
দুই বছরের লাগাতার ইসরায়েলি হামলায় গাজার শিক্ষা ব্যবস্থা প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ৯৭ শতাংশ স্কুল ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত, নিহত হাজারো শিক্ষার্থী ও শিক্ষক—এই ভয়াবহ বাস্তবতায় জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আবারও পড়াশোনা শুরু করছে গাজার শিশুরা।
ইসরায়েলি আগ্রাসনের দুই বছর পর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় শিক্ষা কার্যক্রম ধীরে ধীরে পুনরায় চালু করছে জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা UNRWA। সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রায় ৩ লাখ ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী আবারও পড়াশোনায় ফিরবে, যার মধ্যে ১০ হাজার শিশু আশ্রয়কেন্দ্রে সরাসরি ক্লাস করবে এবং বাকিরা দূরশিক্ষা পদ্ধতিতে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষকের সহায়তায় পড়াশোনা করবে।
গাজায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর, ইসরায়েলি যুদ্ধের সূচনার পর। তখন অসংখ্য সরকারি ও UNRWA স্কুল রূপ নেয় আশ্রয়কেন্দ্রে, আর শত শত ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।
ফিলিস্তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইসরায়েল ধ্বংস করেছে ১৭২টি সরকারি স্কুল, আংশিকভাবে বোমায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ১১৮টি। পাশাপাশি ১০০টিরও বেশি UNRWA স্কুল ধ্বংস বা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই দুই বছরের যুদ্ধে ১৭,৭১১ শিক্ষার্থী নিহত ও ২৫,৮৯৭ জন আহত হয়েছে। নিহত হয়েছেন ৭৬৩ জন শিক্ষক-কর্মচারী, আহত হয়েছেন ৩,১৮৯ জন। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ভাষায়, এটি “শিক্ষা-নিধনের এক প্রজন্ম।”
“শিক্ষা শুধু পড়াশোনা নয়, এটি ভবিষ্যতের আশা,” বললেন গাজার আল-বুরেইজ শরণার্থী শিবিরের এক শিক্ষিকা। “আমার স্কুল এখন ধ্বংসস্তূপ। অনেক শিক্ষার্থী মারা গেছে। যারা বেঁচে আছে, তারা ক্ষুধা, ভয় ও অনিশ্চয়তার মধ্যে থেকেও পড়তে চায়।”
রাফাহর এক শিক্ষার্থী স্মৃতিচারণ করে বলেছে, “৭ অক্টোবর ছিল আমার শেষ স্কুলের দিন। সেদিন সাইরেন বাজছিল, বন্ধুরা কাঁদছিল। তারপর সব শেষ। এখন আমি টেন্টে থাকি, স্বপ্ন দেখি একদিন সাংবাদিক হব—বিশ্বকে বলব, গাজার শিশুরা কেমনভাবে বাঁচার জন্য লড়ছে।”
কায়রোতে আশ্রয় নেওয়া ৭ বছর বয়সী ইসমাইল বলেছে, “আমি অক্ষর শেখা ভালোবাসতাম। এখন প্রতিদিন দেখি মিশরের শিশুরা স্কুলে যায়, আর আমি শুধু তাকিয়ে থাকি। তবুও শেখার চেষ্টা করি, কারণ শিক্ষা মানে আশা।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, শিক্ষার এই বিপর্যয় গাজার ভবিষ্যৎকে গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলেছে। The Guardian–এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, “যুদ্ধ শিশুদের স্বপ্নকে মাটিচাপা দিয়েছে, কিন্তু তারা এখনও বই ও শিক্ষার অধিকার ফিরে পেতে লড়ছে।”
বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ১৯ অক্টোবর ২০২৫
দুই বছরের লাগাতার ইসরায়েলি হামলায় গাজার শিক্ষা ব্যবস্থা প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ৯৭ শতাংশ স্কুল ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত, নিহত হাজারো শিক্ষার্থী ও শিক্ষক—এই ভয়াবহ বাস্তবতায় জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে আবারও পড়াশোনা শুরু করছে গাজার শিশুরা।
ইসরায়েলি আগ্রাসনের দুই বছর পর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় শিক্ষা কার্যক্রম ধীরে ধীরে পুনরায় চালু করছে জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা UNRWA। সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রায় ৩ লাখ ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী আবারও পড়াশোনায় ফিরবে, যার মধ্যে ১০ হাজার শিশু আশ্রয়কেন্দ্রে সরাসরি ক্লাস করবে এবং বাকিরা দূরশিক্ষা পদ্ধতিতে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষকের সহায়তায় পড়াশোনা করবে।
গাজায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর, ইসরায়েলি যুদ্ধের সূচনার পর। তখন অসংখ্য সরকারি ও UNRWA স্কুল রূপ নেয় আশ্রয়কেন্দ্রে, আর শত শত ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।
ফিলিস্তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইসরায়েল ধ্বংস করেছে ১৭২টি সরকারি স্কুল, আংশিকভাবে বোমায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ১১৮টি। পাশাপাশি ১০০টিরও বেশি UNRWA স্কুল ধ্বংস বা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই দুই বছরের যুদ্ধে ১৭,৭১১ শিক্ষার্থী নিহত ও ২৫,৮৯৭ জন আহত হয়েছে। নিহত হয়েছেন ৭৬৩ জন শিক্ষক-কর্মচারী, আহত হয়েছেন ৩,১৮৯ জন। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ভাষায়, এটি “শিক্ষা-নিধনের এক প্রজন্ম।”
“শিক্ষা শুধু পড়াশোনা নয়, এটি ভবিষ্যতের আশা,” বললেন গাজার আল-বুরেইজ শরণার্থী শিবিরের এক শিক্ষিকা। “আমার স্কুল এখন ধ্বংসস্তূপ। অনেক শিক্ষার্থী মারা গেছে। যারা বেঁচে আছে, তারা ক্ষুধা, ভয় ও অনিশ্চয়তার মধ্যে থেকেও পড়তে চায়।”
রাফাহর এক শিক্ষার্থী স্মৃতিচারণ করে বলেছে, “৭ অক্টোবর ছিল আমার শেষ স্কুলের দিন। সেদিন সাইরেন বাজছিল, বন্ধুরা কাঁদছিল। তারপর সব শেষ। এখন আমি টেন্টে থাকি, স্বপ্ন দেখি একদিন সাংবাদিক হব—বিশ্বকে বলব, গাজার শিশুরা কেমনভাবে বাঁচার জন্য লড়ছে।”
কায়রোতে আশ্রয় নেওয়া ৭ বছর বয়সী ইসমাইল বলেছে, “আমি অক্ষর শেখা ভালোবাসতাম। এখন প্রতিদিন দেখি মিশরের শিশুরা স্কুলে যায়, আর আমি শুধু তাকিয়ে থাকি। তবুও শেখার চেষ্টা করি, কারণ শিক্ষা মানে আশা।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, শিক্ষার এই বিপর্যয় গাজার ভবিষ্যৎকে গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলেছে। The Guardian–এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, “যুদ্ধ শিশুদের স্বপ্নকে মাটিচাপা দিয়েছে, কিন্তু তারা এখনও বই ও শিক্ষার অধিকার ফিরে পেতে লড়ছে।”
আপনার মতামত লিখুন