছিল প্রায় ১৭.৯ বিলিয়ন, দ্বিতীয় বছরে প্রায় ৩.৮ বিলিয়ন ডলার—এবং এতে চলমান বা ভবিষ্যতে সরবরাহযোগ্য কিছু বড় অস্ত্রচুক্তি গণনা করা হয় নি।
নতুন প্রতিবেদনের প্রেক্ষাপট ও পরিসংখ্যান ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াটসন স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের Costs of War প্রকল্প ও সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা জানিয়েছে, অক্টোবর ৭, ২০২৩-এ হামাসের ধারালো আক্রমণ ও এর পরবর্তী গাজার যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েলকে দেওয়া সামরিক সহায়তার পরিসংখ্যান কমপক্ষে $21.7 বিলিয়ন। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই পরিমাণে প্রথম বছরে (প্রধানত ২০২৩–২৪) দেওয়া ছিল $17.9 বিলিয়ন এবং দ্বিতীয় বছরে (২০২৪–২৫) দেওয়া হয়েছে $3.8 বিলিয়ন। রিপোর্টের পরিসংখ্যানগুলো মূলত ওপেন সোর্স ও সরকারি ঘোষণা-ভিত্তিক।
কি কী ধরণের সহায়তা দেওয়া হয়েছে
প্রতিবেদন বলছে, এগুলো ব্যাপকভাবে নিরাপত্তা অনুদান (security assistance), সরাসরি হস্তান্তরিত অস্ত্রোপকরণ ও তাত্ক্ষণিক কার্যকর শিপমেন্টের সমন্বয়ে গঠিত—যা আইডিএফ (Israel Defense Forces) ও ইসরাইলি পুলিশকে গাজার অভিযানের জন্য সরাসরি বা পরোক্ষভাবে সক্ষম করেছে। প্রতিবেদক ও বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেন যে, কেবল যুদ্ধবিমানই নয়; হাজারো বোমা, ক্ষেপণাস্ত্র, উন্নত লক্ষ্যনিটিং সিস্টেম এবং অন্যান্য সামরি-ভর্তি সরঞ্জামও যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে বা আসার জন্য চুক্তিবদ্ধ আছে।
রিপোর্টে অন্তর্ভুক্ত নয় এমন খরচ—ভবিষ্যৎ চুক্তি ও বন্দোবস্ত
Costs of War-এর বিশ্লেষণে জোর দেওয়া হয়েছে যে এখানে বহু বড় অস্ত্রকারবারের 'বিক্রয়-চুক্তি' (arms sales agreements) অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি—সেগুলোতে কিছু বিলিয়ন বা দশকগুলি মিলিয়ন ডলার মূল্যমানের সরঞ্জাম রয়েছে যেগুলো আগামী বছরগুলোতে সরবরাহ করা হবে এবং আলাদা হিসাব হবে। ফলে ইস্রায়েলকে সরবরাহিত সামগ্রিক সামরিক মূল্য আরও বাড়তে পারে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও নীতিগত আলোচনা
রিপোর্টটি প্রকাশের সঙ্গে-সঙ্গে আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক পরিমণ্ডলে নতুন বিতর্কও উসকে দিয়েছে—সহায়তা প্রদানের নীতিগত দিক, মানবিক বিবেচনা, সহায়তার স্বচ্ছতার অভাব, এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-রাজনৈতিক লক্ষ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। Costs of War এবং সঙ্গী বিশ্লেষকরা যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি বা পরোক্ষ ভূমিকা ও এর অর্থনৈতিক ও কৌশলগত প্রভাব বিশ্লেষণ করেছেন। একই সঙ্গে অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে—ওই দুই বছরে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য সামরিক কার্যক্রম ও অপারেশনেও অতিরিক্তভাবে প্রায় $9.65–$12.07 বিলিয়ন খরচ হয়েছে; অর্থাৎ সমগ্র অঞ্চলে আমেরিকার সামরিক ব্যয় আরো বেশি।
গুরুত্বপূর্ণ প্রেক্ষাপট (সংক্ষিপ্ত)
রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে যুদ্ধের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে—অর্থাৎ ৭ অক্টোবর ২০২৫-কে কেন্দ্র করে।
মূল পরিসংখ্যানগুলো সরকারি ঘোষণা, কংগ্রেস জমা, ও প্রতিষ্টানিক ডেটা মিলিয়ে সংগৃহীত। রিপোর্টকারীরা মনে করান যে মনিটরিং ও স্বচ্ছতা আরো বাড়ানো না গেলে ভবিষ্যতে খরচ-অবদানের সঠিক চিত্র পাওয়া কঠিন হবে।
সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ
এই পরিসংখ্যানগুলো কেবল সংখ্যা নয়—এগুলি কূটনীতি, মানবিক পরিস্থিতি ও ভবিষ্যত অঞ্চলের স্থিতিশীলতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। যে দেশে বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতি চলছে সেখানে তাত্ক্ষণিক সামরিক সহায়তা সংঘাতকে দ্রুত তীব্র করতে পারে—অন্যদিকে সমর্থনকারী নিরপেক্ষ দেশের নিরাপত্তা নীতি, মানবাধিকার চিন্তা ও কূটনৈতিক মাধ্যমগুলো নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। Costs of War-এর মত শিক্ষাবান্ধব প্রতিবেদনগুলো নীতিনির্ধারকদের জন্য এই বিতর্ক-আলোচনার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
বিষয় : নিরাপত্তা আন্তর্জাতিক ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্র
বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ০৭ অক্টোবর ২০২৫
নতুন এক একাডেমিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে (৭ অক্টোবর ২০২৩) দুই বছরে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে কমপক্ষে ২১.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সামরিক সহায়তা প্রদান করেছে। প্রতিবেদনে প্রথম বছরে দেওয়া অনুদান ছিল প্রায় ১৭.৯ বিলিয়ন, দ্বিতীয় বছরে প্রায় ৩.৮ বিলিয়ন ডলার—এবং এতে চলমান বা ভবিষ্যতে সরবরাহযোগ্য কিছু বড় অস্ত্রচুক্তি গণনা করা হয় নি।
নতুন প্রতিবেদনের প্রেক্ষাপট ও পরিসংখ্যান ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াটসন স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের Costs of War প্রকল্প ও সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা জানিয়েছে, অক্টোবর ৭, ২০২৩-এ হামাসের ধারালো আক্রমণ ও এর পরবর্তী গাজার যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ইসরায়েলকে দেওয়া সামরিক সহায়তার পরিসংখ্যান কমপক্ষে $21.7 বিলিয়ন। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই পরিমাণে প্রথম বছরে (প্রধানত ২০২৩–২৪) দেওয়া ছিল $17.9 বিলিয়ন এবং দ্বিতীয় বছরে (২০২৪–২৫) দেওয়া হয়েছে $3.8 বিলিয়ন। রিপোর্টের পরিসংখ্যানগুলো মূলত ওপেন সোর্স ও সরকারি ঘোষণা-ভিত্তিক।
কি কী ধরণের সহায়তা দেওয়া হয়েছে
প্রতিবেদন বলছে, এগুলো ব্যাপকভাবে নিরাপত্তা অনুদান (security assistance), সরাসরি হস্তান্তরিত অস্ত্রোপকরণ ও তাত্ক্ষণিক কার্যকর শিপমেন্টের সমন্বয়ে গঠিত—যা আইডিএফ (Israel Defense Forces) ও ইসরাইলি পুলিশকে গাজার অভিযানের জন্য সরাসরি বা পরোক্ষভাবে সক্ষম করেছে। প্রতিবেদক ও বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেন যে, কেবল যুদ্ধবিমানই নয়; হাজারো বোমা, ক্ষেপণাস্ত্র, উন্নত লক্ষ্যনিটিং সিস্টেম এবং অন্যান্য সামরি-ভর্তি সরঞ্জামও যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে বা আসার জন্য চুক্তিবদ্ধ আছে।
রিপোর্টে অন্তর্ভুক্ত নয় এমন খরচ—ভবিষ্যৎ চুক্তি ও বন্দোবস্ত
Costs of War-এর বিশ্লেষণে জোর দেওয়া হয়েছে যে এখানে বহু বড় অস্ত্রকারবারের 'বিক্রয়-চুক্তি' (arms sales agreements) অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি—সেগুলোতে কিছু বিলিয়ন বা দশকগুলি মিলিয়ন ডলার মূল্যমানের সরঞ্জাম রয়েছে যেগুলো আগামী বছরগুলোতে সরবরাহ করা হবে এবং আলাদা হিসাব হবে। ফলে ইস্রায়েলকে সরবরাহিত সামগ্রিক সামরিক মূল্য আরও বাড়তে পারে।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও নীতিগত আলোচনা
রিপোর্টটি প্রকাশের সঙ্গে-সঙ্গে আন্তর্জাতিক ও কূটনৈতিক পরিমণ্ডলে নতুন বিতর্কও উসকে দিয়েছে—সহায়তা প্রদানের নীতিগত দিক, মানবিক বিবেচনা, সহায়তার স্বচ্ছতার অভাব, এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-রাজনৈতিক লক্ষ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। Costs of War এবং সঙ্গী বিশ্লেষকরা যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি বা পরোক্ষ ভূমিকা ও এর অর্থনৈতিক ও কৌশলগত প্রভাব বিশ্লেষণ করেছেন। একই সঙ্গে অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে—ওই দুই বছরে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য সামরিক কার্যক্রম ও অপারেশনেও অতিরিক্তভাবে প্রায় $9.65–$12.07 বিলিয়ন খরচ হয়েছে; অর্থাৎ সমগ্র অঞ্চলে আমেরিকার সামরিক ব্যয় আরো বেশি।
গুরুত্বপূর্ণ প্রেক্ষাপট (সংক্ষিপ্ত)
রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে যুদ্ধের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে—অর্থাৎ ৭ অক্টোবর ২০২৫-কে কেন্দ্র করে।
মূল পরিসংখ্যানগুলো সরকারি ঘোষণা, কংগ্রেস জমা, ও প্রতিষ্টানিক ডেটা মিলিয়ে সংগৃহীত। রিপোর্টকারীরা মনে করান যে মনিটরিং ও স্বচ্ছতা আরো বাড়ানো না গেলে ভবিষ্যতে খরচ-অবদানের সঠিক চিত্র পাওয়া কঠিন হবে।
সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ
এই পরিসংখ্যানগুলো কেবল সংখ্যা নয়—এগুলি কূটনীতি, মানবিক পরিস্থিতি ও ভবিষ্যত অঞ্চলের স্থিতিশীলতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। যে দেশে বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতি চলছে সেখানে তাত্ক্ষণিক সামরিক সহায়তা সংঘাতকে দ্রুত তীব্র করতে পারে—অন্যদিকে সমর্থনকারী নিরপেক্ষ দেশের নিরাপত্তা নীতি, মানবাধিকার চিন্তা ও কূটনৈতিক মাধ্যমগুলো নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। Costs of War-এর মত শিক্ষাবান্ধব প্রতিবেদনগুলো নীতিনির্ধারকদের জন্য এই বিতর্ক-আলোচনার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
আপনার মতামত লিখুন