ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আদালত অবমাননার মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ থেকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড পেয়েছেন। পূর্ণাঙ্গ রায়ে উঠে এসেছে, তিনি মামলার প্রসিকিউটর, তদন্ত কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ভয়াবহ পরিণতির হুমকি দেন এবং প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর সহিংসতার নির্দেশ দেন।
গত ২ জুলাই বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা ও গাইবান্ধার আওয়ামী লীগ নেতা শাকিল আকন্দ বুলবুলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রায় ঘোষণা করেন। হাসিনাকে ছয় মাস এবং বুলবুলকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি গত রোববার সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো হয়।
প্রধান প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয় একটি ফাঁস হওয়া অডিও ক্লিপ, যা ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। সিআইডির ফরেনসিক ল্যাব নিশ্চিত করে যে এটি এআই-সৃষ্ট নয়, বরং প্রকৃত কথোপকথন। অডিওতে শেখ হাসিনাকে বুলবুলকে প্রতিদ্বন্দ্বীদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার উসকানি দিতে এবং ২২৭ জনকে হত্যার পরিকল্পনার কথা বলতে শোনা যায়। তিনি বলেন, “আমার তো সারা বাংলাদেশে ২২৭টি মার্ডার কেস… অন্তত ২২৭ জনকে মারার লাইসেন্স পেয়ে গেছি।”
রায়ে উল্লেখ আছে, হাসিনা মামলার প্রসিকিউটর, তদন্ত কর্মকর্তা, আদালতের কর্মচারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ভয়াবহ পরিণতির হুমকি দিয়েছেন। তদন্তে উঠে আসে, ‘এ টিম’ নামে একটি অনলাইন গ্রুপে আওয়ামী লীগের (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) গোপন বৈঠকে এই উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া হয়।
শেখ হাসিনা গত বছরের ৫ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানের পর ভারতে পালিয়ে যান এবং এখনও পলাতক রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে—একটিতে গুম–খুনের অভিযোগ, অন্যটিতে হেফাজতে ইসলামের শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ।