ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্রিটেন, জার্মানি, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের যৌথ বিবৃতিকে স্বাগত জানিয়েছে, যেখানে ইসরায়েলের গাজা উপত্যকা সম্পূর্ণ দখলের পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ফিলিস্তিন একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘকে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে, যাতে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বন্ধ হয় এবং গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় রোধ করা যায়।
শুক্রবার পাঁচ পশ্চিমা দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার অনুমোদিত গাজা দখলের ধাপে ধাপে পরিকল্পনার বিরোধিতা করে সতর্ক করেন, এ ধরনের পদক্ষেপ মানবিক পরিস্থিতিকে আরও অবনতির দিকে ঠেলে দেবে, ইসরায়েলি বন্দিদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলবে এবং ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের গণনির্বাসনের ঝুঁকি বাড়াবে। তারা তাৎক্ষণিক ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান, বিশেষ করে গাজায় দেখা দেওয়া দুর্ভিক্ষের হুমকির প্রেক্ষাপটে, যাতে দ্রুত ও বাধাহীন মানবিক সহায়তা পৌঁছানো যায়।
শনিবার এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, তারা পশ্চিম তীরের সংযুক্তিকরণের প্রচেষ্টাসহ ইসরায়েলের গাজা দখল পরিকল্পনার বিরুদ্ধে পাঁচ দেশের অবস্থানকে স্বাগত জানাচ্ছে। ফিলিস্তিন দখলদার বাহিনীর “গণহত্যা, অনাহার ও জোরপূর্বক উচ্ছেদ” বন্ধের আহ্বান জানায় এবং গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় অবসানে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অনুরোধ করে।
বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের রাজনৈতিক ও আইনগত ক্ষমতা গাজায় পুনঃপ্রতিষ্ঠার গুরুত্বের ওপর জোর দেওয়া হয়, যা “ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ” বলে উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে ইসরায়েলকে গাজা দখল পরিকল্পনা বন্ধে বাধ্য করার আহ্বান জানানো হয়।
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রস্তাবিত ধাপে ধাপে গাজা দখল পরিকল্পনার প্রথম ধাপে প্রায় এক মিলিয়ন মানুষকে দক্ষিণে সরিয়ে দিয়ে গাজা সিটি দখল, তারপর কেন্দ্রীয় অঞ্চলের শরণার্থী শিবিরগুলো দখলের কথা বলা হয়েছে—যেগুলোর বড় অংশ ইতিমধ্যে ধ্বংস হয়ে গেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে গাজার ৮৭ শতাংশ এলাকা হয় ইসরায়েলের দখলে, নয়তো খালি করার নির্দেশের আওতায়। সংস্থাটি সতর্ক করেছে, যে কোনো নতুন সামরিক সম্প্রসারণ হবে “বিপর্যয়কর”। গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান গাজায় এখন পর্যন্ত ৬১ হাজার ৩৩০ জনকে হত্যা করেছে, আহত করেছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৯ জনকে, এবং হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছে—যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।