জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত দল (IIMM) মিয়ানমারে আটককেন্দ্রে পদ্ধতিগত নির্যাতনের স্পষ্ট প্রমাণ প্রকাশ করেছে। শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতার ইঙ্গিত পাওয়া গেলেও চলমান তদন্তে নাম প্রকাশ করা হয়নি।
২০১৮ সালে গঠিত জাতিসংঘের ইন্ডিপেনডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম ফর মিয়ানমার (IIMM) তাদের ১৬ পৃষ্ঠার সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানায়, আটক ব্যক্তিদের উপর মারধর, বৈদ্যুতিক শক, শ্বাসরোধ, এমনকি প্লায়ার্স দিয়ে নখ উপড়ে ফেলার মতো নৃশংস নির্যাতন চালানো হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে নির্যাতনের ফলে মৃত্যু হয়েছে। শিশুদেরও অবৈধভাবে আটক করে নির্যাতন করা হয়েছে, যাদের অনেককে নিখোঁজ বাবা-মায়ের বদলি হিসেবে বন্দি করা হয়।
তদন্তে পাওয়া তথ্যের মধ্যে রয়েছে ১,৩০০-এর বেশি উৎস থেকে সংগৃহীত প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য, ফরেনসিক প্রমাণ, নথি ও ছবি। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী ও বিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী উভয়ই সংঘাতে সংক্ষিপ্ত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে।
মিয়ানমারের সামরিক-সমর্থিত সরকার তদন্তে সহযোগিতা না করে বরং ২০টিরও বেশি তথ্য ও প্রবেশাধিকারের অনুরোধ উপেক্ষা করেছে। সেনা কর্তৃপক্ষ শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার অজুহাত দেখালেও বরাবরের মতো নৃশংসতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশজুড়ে গৃহযুদ্ধ চলছে, যেখানে দশ হাজারেরও বেশি মানুষ আটক হয়েছেন। IIMM ২০১১ সাল থেকে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিশেষত ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর দমন অভিযান, এবং অভ্যুত্থানের পর সব জাতিগোষ্ঠীর ওপর হওয়া অপরাধ তদন্ত করছে। বর্তমানে বাজেট সংকট তাদের কার্যক্রমকে হুমকির মুখে ফেলেছে, যা আন্তর্জাতিক ও জাতীয় বিচার প্রচেষ্টায় সহায়তা ব্যাহত করতে পারে।