গাজায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলমান যুদ্ধ বন্ধ ও জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ট্রাম্পের দেওয়া ২০ দফা পরিকল্পনার প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে রাজি হয়েছে ইসরাইল ও হামাস। বুধবার এক ঘোষণায় এ তথ্য জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আল জাজিরা জানায়, ট্রাম্পের ব্যাপক কূটনৈতিক চাপের মুখে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছেন। বিশ্লেষকদের মতে, ইসরাইল নিজে থেকে যুদ্ধ থামাবে না—এই ধারণা অনেক পুরোনো হলেও, যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক চাপে এবার পরিবর্তন এসেছে।
ট্রাম্পের একাধিক আলোচনার পর নেতানিয়াহুর জন্য এখন বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে—চুক্তির প্রথম ধাপ সফলভাবে বাস্তবায়ন করা এবং ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করা।
ইসরাইলি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, একবার বন্দিদের মুক্তি সম্পন্ন হলে নেতানিয়াহুর জন্য যুদ্ধ পুনরায় শুরু করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, “গাজা এখন অনেক নিরাপদ অঞ্চলে পরিণত হবে।”
অন্যদিকে ইসরাইলের ভেতরেও যুদ্ধবিরতির দাবিতে জনমত ক্রমেই জোরালো হয়ে উঠেছে। হাজার হাজার ইসরাইলি নাগরিক গাজায় হামলার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন এবং প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর পদত্যাগ দাবি করছেন।
সম্প্রতি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে নেতানিয়াহুর ভাষণ শুরুর আগেই বহু দেশের প্রতিনিধিরা ওয়াকআউট করেন, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার প্রতি অবিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আগামী ২০২৬ সালের ২৭ অক্টোবর ইসরাইলে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, ক্ষমতাসীন নেতানিয়াহু নেতৃত্বাধীন ডানপন্থী জোট বড় ধরনের জনপ্রিয়তা হারিয়েছে। যুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রিপরিষদের সদস্য বেনি গ্যান্টজকে অনেকে পরবর্তী সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় শুরু হওয়া এই যুদ্ধবিরতি শুধু গাজার মানবিক বিপর্যয়ের অবসানই ঘটাবে না, বরং ইসরাইলের রাজনীতিতেও বড় পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন