স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন RSS-কে “দেশের কল্যাণে নিবেদিত বিশ্বের বৃহত্তম এনজিও” বলে উল্লেখ করেন। এই মন্তব্যকে ঘিরে বিরোধী দল, অধিকারকর্মী ও ইতিহাসবিদদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
শুক্রবার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, “একশ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (RSS) সেবাকে জীবনমন্ত্র করে দেশের কল্যাণে কাজ করেছে। শৃঙ্খলা, আত্মনিবেদন ও জাতীয়তাবোধের মাধ্যমে সংগঠনটি জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।”
মোদির এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে কংগ্রেস, সিপিআই(এম) ও AIMIM সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ একে “সংবিধান ও ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার বিরোধী” আখ্যা দিয়ে অভিযোগ করেন, “২০২৪ সালের পর রাজনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় মোদি এখন RSS প্রধান মোহন ভাগবতের সমর্থনের উপর নির্ভরশীল।”
সিপিআই(এম)-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, “স্বাধীনতা দিবসের মতো ঐতিহাসিক উপলক্ষকে RSS-এর প্রশংসায় ব্যবহার করা শহীদদের প্রতি অবমাননা।” AIMIM প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েসি বলেন, “RSS স্বাধীনতা আন্দোলনে কোনো সরাসরি ভূমিকা নেয়নি। বরং গান্ধীকে ঘৃণা করেছে ব্রিটিশদের চেয়েও বেশি।”
ইতিহাসবিদ ও সমাজকর্মীদের অভিযোগ, RSS অসহযোগ, সিভিল ডিসওবিডিয়েন্স বা কুইট ইন্ডিয়া আন্দোলনে অংশ নেয়নি। তারা দীর্ঘ সময় জাতীয় পতাকা উত্তোলনও এড়িয়ে গেছে এবং সংবিধান ও গণতান্ত্রিক কাঠামোর বিরোধিতা করেছে। সংগঠনটি একাধিকবার নিষিদ্ধও হয়েছিল।
মোদির বক্তব্যে রাজনৈতিক মহলে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সমালোচকরা একে স্বাধীনতার চেতনা ও শহীদদের আত্মত্যাগের অবমূল্যায়ন বলে অভিহিত করেছেন।
মন্তব্য করুন