গাজা উপত্যকায় ১৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত দিয়েছে ইসরাইল। এই বিনিময় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির আরেকটি ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর একদিন আগে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা এক ইসরাইলি বন্দির লাশ ফেরত দিয়েছিল।
শনিবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনুস শহরের নাসের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ইসরাইল ফেরত দেওয়া ১৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ সেখানে আনা হয়েছে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, প্রতিটি ইসরাইলি বন্দির লাশের বিনিময়ে ইসরাইল ১৫ ফিলিস্তিনির লাশ হস্তান্তর করছে।
ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে যে ইসরাইলি বন্দির লাশ ফেরত দেওয়া হয়, তিনি লিওর রুদায়েফ—যিনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার সময় দক্ষিণ ইসরাইলে নিহত হন। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম জানায়, রুদায়েফ আর্জেন্টিনায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং ছোটবেলায় দক্ষিণ ইসরাইলের কৃষি সম্প্রদায় কিব্বুত্জ নির ইৎজহাক-এ চলে আসেন। তিনি দীর্ঘদিন স্বেচ্ছাসেবী অ্যাম্বুলেন্স চালক হিসেবে কাজ করেছেন এবং স্থানীয় জরুরি প্রতিক্রিয়া দলের সদস্য ছিলেন। ৭ অক্টোবরের হামলায় নিহত হওয়ার পর তাঁর মরদেহ গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়।
গাজায় কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর থেকে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা এখন পর্যন্ত ২৩ জন ইসরাইলি বন্দির লাশ ফেরত দিয়েছে, যার মধ্যে রুদায়েফের লাশও রয়েছে। ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের মতে, এখনও ৫ জন ইসরাইলির মরদেহ গাজায় রয়ে গেছে।
অন্যদিকে, শনিবারের সর্বশেষ ফেরত দেওয়ার পর ইসরাইল এখন পর্যন্ত মোট ৩০০ ফিলিস্তিনির মরদেহ হস্তান্তর করেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শনাক্তকরণ সরঞ্জামের অভাবে অনেক লাশের পরিচয় নিশ্চিত করা যাচ্ছে না; এখন পর্যন্ত ৮৯টি মরদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
মার্কিন মধ্যস্থতায় সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির আরেকটি শর্ত অনুযায়ী, ইসরাইলকে গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবেশ সহজ করতে হবে। তবে জাতিসংঘের উপ-প্রবক্তা ফারহান হক জানিয়েছেন, গাজায় সহায়তার পরিমাণ এখনো পর্যাপ্ত নয়। তাঁর তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর প্রস্তুতি থাকলেও, এর মধ্যে মাত্র ৩৭ হাজার টন—মূলত খাদ্যসামগ্রী—গাজায় প্রবেশ করতে পেরেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলায় ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ১,২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে বন্দি করা হয়। পাল্টা অভিযানে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে এখন পর্যন্ত ৬৮,৮০০-রও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
সূত্র: এনবিসি নিউজ
বিষয় : মধ্যপ্রাচ্য ইসরাইল গাজা ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতি

রোববার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ০৮ নভেম্বর ২০২৫
গাজা উপত্যকায় ১৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত দিয়েছে ইসরাইল। এই বিনিময় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির আরেকটি ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর একদিন আগে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা এক ইসরাইলি বন্দির লাশ ফেরত দিয়েছিল।
শনিবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনুস শহরের নাসের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ইসরাইল ফেরত দেওয়া ১৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ সেখানে আনা হয়েছে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, প্রতিটি ইসরাইলি বন্দির লাশের বিনিময়ে ইসরাইল ১৫ ফিলিস্তিনির লাশ হস্তান্তর করছে।
ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে যে ইসরাইলি বন্দির লাশ ফেরত দেওয়া হয়, তিনি লিওর রুদায়েফ—যিনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার সময় দক্ষিণ ইসরাইলে নিহত হন। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম জানায়, রুদায়েফ আর্জেন্টিনায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং ছোটবেলায় দক্ষিণ ইসরাইলের কৃষি সম্প্রদায় কিব্বুত্জ নির ইৎজহাক-এ চলে আসেন। তিনি দীর্ঘদিন স্বেচ্ছাসেবী অ্যাম্বুলেন্স চালক হিসেবে কাজ করেছেন এবং স্থানীয় জরুরি প্রতিক্রিয়া দলের সদস্য ছিলেন। ৭ অক্টোবরের হামলায় নিহত হওয়ার পর তাঁর মরদেহ গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়।
গাজায় কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর থেকে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা এখন পর্যন্ত ২৩ জন ইসরাইলি বন্দির লাশ ফেরত দিয়েছে, যার মধ্যে রুদায়েফের লাশও রয়েছে। ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের মতে, এখনও ৫ জন ইসরাইলির মরদেহ গাজায় রয়ে গেছে।
অন্যদিকে, শনিবারের সর্বশেষ ফেরত দেওয়ার পর ইসরাইল এখন পর্যন্ত মোট ৩০০ ফিলিস্তিনির মরদেহ হস্তান্তর করেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শনাক্তকরণ সরঞ্জামের অভাবে অনেক লাশের পরিচয় নিশ্চিত করা যাচ্ছে না; এখন পর্যন্ত ৮৯টি মরদেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
মার্কিন মধ্যস্থতায় সম্পাদিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির আরেকটি শর্ত অনুযায়ী, ইসরাইলকে গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবেশ সহজ করতে হবে। তবে জাতিসংঘের উপ-প্রবক্তা ফারহান হক জানিয়েছেন, গাজায় সহায়তার পরিমাণ এখনো পর্যাপ্ত নয়। তাঁর তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর প্রস্তুতি থাকলেও, এর মধ্যে মাত্র ৩৭ হাজার টন—মূলত খাদ্যসামগ্রী—গাজায় প্রবেশ করতে পেরেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলায় ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ১,২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে বন্দি করা হয়। পাল্টা অভিযানে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে এখন পর্যন্ত ৬৮,৮০০-রও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
সূত্র: এনবিসি নিউজ

আপনার মতামত লিখুন