ঢাকা   রোববার, ০২ নভেম্বর ২০২৫
ঢাকা   রোববার, ০২ নভেম্বর ২০২৫
কওমী টাইমস

ভারতে যখন সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, মুসলিম নিপীড়ন ও প্রশাসনিক ব্যর্থতা বাড়ছে, তখন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা নিয়ে মন্তব্য করলেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা

নিজ দেশে অস্থিরতা, তবু অন্য দেশে উপদেশ — দুর্বল শাসনের তত্ত্ব দিলেন অজিত দোভাল


কওমী টাইমস ডেস্ক
কওমী টাইমস ডেস্ক
প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২৫ | প্রিন্ট সংস্করণ

নিজ দেশে অস্থিরতা, তবু অন্য দেশে উপদেশ — দুর্বল শাসনের তত্ত্ব দিলেন অজিত দোভাল

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (NSA) অজিত দোভাল বলেছেন, দুর্বল শাসনব্যবস্থা প্রায়ই একটি দেশের সরকার পতনের কারণ হয়। তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলোতে প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে অনানুষ্ঠানিক উপায়ে সরকার পরিবর্তন ঘটেছে। কিন্তু বিশ্লেষকরা প্রশ্ন তুলছেন — নিজের দেশে যেখানে প্রতিদিন ধর্মীয় সহিংসতা, বুলডোজার রাজনীতি ও মুসলিম নাগরিকদের ওপর নিপীড়ন চলছে, সেখানে অন্য রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা নিয়ে এমন মন্তব্য কতটা নৈতিক বা বাস্তবসম্মত?

শুক্রবার ভারতের রাষ্ট্রীয় ঐক্য দিবসে দেওয়া বক্তব্যে অজিত দোভাল বলেন, “দুর্বল প্রশাসনিক কাঠামো অনেক সময় রাষ্ট্রের পতনের কারণ হয়।” তিনি যোগ করেন, “একটি জাতির শক্তি নিহিত থাকে তার শাসনব্যবস্থায়; সরকার যখন প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মাধ্যমে কাজ করে, তখন সেই কাঠামোই জাতি গঠনের ভিত্তি হয়ে ওঠে।”

তিনি আরও বলেন, “আজকের প্রশাসনের বড় চ্যালেঞ্জ হলো জনগণের সন্তুষ্টি অর্জন করা। জনগণ এখন অনেক বেশি সচেতন, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং রাষ্ট্রের কাছ থেকে বাস্তব উন্নয়ন প্রত্যাশা করে।”

তবে সমালোচকরা বলছেন, দোভালের বক্তব্যে ভারতের বর্তমান বাস্তবতা উপেক্ষিত হয়েছে। দেশে প্রতিদিনই সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, সংখ্যালঘু নির্যাতন ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি নতুন মাত্রা নিচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশে মুসলমানদের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নিন্দার মুখে পড়েছে।

একই সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষের বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’ কার্যক্রমও নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, “বাংলাদেশি নয় এমন মুসলিম ও বাঙালি পরিচয়ের মানুষদের সীমান্তে জোর করে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।”

বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের প্রশাসনিক কাঠামো আজ এক গভীর রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মেরুকরণের মধ্যে রয়েছে, যেখানে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা পরামর্শদাতার এই মন্তব্য একধরনের বৈপরীত্য ও আত্মবিরোধিতা প্রকাশ করে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশাসন দুর্নীতি দমন ও উন্নয়নের যে দাবি করছে, বাস্তবে তা সংখ্যালঘুদের জন্য ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, ভারত বর্তমানে এমন এক “রাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা”য় প্রবেশ করেছে, যেখানে নাগরিক অধিকার, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা—সবই চাপে আছে।

বিষয় : ভারত

আপনার মতামত লিখুন

কওমী টাইমস

রোববার, ০২ নভেম্বর ২০২৫


নিজ দেশে অস্থিরতা, তবু অন্য দেশে উপদেশ — দুর্বল শাসনের তত্ত্ব দিলেন অজিত দোভাল

প্রকাশের তারিখ : ০১ নভেম্বর ২০২৫

featured Image

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (NSA) অজিত দোভাল বলেছেন, দুর্বল শাসনব্যবস্থা প্রায়ই একটি দেশের সরকার পতনের কারণ হয়। তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলোতে প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে অনানুষ্ঠানিক উপায়ে সরকার পরিবর্তন ঘটেছে। কিন্তু বিশ্লেষকরা প্রশ্ন তুলছেন — নিজের দেশে যেখানে প্রতিদিন ধর্মীয় সহিংসতা, বুলডোজার রাজনীতি ও মুসলিম নাগরিকদের ওপর নিপীড়ন চলছে, সেখানে অন্য রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা নিয়ে এমন মন্তব্য কতটা নৈতিক বা বাস্তবসম্মত?

শুক্রবার ভারতের রাষ্ট্রীয় ঐক্য দিবসে দেওয়া বক্তব্যে অজিত দোভাল বলেন, “দুর্বল প্রশাসনিক কাঠামো অনেক সময় রাষ্ট্রের পতনের কারণ হয়।” তিনি যোগ করেন, “একটি জাতির শক্তি নিহিত থাকে তার শাসনব্যবস্থায়; সরকার যখন প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মাধ্যমে কাজ করে, তখন সেই কাঠামোই জাতি গঠনের ভিত্তি হয়ে ওঠে।”

তিনি আরও বলেন, “আজকের প্রশাসনের বড় চ্যালেঞ্জ হলো জনগণের সন্তুষ্টি অর্জন করা। জনগণ এখন অনেক বেশি সচেতন, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং রাষ্ট্রের কাছ থেকে বাস্তব উন্নয়ন প্রত্যাশা করে।”

তবে সমালোচকরা বলছেন, দোভালের বক্তব্যে ভারতের বর্তমান বাস্তবতা উপেক্ষিত হয়েছে। দেশে প্রতিদিনই সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ, সংখ্যালঘু নির্যাতন ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি নতুন মাত্রা নিচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশে মুসলমানদের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নিন্দার মুখে পড়েছে।

একই সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষের বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’ কার্যক্রমও নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, “বাংলাদেশি নয় এমন মুসলিম ও বাঙালি পরিচয়ের মানুষদের সীমান্তে জোর করে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।”

বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের প্রশাসনিক কাঠামো আজ এক গভীর রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মেরুকরণের মধ্যে রয়েছে, যেখানে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা পরামর্শদাতার এই মন্তব্য একধরনের বৈপরীত্য ও আত্মবিরোধিতা প্রকাশ করে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশাসন দুর্নীতি দমন ও উন্নয়নের যে দাবি করছে, বাস্তবে তা সংখ্যালঘুদের জন্য ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, ভারত বর্তমানে এমন এক “রাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা”য় প্রবেশ করেছে, যেখানে নাগরিক অধিকার, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা—সবই চাপে আছে।


কওমী টাইমস

সম্পাদক ও প্রকাশক : মুস্তাইন বিল্লাহ
কপিরাইট © ২০২৫ কওমী টাইমস । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত